India vs Australia

শক্তি, পরিসংখ্যানে পিছিয়ে ভারত, বিশ্বকাপ ফাইনালে যেতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে অঘটন ঘটাতে হবে হরমনদের

মহিলাদের ক্রিকেটে বাকি দলগুলির চেয়ে অনেকটা এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া। পুরুষদের দলের থেকে মাঠের মানসিকতায় অ্যালিসা হিলিরা বোধহয় বেশি নির্মম। বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে কঠিন চ্যালেঞ্জ সামলাতে হবে হরমনপ্রীত কৌরদের।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২৫ ০৮:৫৫
Share:

সেমিফাইনালে ভারতের ইনিংস শুরু করতে পারেন স্মৃতি মন্ধানা এবং শেফালি বর্মা। ছবি: পিটিআই।

চার বারের বিশ্বজয়ী ইংল্যান্ডকে কাঁপিয়ে দিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। বৃহস্পতিবার সাত বারের বিশ্বজয়ী অস্ট্রেলিয়াকে হারাতে পারবে হরমনপ্রীত কৌরের ভারত? মহিলাদের এক দিনের বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালের আগে এটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন ভারতীয় ক্রিকেটমহলে।

Advertisement

দক্ষিণ আফ্রিকার মতো ভারতও বিশ্বকাপ জিততে পারেনি কখনও। বুধবার ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার জয়ের অন্যতম কারিগর অধিনায়ক লরা উলভার্ট। তাঁর ১৬৯ রানের ইনিংস চাপে ফেলে দেয় ন্যাট সিভার ব্রান্টদের। ভারতের আছেন স্মৃতি মন্ধানা। ভারতীয় দলের সহ-অধিনায়ক এখন মহিলাদের এক দিনের ক্রিকেটে এক নম্বর ব্যাটার। দলগত শক্তি, ধারাবাহিকতা এবং অভিজ্ঞতার নিরিখে অ্যালিসা হিলির দল নিঃসন্দেহে এগিয়ে থেকে মাঠে নামবে নবি মুম্বইয়ের ২২ গজে। তবে অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর ক্ষমতা রয়েছে হরমনপ্রীতদের।

লিগ পর্বের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেও জিততে পারেননি হরমনপ্রীতেরা। বিশাখাপত্তনমের সেই ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ৩৩০ রান করেছিল ভারত। ২৪.২ ওভারে উইকেট না হারিয়ে ১৫৫ রান তোলার পরও ৫০ ওভার ব্যাট করতে পারেনি ভারত। ৪৮.৫ ওভারে শেষ হয়ে গিয়েছিল হরমনপ্রীতদের ইনিংস। ১ ওভার হাতে রেখে ৭ উইকেটে ৩৩১ রান তুলে নেন হিলিরা। প্রত্যাশা অনুযায়ী বল করতে পারেননি স্নেহ রানা, ক্রান্তি গৌড়, আমনজ্যোৎ কৌরেরা। গত ১২ অক্টোবর ভাল শুরু করেও ম্যাচের রাশ ধরে রাখতে পারেনি ভারতীয় দল। বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে ওঠা অন্য দুই দল ইংল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকাকেও লিগের ম্যাচে হারাতে পারেননি হরমনপ্রীতেরা। সে দিক থেকে দেখলে পিছিয়ে থেকেই শুরু করতে হবে ভারতকে।

Advertisement

ভারতীয় শিবিরের অন্যতম সমস্যা ফিল্ডিং। প্রতি ম্যাচেই ফিল্ডারেরা বেশ কিছু বাড়তি রান পাইয়ে দিচ্ছেন প্রতিপক্ষকে। রিচা ঘোষ ব্যাট হাতে রান পেলেও উইকেটরক্ষকের ভূমিকায় তাঁকে কিছুটা নড়বড়ে দেখাচ্ছে। প্রশ্ন রয়েছে হরমনপ্রীতের ফিল্ডিং সাজানো নিয়েও। অধিনায়কের ব্যাটিং ফর্মও চিন্তার কারণ। তার উপর ফর্মে থাকা ওপেনার প্রতিকা রাওয়ালের চোট পেয়ে ছিটকে যাওয়া সেমিফাইনালে কিছুটা হলেও ব্যাকফুটে রাখবে ভারতকে।

প্রতিকার পরিবর্ত হিসাবে দলে নিতে হয়েছে শেফালি বর্মাকে। গত এক বছর একটিও এক দিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ না খেলা ওপেনারের উপরই হয়তো ভরসা করতে হবে সেমিফাইনালে। শেফালির দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন নেই। তাঁর ব্যাটে-বলে ঠিক মতো হলে দ্রুত রান উঠবে। কিন্তু এক বছর তাঁর দলে সুযোগ না পাওয়া, বিশ্বকাপের রিজ়ার্ভ তালিকাতেও তাঁকে না রাখা টিম ম্যানেজমেন্টের পরিকল্পনাকেই প্রশ্নের মুখে ফেলছে। খেলায় চোট আগাম জানিয়ে আসে না। এটুকু পরিণতি বোধ আশা করাই যায় অমল মুজুমদারের কাছ থেকে। কিন্তু প্রতিকার চোট এমন পরিস্থিতি তৈরি করল, সেই ব্রাত্য শেফালিকেই ডেকে আনতে হল। কারণ বিশ্বকাপের দলে তৃতীয় কোনও বিশেষজ্ঞ ওপেনিং ব্যাটার রাখাই হয়নি! পরিকল্পনার ঘাটতিও অস্ট্রেলিয়ার মতো শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে ভোগাতে পারে ভারতকে।

মহিলাদের ক্রিকেটে বাকি দলগুলির চেয়ো অনেকটা এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া। বলা যায়, অস্ট্রেলিয়ার পুরুষদের দলের চেয়ে মহিলাদের দল বোধহয় মাঠের মানসিকতায় বেশি নির্মম। সেমিফাইনালের মতো ম্যাচে প্রতিপক্ষকে সামান্যতম সুযোগও দেবে না তারা। চোটের জন্য অধিনায়ক হিলির খেলা নিয়ে সংশয় রয়েছে। তিনি না খেললেও অস্ট্রেলিয়ার দলগত শক্তিতে বিশেষ পার্থক্য হবে না। হিলির দলের সবচেয়ে বড় শক্তি প্রথম একাদশের ১০ জনই ব্যাট হাতে ম্যাচ জেতাতে পারেন। বল হাতে ম্যাচের রং বদলাতে পারেন অন্তত আট জন।

হরমনপ্রীতদের বিশ্বকাপ ফাইনালে যেতে হলে নিখুঁত ক্রিকেট খেলতে হবে বৃহস্পতিবার। ক্রিকেটের তিন বিভাগেই নিজেদের ছাপিয়ে যেতে হবে। এখনও পর্যন্ত মহিলাদের এক দিনের ক্রিকেটে ভারত-অস্ট্রেলিয়া মুখোমুখি হয়েছে ৬০ বার। ৪৯টি ম্যাচ জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। ভারত জিতেছে ১১টি। ২০২২ সাল থেকে দু’দল ৫০ ওভারের ক্রিকেটে মুখোমুখি হয়েছে ১১ বার। হরমনপ্রীতেরা জিতেছেন একটি ম্যাচ। হিলিরা ১০টি। এই পরিসংখ্যানে অবশ্য হতাশ হওয়ার কিছু নেই। খেলার মাঠে অঘটন তো বিরল নয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement