India vs England

শুভমন, শ্রেয়সদের ব্যাটে ভারতের জয়, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে জেতার অভ্যাস গড়ে নিলেন রোহিতেরা

নিয়মরক্ষার শেষ এক দিনের ম্যাচেও ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে বড় ব্যবধানে জয় পেল ভারতীয় দল। সাদা বলের ক্রিকেটে জয়ের অভ্যাস তৈরি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে যাবেন রোহিত শর্মারা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২০:২২
Share:

জয়ের উচ্ছ্বাস ভারতীয় দলের। ছবি: পিটিআই।

পর পর দুই টেস্ট সিরিজ়ে হারের লজ্জা অতীত। সাদা বলের ক্রিকেটে ঝকঝকে ভারতীয় ক্রিকেট। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজ়ের পর এক দিনের সিরিজ়েও ভারতীয় দলের দাপট। অহমদাবাদের ২২ গজেও চালিয়ে খেললেন শুভমন গিল, শ্রেয়স আয়ারেরা। কোচ গৌতম গম্ভীরকে স্বস্তি দেবে বিরাট কোহলি এবং লোকেশ রাহুলের ইনিংসও।

Advertisement

জয়ের অভ্যাস তৈরি করে দুবাইয়ে পা রাখতে পারবে ভারতীয় দল। সঙ্গে থাকবে সব ব্যাটার রানে থাকার আত্মবিশ্বাস। বুধবার ভারত জিতল ১৪২ রানে। ভারতের ৩৫৬ রানের জবাবে ইংল্যান্ডের ইনিংস শেষ হল ৩৪.২ ওভারে ২১৪ রানে। ৩-০ ব্যবধানে এক দিনের সিরিজ় জিতলেন রোহিত শর্মারা।

তিন ম্যাচের এক দিনের সিরিজ় জয় কটকেই নিশ্চিত করে ফেলেছিল ভারতীয় দল। শেষ ম্যাচে চাপমুক্ত হয়ে নেমেছিলেন রোহিতেরা। সেটাই চাপে ফেলে দিল ইংল্যান্ডের বোলারদের। দিনের শুরুতেই রোহিত (১) সাজঘরে ফিরলেও প্রিয় মাঠে লক্ষ্যে অনড় ছিলেন শুভমন। নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামের ২২ গজকে মৃগয়া ক্ষেত্রে পরিণত করেছেন শুভমন। আইপিএলে তাঁর তিনটি শতরান রয়েছে এই ম্যাঠে। টেস্ট, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতেও শতরান রয়েছে। বুধবার এক দিনের আন্তর্জাতিকে শতরান করে বৃত্ত পূর্ণ করলেন ভারতীয় দলের সহ-অধিনায়ক। ১৪টি চার। ৩টি ছক্কার সাহায্যে ১০২ বলে ১১২ রানের ইনিংস খেললেন শুভমন। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে তাঁর ফর্ম খুশি করবে গম্ভীরকে। তিনি খুশি হবেন শ্রেয়সকে নিয়েও। মিডল অর্ডারে তিনিই ভরসা। গত এক দিনের বিশ্বকাপের মতোই সাবলীল ব্যাটিং করছেন। অহমদাবাদে খেললেন ৬৪ বলে ৭৮ রানের ইনিংস। মারলেন ৮টি চার, ২টি ছক্কা।

Advertisement

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে শেষ ম্যাচে কোহলি এবং রাহুলের ইনিংস স্বস্তি দেবে ভারতীয় শিবিরকে। বেশ কিছু দিন ধরে রান পাচ্ছিলেন না কোহলি। বুধবার করলেন ৫৫ বলে ৫২। ৭টি চার, ১টি ছয় এল তাঁর ব্যাট থেকে। এ দিনের ইনিংসও হয়তো কোহলিসুলভ নয়। তবু অর্ধশতরানের ইনিংস তাঁকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলতে পারে। ঠিক সময়ে ফর্মে ফিরতে পারেন কোহলি। উইকেটরক্ষক-ব্যাটার হিসাবে গম্ভীরের ভরসা রাহুলের উপর। তিনিও রান পেলেন। ২৯ বলে ৪০ রানের কার্যকর ইনিংস খেললেন। বাকি কেউ বলার মতো রান করতে না পারলেও ভারত করে ৩৫৬ রান।

ইংল্যান্ডের বোলারদের মধ্যে আবারও নজর কাড়লেন আদিল রশিদ। ৬৪ রান খরচ করলেও ৪ উইকেট নিলেন। ৪৫ রানে ২ উইকেট মার্ক উডের।

বুধবারের ম্যাচে জয়ের জন্য মরিয়া ছিল না ইংল্যান্ডও। মঙ্গলবারই জানিয়ে দিয়েছিলেন বেন ডাকেট। ইংল্যান্ডের কোচ ব্রেন্ডন ম্যাকালামও পরিকল্পনা মতো প্রস্তুতি সেরে নিতে চেয়েছিলেন। জয় এলে আসবে, না এলেও ক্ষতি নেই— এমন মানসিকতা নিয়ে মাঠে নামা ইংরেজরাও খেললেন খোলা মনে। আগ্রাসী ব্যাটিং করার চেষ্টা করলেন দুই ওপেনার ফিল সল্ট (২৩) এবং বেন ডাকেট (৩৪)। যদিও টম ব্যান্টন, জো রুটদের খেলায় বাজ়বলের প্রভাব দেখা গেল না। হতে পারে ২২ গজে যতটা সম্ভব বেশি সময় কাটানোর চেষ্টা করেছেন ইংল্যান্ডের মিডল অর্ডার ব্যাটারেরা। তা করতে গিয়ে ওভার প্রতি রান তোলার লক্ষ্য বাড়িয়ে ফেলেছেন তাঁরা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উইকেট পড়ায় তৈরি হয়েছে চাপ। ক্রমে তা বেড়েছে। ইনিংসের শুরুতে ইংল্যান্ডকে বিপজ্জনক মনে হচ্ছিল। মাঝের ওভারগুলিতে তেমন দেখাল না তাদের। বরং হ্যারি ব্রুক, বাটলারেরা খানিকটা ধরে খেলার চেষ্টা করলেন। বল বুঝে ব্যাট করলেন। জিততেই হবে মানসিকতা না থাকায় দ্রুত রান তোলার চেষ্টাই করলেন না তাঁরা। অক্ষর পটেল, কুলদীপ যাদবদের স্পিনের বিরুদ্ধে ঝুঁকিহীন ব্যাটিংয়ের চেষ্টা করলেন। তাতে অবশ্য লাভ কিছু হল না। তাঁরা রান করতে পারলেন না। ২২ গজেও সময় কাটাতে পারলেন না। ব্রুক (১৯), বাটলার (৬), লিয়াম লিভিংস্টোন (৯) কেউই দলকে ভরসা দিতে পারলেন না। কিছুটা লড়াই করলেন শুধু গাস অ্যাক্টিনসন। সেই লড়াই অবশ্য ইংল্যান্ডকে জয় এনে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট ছিল না। তিনি শেষ পর্যন্ত করলেন ১৯ বলে ৩৮ রান।

বোলারদের পারফরম্যান্সও আত্মবিশ্বাস বাড়াবে ভারতীয় শিবিরের। প্রথম দু’ম্যাচে খেলার সুযোগ না পাওয়া অর্শদীপ সিংহই এ দিন প্রথম ইংল্যান্ডের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে লাগাম দেন। ৩৩ রানে ২ উইকেট বাঁহাতি জোরে বোলারের। হর্ষিত রানাও ৩১ রানে ২ উইকেট নিয়ে বুঝিয়ে দিলেন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে জায়গা পেয়েছেন যোগ্য হিসাবেই। অক্ষর ২২ রানে ২ উইকেট, হার্দিক ৩৮ রানে ২ উইকেট নিলেন। ১টি করে উইকেট ওয়াশিংটন সুন্দর এবং কুলদীপ যাদবেরও। ভারতের সব বোলার উইকেট পেলেন এই ম্যাচে। ব্যাটারদের মতো তাঁরাও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নিলেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement