রবীন্দ্র জাডেজাকে ঘিরে উচ্ছ্বাস ভারতীয় ক্রিকেটারদের। ছবি: বিসিসিআই।
দিল্লির ২২ গজে দ্বিতীয় দিন ব্যাট হাতে খুব একটা সমস্যা পড়লেন না ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের ব্যাটারেরা। যশস্বী জয়সওয়ালের ১৭৫ এবং শুভমন গিলের অপরাজিত ১২৯ রানের সুবাদে ভারতীয় দল ৫ উইকেটে ৫১৮ রান তুলে পর প্রথম ইনিংস ডিক্লেয়ার করে। ব্যাট হাতে লড়াই করলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের তেজনারাইন চন্দ্রপাল, সাই হোপেরাও। দিনের শেষে সফরকারীদের রান ৪ উইকেটে ১৪০। প্রথম টেস্টের মতো এই ম্যাচ হয়তো দ্বিতীয় আড়াই দিনে শেষ হবে না।
প্রথম দিনের শক্ত ভিতের উপর দিন শুরু করেছিলেন যশস্বী এবং শুভমন। কিন্তু দিনের দ্বিতীয় ওভারেই ছন্দপতন। অধিনায়কের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে যান যশস্বী। টেস্টে তৃতীয় দ্বিশতরানের অদূরেই থমকে গেল তাঁর ইনিংস। ব্যক্তিগত ১৭৫ রানের মাথায় শুভমনের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে গেলেন। এই আউটের ক্ষেত্রে দায় এড়াতে পারেন না অধিনায়কও। দিনের শুরুতে যশস্বী ফিরে গেলেও ভারতের বড় ক্ষতি হয়নি। শুভমন এবং নীতীশ কুমার রেড্ডির জুটি নির্ভরতা দেয় দলকে। নীতীশ আগের টেস্টে ব্যাট করার সুযোগ পাননি। এ বার তাঁকে পাঠানো হয় পাঁচ নম্বরে। তাঁর ব্যাট থেকে এল ৪৩ রানের ইনিংস। ভাল খেললেন ধ্রুব জুরেলও। তরুণ উইকেটরক্ষক-ব্যাটার করলেন ৪৪। শুভমন অপরাজিত থাকলেন ১২৯ রান করে। টেস্টে দশম শতরান করলেন। অধিনায়ক হিসাবে টেস্টে পাঁচটি শতরান হয়ে গেল ২৬ বছরের ব্যাটারের। জুরেল আউট হতেই ডিক্লেয়ার করে দেন শুভমন। সম্ভবত ভারতীয় শিবিরের লক্ষ্য ছিল দ্বিতীয় দিনের মধ্যেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ়কে কোণঠাসা করে ফেলা। যদিও দিল্লি পিচ থেকে বোলারেরা এখনও পর্যন্ত দারুণ সুবিধা কিছু পাননি।
ভারতীয় শিবিরের লক্ষ্য অবশ্য শনিবার সফল হল না। অহমদাবাদের তুলনায় ভাল ব্যাট করলেন ক্যারিবিয়ানেরা। ওপেনার জন ক্যাম্পবেল (১০) দ্রুত আউট হলেও দলকে ভরসা দিলেন তেজনারাইন, হোপেরা। ক্যাম্পবেল আউট হয়েছেন কিছুটা দুর্ভাগ্যজনক ভাবে। রবীন্দ্র জাডেজার সুইপ করেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের ওপেনার। ফরোয়ার্ড শর্ট লেগে থাকা সাই সুদর্শন সরে আঘাত এড়াতে সরে যাওয়ার সময়ও পাননি। তাতে লাভ হয়েছে ভারতেরই। বল জমে যায় তাঁর হাতে। আঙুলে অল্প চোট পেলেও ক্যাচ ধরে নেন তিনি। অন্য ওপেনার তেজনারাইন করলেন ৩৪। তিন নম্বরে নামা অ্যালিক অ্যাথানাজ়ের ব্যাট থেকে এল ৪১। তাঁদের ৬৬ রানের জুটি কিছুটা চাপে ফেলে দেয় ভারতীয় শিবিরকে। যদিও তেজনারাইন আউট হওয়ার পর বিশেষ সমস্যা হয়নি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ় দিনের শেষে আরও ভাল অবস্থায় থাকতে পারত পর পর দু’ওভারে অ্যাথানাজ় এবং চেজ আউট না হলে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ় অধিনায়ক যে ভাবে জাডেজার বলে তাঁর হাতেই ক্যাচ দিয়ে আউট হলেন, তাতে হতাশ দেখাল ব্রায়ান লারাকে। দর্শকাসনে বসেই লারা হাতের মুদ্রায় দেখিয়ে দিলেন জাডেজার বল কী ভাবে খেলা উচিত ছিল চেজের (শূন্য)। তিনি ক্রিজ়ে সময় কাটাতে পারলে দিনের শেষ আরও ভাল জায়গায় থাকতে পারতেন সফরকারীরা। দিনের শেষে হোপ (৩১) এবং টেভিন ইমলাচ (১৪)। এ দিন ভারতের সফলতম বোলার জাডেজা ৩৭ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন। ৪৫ রানে ১ উইকেট কুলদীপ যাদবের।
দ্বিতীয় দিনের শেষে ভারতের থেকে ৩৭৮ রানে পিছিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ়। ফলো অন বাঁচানোর জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ে চাই আরও ১৭৯ রান। তৃতীয় দিন থেকে দিল্লির ২২ গজে বল আরও বেশি ঘুরতে পারে। সুবিধা পেতে পারেন ভারতীয় বোলারেরা। দর্শকাসনে থাকা লারার হতাশা আরও বাড়াতে পারেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের এই প্রজন্মের ক্রিকেটারেরা।