Anaya Bangar

লিঙ্গ পরিবর্তন করায় ক্রিকেট ছাড়তে বলেছিল বাবা, নিজেকে শেষ করে দিতে চেয়েছিলেন বাঙ্গার-তনয়া অনয়া

শুক্রবারই প্রকাশ্যে এসেছিল সঞ্জয় বাঙ্গারের কন্যা অনয়ার কথা। শনিবার তাঁর সাক্ষাৎকারের আরও একটি অংশ প্রকাশ্যে এল। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, বাবা ক্রিকেট খেলা ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৫ ১৮:৫৪
Share:

(বাঁ দিকে) অনয়া বাঙ্গার। সঞ্জয় বাঙ্গার (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।

শুক্রবারই প্রকাশ্যে এসেছিল সঞ্জয় বাঙ্গারের কন্যা অনয়ার কথা, যিনি লিঙ্গ পরিবর্তন করে পুরুষ থেকে মহিলা হয়েছেন। শনিবার তাঁর সাক্ষাৎকারের আরও একটি অংশ প্রকাশ্যে এল। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, বাবা ক্রিকেট খেলা ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। লিঙ্গ পরিবর্তন করার পর গোটা সমাজকে বদলে যেতে দেখে নিজেকে শেষ করে দেওয়ার কথা ভেবেছিলেন অনয়া।

Advertisement

‘দ্য লালানটপ’ ওয়েবসাইটে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অনয়া বলেছেন, “বাবা স্পষ্ট কথা বলেছিলেন, আমার জন্য ক্রিকেটে কোনও জায়গা নেই। তখনই জানতাম, নিজের লড়াই নিজেকেই করতে হবে।” তবে বাবার কথায় নয়, লিঙ্গ পরিবর্তনের পর সমাজের থেকে যে ব্যবহার পেয়েছিলেন তাতেই হতাশ হয়ে পড়েছিলেন অনয়া।

তাঁর কথায়, “মাঝেমাঝে মাথায় আত্মহত্যার কথা ঘুরত। আমি বুঝতে পারতাম গোটা বিশ্বই আমার বিপক্ষ। নিজে ভাল থাকা এবং আত্মপরিচয়ের জন্য যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম (লিঙ্গ পরিবর্তনের), তাতে এই সমাজে আমার কোনও জায়গা ছিল না। খুব সাধারণ সুযোগ সুবিধা এবং অধিকার থেকেও বঞ্চিত হতে হত।”

Advertisement

পরিবার তাঁর পাশে থাকলেও আর কাউকে পাশে পাননি অনয়া। বলেছেন, “পরিবারের তরফে আমার পাশে দাঁড়িয়েছিল সবাই। তবে সমাজ, ক্রিকেট এবং বাইরের বিশ্বের কাছে আমার কোনও জায়গা ছিল না।”

এখন ম্যাঞ্চেস্টারে থাকেন অনয়া। ২০২১ সালে তিনি সিদ্ধান্ত নেন, লিঙ্গ পরিবর্তন করাবেন। সেই মতো ‘হরমোনাল রিপ্লেসমেন্ট সার্জারি’ হয়। ১০ মাস ধরে সেই প্রক্রিয়া চলেছে। গত বছর নভেম্বরে সেই সময়ের কথা সমাজমাধ্যমে তুলে ধরেছিলেন অনয়া। সেই ভিডিয়োয় তাঁর খেলার ছবি ছিল। পাশাপাশি ২০১৬ সালে বিরাট কোহলি ও ২০১৭ সালে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির সঙ্গে তোলা ছবিও ছিল। ভিডিয়োর ক্যাপশনে তিনি লিখেছিলেন, “ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্নের পিছনে ছুটতে গিয়ে অনেক ত্যাগ করতে হয়েছে। অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে। ক্রিকেটের বাইরে আরও একটা যাত্রা চলছিল। নিজেকে চেনার যাত্রা। সেই পথেও অনেক লড়াই করতে হয়েছে। অবশেষে নিজের সিদ্ধান্তেই টিকে থেকেছি। নিজেকে ভালবেসেছি। নিজেকে নিয়ে আমি গর্বিত।”

লিঙ্গ পরিবর্তন করানোয় পেশাদার ক্রিকেট খেলার স্বপ্ন ছাড়তে হয়েছে অনয়াকে। কারণ, ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা আইসিসি-র নিয়ম, রূপান্তরকামী বা রূপান্তরিতেরা মহিলাদের ক্রিকেট খেলতে পারবেন না। মহিলা ক্রিকেটারদের সুরক্ষা ও খেলার মধ্যে সাম্য বজায় রাখার জন্য এই নিয়ম করা হয়েছে।

ক্রিকেটের এই নিয়মের বিরুদ্ধেও সরব হয়েছেন অনয়া। তাঁর মতে, লিঙ্গ পরিবর্তন করানোয় তিনি যে ক্রিকেট খেলতে পারবেন না তা কোনও দিন ভাবতে পারেননি। ক্রিকেটের নিয়মে বলা হয়েছে, বয়ঃসন্ধির আগে লিঙ্গ পরিবর্তন করালে একমাত্র তখনই কোনও রূপান্তরিতকে মহিলাদের ক্রিকেট খেলার অনুমতি দেওয়া হবে। কিন্তু আইন অনুযায়ী, ১৮ বছর না হলে লিঙ্গ পরিবর্তন করানো বেআইনি। এই দ্বন্দ্বে পড়ে তাঁর মতো ক্রিকেটারদের স্বপ্ন ভেঙে যাচ্ছে বলে অভিযোগ তাঁর। ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন ভেঙে গেলেও নিজের আর এক স্বপ্ন ভাঙতে দেননি অনয়া। নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী বাঁচার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement