শুভমন গিল। —ফাইল চিত্র।
ইডেন গার্ডেন্সে ৩ বল খেলে উঠে গিয়েছিলেন শুভমন গিল। করেছিলেন ৪ রান। সে দিন আউট হননি। মঙ্গলবার কটকেও আউট হলেন ৪ রান করে। এ দিন খেললেন ২ বল। ২৪ দিন পর মাঠে ফেরা শুভমনের কাল হল বাউন্ডারিই! আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শুভমনের প্রত্যাবর্তনে মন ভরল না ক্রিকেটপ্রেমীদের।
গত ১৫ নভেম্বর ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। ঘাড়ের ব্যথায় কাবু শুভমনকে ঘিরে তৈরি হয়েছিল উদ্বেগ। ২৪ দিন পর সেই উদ্বেগের অবসান। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধেই প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে নেমে পড়লেন ভারতের টেস্ট এবং এক দিনের দলের অধিনায়ক।
কলকাতা থেকে কটকের দূরত্ব ৪২০ কিলোমিটার। এটুকু পথ পাড়ি দিতে শুভমনকে মানতে হয়েছে চিকিৎসকদের নানা বিধিনিষেধ। কলকাতা টেস্ট হারার পর হার না মানা মানসিকতার শুভমন গুয়াহাটি গিয়েছিলেন দলের সঙ্গে। যদি কোনও ভাবে খেলা যায়। পারেননি। দ্বিতীয় টেস্ট শুরুর দিন চলে যান মুম্বই। সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে বেঙ্গালুরুতে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) সেন্টার অফ এক্সেলেন্সে।
শুভমন গিল। — ফাইল চিত্র।
প্রাথমিক ভাবে বিসিসিআইয়ের মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যেরা মনে করেছিলেন, ২০২৫ সালে আর খেলা হবে না শুভমনের। তবে তাঁরা প্রত্যাশার থেকেও দ্রুত শুভমনকে ম্যাচ ফিট করে দিয়েছেন। শুভমন যে সম্পূর্ণ ফিট, তা বোঝা গিয়েছিল সোমবারের অনুশীলনে। সম্পূর্ণ স্বাভাবিক ছিলেন শুভমন। অভিষেক শর্মার সঙ্গে রসিকতা করতেও দেখা গিয়েছিল টি-টোয়েন্টি দলের সহ-অধিনায়ককে। মঙ্গলবার খেলা শুরুর আগে শুভমন বলেন, ‘‘কলকাতা টেস্টর দ্বিতীয় দিন সকাল থেকেই ঘাড়ে একটা অস্বস্তি হচ্ছিল। পরে সেটা আরও বেড়ে যায়। ঘাড় শক্ত হয়ে গিয়েছিল। যন্ত্রণা হচ্ছিল। হাসপাতালেও যেতে হয়। চিকিৎসকেরা জানান, স্নায়ুর উপর চাপ পড়ায় সমস্যা হয়। এখন ঠিক আছি। কোনও সমস্যা নেই।’’
মঙ্গলবার কটকের বারাবাটি স্টেডিয়ামের ২২ গজে যাওয়ার সময় সাবলীল দেখিয়েছে শুভমনকে। নিজের খেলা প্রথম বলে চেনা মেজাজে চার মারেন লুঙ্গি এনডিগিকে। কিন্তু দ্বিতীয় বলেই আউট হয়ে গেলেন। শটের টাইমিং ঠিক হল না। ক্যাচ চলে গেল মার্কো জানসেনের হাতে। আউট হলেন সেই ৪ রান করে। শুভমনের প্রত্যাবর্তন মন ভরাতে পারল না ক্রিকেটপ্রেমীদের। তবে আশ্বস্ত করল। মাঠে যখন ফিরেছেন, রানেও ফিরবেন নিশ্চয়ই।
শুভমন গিল। — ফাইল চিত্র।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দু’মাসও বাকি নেই। এ সময় খেলার মধ্যে থাকা গুরুত্বপূর্ণ। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে খেলতে না পারলে কিছুটা পিছিয়ে পড়তে পারতেন শুভমন। তাই তাঁকে দ্রুত মাঠে ফেরাতে চেষ্টার খামতি রাখেননি বোর্ডের মেডিক্যাল স্টাফেরা। বিশ্বকাপে ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে শুভমনের ভূমিকা। ইনিংসের শুরুতে অভিষেকের সঙ্গে তাঁর জুটি জমে গেলে, যে দলকে কোণঠাসা করে দিতে পারে গত বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নেরা।
শুভমন কটকে হয়তো পারলেন না। মাঠে ফেরা শুভমনকে নিয়ে ভাল কিছু আশা তো করাই যায়। আসল প্রত্যাবর্তন হয়তো বাকিই রাখলেন শুভমন।