Virat Kohli

Rishabh Pant: ঋষভের জন্য ধোনি-টোটকা অধিনায়কের

বিরাট ফিটনেস: ম্যাচের আগে যখন বুঝতে পারলাম আমার খেলা সম্ভব নয়, তখন খুবই খারাপ লেগেছে। তবে চোট-আঘাত ক্রিকেটের অঙ্গ।

Advertisement

ইন্দ্রজিৎ সেনগুপ্ত 

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২২ ০৭:১৬
Share:

মধ্যমণি: সম্পূর্ণ সুস্থ বিরাট কোহলি মগ্ন অনুশীলনে। বিসিসিআই

কেপ টাউনে ইতিহাসের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি জানিয়ে দিলেন, তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ। তৃতীয় টেস্টে নামার জন্যও তৈরি। তবে দ্বিতীয় টেস্টে চোট পাওয়া মহম্মদ সিরাজ এখনও সুস্থ হতে পারেননি। কেপ টাউনে তাঁকে পাচ্ছে না ভারত। সিরাজের পরিবর্তে কাকে খেলানো হবে, তা নিয়ে পরিষ্কার করে কিছু বলেননি বিরাট।

Advertisement

সাংবাদিক বৈঠক থেকে বেশ কিছু দিন অনুপস্থিত থাকার পরে সোমবার আবার ফেরেন কোহলি। কিন্তু প্রশ্নোত্তর পর্বে নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান চেতন শর্মার মন্তব্য সংক্রান্ত প্রসঙ্গ ওঠেনি। বিরাট কথা বলেন ক্রিকেট ও চলতি টেস্ট সিরিজ় নিয়েই।

বিরাট ফিটনেস: ম্যাচের আগে যখন বুঝতে পারলাম আমার খেলা সম্ভব নয়, তখন খুবই খারাপ লেগেছে। তবে চোট-আঘাত ক্রিকেটের অঙ্গ। কেউ যদি মনে করেন, একজন ক্রিকেটারের পক্ষে সারা বছর ধরে প্রত্যেকটি ম্যাচ খেলা সম্ভব, তা হলে ভুল করছেন। ২০১২ থেকে তিনটি ফর্ম্যাট-সহ নিয়মিত আইপিএল খেলছি। শেষ দশ বছরে ধরেই নেওয়া হয়েছে, আমি ভারতের হয়ে প্রত্যেকটি ম্যাচ খেলব। কিন্তু এ ভাবে তো চলতে পারে না। চোট-আঘাত নিয়েই আমাদের এগোতে হবে। টানা খেললে চোট লাগতেই পারে। ঠিক সময়ে বিশ্রাম নিতে পারলেই এ ধরনের সমস্যা মিটে যায়। কেপ টাউনে আমার খেলা নিয়ে কোনও সংশয় নেই। আমি সম্পূর্ণ সুস্থ।

Advertisement

প্রমাণ করার নেই: বাইরের লোকজন আমাকে যে চোখে দেখেন, আমি নিজেকে সেই নজরে দেখি না। নিজের মাপকাঠি নিজেই তৈরি করেছি। আমি যে জায়গায় নিজেকে নিয়ে যেতে পেরেছি, সেখানে থাকলে প্রত্যেক দিন খুঁত বার করার চেষ্টা করা হবে। এটাই তাঁদের কাজ। তবে দলের প্রয়োজনে অবদান রাখতে পেরে আমি গর্বিত। আমরা যা চাইছি, সব সময় তা কিন্তু পাওয়া সম্ভব নয়। এটা বলে দিতে পারি, এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়তে পেরেছি যাতে দল উপকৃত হয়েছে। শেষ দু’বছর ধরে এ ভাবেই খেলে আসছি। সব সময় নিজেকে নিয়ে চিন্তা করি না। যদি ভাবি কেন সেঞ্চুরি পাচ্ছি না, তাতে মানসিক শান্তি নষ্ট হয়। আমি কতটা পরিশ্রম করছি, কতটা সময় দিচ্ছি উন্নতির জন্য, সেটাই মানসিক শান্তি দেয়। চিন্তা করার কোনও জায়গা নেই। কারও কাছে নিজেকে প্রমাণ করারও আর কিছু নেই। বাইরে থেকে অনেক ধরনের মন্তব্যই শোনা যায়, তাতে কান দিই না।

রাহানে-পুজারা অমূল্য সম্পদ: মাঝের সারির ব্যাটিংয়ে কবে প্রজন্ম বদল হবে, তা কখনওই চিহ্নিত করা সম্ভব নয়। বিষয়টি সময়ের উপরে নির্ভর করে। জোর করে কখনও চাপিয়ে দেওয়া যায় না। শেষ টেস্টে পুজারা এবং রাহানে যে ভাবে ব্যাট করেছে, তাতেই বোঝা যায় দলের জন্য ওরা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। এটাই প্রথম বার নয়, বিদেশের মাটিতে বরাবর কঠিন পরিস্থিতি থেকে দলকে বার করে এনেছে এই দুই ব্যাটার। শেষ অস্ট্রেলিয়া সফরই তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ। ওদের অবদান দলকে ভাল জায়গায় পৌঁছে দেয়। ওদের অভিজ্ঞতা অমূল্য সম্পদ। প্রজন্ম বদলের বিষয়টি সময়ের উপরে ছেড়ে দেওয়া উচিত। এটা জোর করে চাপিয়ে দেওয়া যায় না।

রাহুলের নেতৃত্ব: দ্বিতীয় টেস্টে খুবই ভাল নেতৃত্ব দিয়েছে। সব সময় চেষ্টা করছিল উইকেট তুলে নেওয়ার। সে ভাবেই বোলারদের পরিবর্তন করেছে। নেতৃত্ব দেওয়ার ধরন প্রত্যেকের ক্ষেত্রে আলাদা। আমি যে ভাবে নেতৃত্ব দিই, সেটা অন্য কারও থেকে আশা করি না। দক্ষিণ আফ্রিকা খুবই ভাল ক্রিকেট খেলেছে। সেটা মানতেই হবে।

ঋষভের শট নির্বাচন: অনুশীলনের সময় ঋষভের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। খারাপ শট খেলে যখন কেউ আউট হয়, সে-ই সবচেয়ে ভাল জানে সেই পরিস্থিতিতে ওই শট নেওয়া উচিত ছিল কি না। ভুল আমরা সবাই করেছি। কিন্তু কত দ্রুত সেই ভুল শুধরে এগিয়ে যেতে পারছি, সেটাই আসল। বুঝতে হবে সেই মুহূর্তে কেন এই রকম একটি ঝুঁকিপূর্ণ শট খেলতে গেলাম। মাহি ভাই (মহেন্দ্র সিংহ ধোনি) বলেছিল, একটা ভুল করার সাত-আট মাসের মধ্যে যেন তার পুনরাবৃত্তি না ঘটে। তাতে ক্রিকেট জীবন দীর্ঘস্থায়ী হয়। সেই কথাটা আমার মনের মধ্যে গেঁথে গিয়েছিল। আশা করব, পন্থও নিজের ভুল দ্রুত শুধরে নেবে। আমি নিশ্চিত ও সেটা পারবে এবং দলের জন্য বড় ইনিংস উপহার দেবে।

সিরাজের চোট: দ্বিতীয় টেস্টে চোট পেয়েছিল। এখনও পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে পারেনি। এই পরিস্থিতিতে ওকে খেলানোর ঝুঁকি আমরা নিচ্ছি না। তবে ওর পরিবর্তে কাকে খেলানো যায়, সেটাও এখনও ঠিক করা হয়নি। কোচের সঙ্গে আলোচনা করার পরেই সিদ্ধান্ত নেব।

অশ্বিনে মুগ্ধ: যে কোনও দলে রবীন্দ্র জাডেজার মূল্য অপরিসীম। কিন্তু ওর অভাব অশ্বিন খুব ভাল ভাবেই পূরণ করে দিচ্ছে। শেষ ম্যাচে দশ ওভারে ১৯ রান দিয়েছিল। সব সময় দলের জন্য খেলে। স্পিনার-অলরাউন্ডারের ভূমিকা খুব ভাল ভাবেই পালন করছে। বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিংয়েও সমান অবদান রাখছে। পৃথিবীর যে কোনও পরিবেশে অশ্বিন এ ভাবেই দায়িত্ব নিয়ে
খেলে যাবে।

নেতৃত্বে উন্নতি: দায়িত্ব যখন নিয়েছিলাম, ভারত সাত নম্বর দল ছিল। এখন আমরা কেউ সে দিনের কথা ভাবতেই পারি না, কারণ শেষ চার-পাঁচ বছর ধরে আমরাই এক নম্বর টেস্ট দল থেকেছি। বিপক্ষের ব্যাটাররা এখন চিন্তা করে আমাদের বোলিং বিভাগ নিয়ে। অধিনায়ক হিসেবে এটাই বড় প্রাপ্তি। এ রকমই একটি দলই তৈরি
করতে চেয়েছিলাম।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন