পাকিস্তান ক্রিকেট দল। ছবি: পিটিআই।
আমিরশাহি ম্যাচে না নামার হুমকি থেকে সরে এসেছে পাকিস্তান। তবে ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফ্টকে নিয়ে নিজেদের অবস্থানে অনড় তারা। প্রথমে এশিয়া কাপ থেকেই পাইক্রফ্টকে সরিয়ে দেওয়ার আবেদন করা হয়েছিল। তা প্রত্যাখ্যাত হতেই নতুন দাবি নিয়ে হাজির তারা। আবার চিঠি পাঠিয়েছে আইসিসি-কে।
মঙ্গলবার গভীর রাতে পাকিস্তান বোর্ডের তরফে চিঠি পাঠানো হয় আইসিসি-কে। তারা জানিয়েছে, পাকিস্তানের কোনও খেলায় আর যেন পাইক্রফ্টকে ম্যাচ রেফারি না রাখা হয়। তারা রিচি রিচার্ডসনকে চেয়েছে। আইসিসি এখনও চিঠির কোনও উত্তর দেয়নি। পাকিস্তান-আমিরশাহি ম্যাচে পাইক্রফ্টেরই ম্যাচ রেফারি হিসাবে থাকার কথা।
পাক বোর্ডের এক সূত্র ‘হিন্দুস্তান টাইমস’ ওয়েবসাইটে বলেছেন, “আমরা আইসিসি-কে আবার চিঠি পাঠিয়েছি। আইসিসি-র উত্তর নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট নই। অ্যান্ডি পাইক্রফ্টকে নিয়ে যা যা আপত্তি তোলা হয়েছিল তার সব দিক খতিয়ে দেখা হয়নি। আমাদের দাবি একটাই। পাইক্রফ্টকে পাকিস্তানের খেলায় ম্যাচ রেফারি রাখা যাবে না।”
জ়িম্বাবোয়ের পাইক্রফ্ট ভারতীয় বোর্ডের নির্দেশে কাজ করছেন বলেও দাবি করেছে পাকিস্তান। সে দেশের ‘ডন’ ওয়েবসাইটের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, এশিয়া কাপের ডিরেক্টর আন্দ্রে রাসেল না কি পাকিস্তান দলের টিম ডিরেক্টর নাভিদ আক্রম চিমাকে বলেছেন, পাইক্রফ্ট ভারতের কথা অনুযায়ী কাজ করছেন। যদিও পাক বোর্ড এখনও এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
উল্লেখ্য, আইসিসি-কে লেখা পাক বোর্ডের প্রথম চিঠির সুর ছিল পাইক্রফ্টের বিরুদ্ধেই। পিসিবি চিঠিতে লিখেছিল, ‘‘আইসিসি নিযুক্ত নিরপেক্ষ ম্যাচ রেফারি যে আচরণ করেছেন, তাতে ক্রিকেটের স্পিরিট এবং এমসিসির আইন লঙ্ঘিত হয়েছে। ম্যাচ রেফারি তাঁর দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন। দুই অধিনায়ক এবং দু’দলের মধ্যে পারস্পরিক সম্মান বজায় রাখার বিষয়টি তিনি নিশ্চিত করতে পারেননি। ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করা এবং অধিনায়ক, খেলোয়াড়দের তা বজায় রাখতে উৎসাহিত করতে পারেননি। দুই দলের অধিনায়ককে ম্যাচ রেফারি যে নির্দেশ দিয়েছিলেন, তাতে সম্পূর্ণ বিপরীত পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। এর ফলে ম্যাচ অফিসিয়ালদের জন্য নির্দিষ্ট আইসিসির আদর্শ আচরণবিধির ২ নম্বর ধারা লঙ্ঘিত হয়েছে। বিশেষ করে ম্যাচ রেফারির এমন আচরণ অপরাধের সমান। তাঁর আচরণ ক্রিকেটের স্পিরিট এবং এমসিসির আইনের পরিপন্থী।’’
ওই চিঠিতে পিসিবি আরও লিখেছিল, ‘‘এই ধরনের অসদাচরণ খেলার কলঙ্ক। রাজনৈতিক পটভূমি বা প্রকৃতি বিবেচনা করে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এর প্রতিক্রিয়া এবং পরিণতি সুদূরপ্রসারী হতে পারে। আমরা বিশ্বাস করি সর্বোচ্চ পর্যায়ের অপরাধ সংগঠিত হয়েছে।’’
ভারতীয় দল বা ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) বিরুদ্ধে কিছু লেখেননি পাকিস্তানের ক্রিকেট কর্তারা। তাঁদের সব অভিযোগ ছিল পাইক্রফ্টের বিরুদ্ধে। ম্যাচ রেফারির জন্যই ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে ক্রিকেটের ঐতিহ্য, রীতি নষ্ট হয়েছে বলে দাবি পিসিবি কর্তাদের। আইসিসি কর্তারা অবশ্য পাইক্রফ্টের বিরুদ্ধে পিসিবির অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন। পাকিস্তানের দাবি মতো পাইক্রফ্টকে এশিয়া কাপের দায়িত্ব থেকেও সরানো হয়নি।