Wriddhiman Saha

Wriddhiman Saha: বাংলার হয়েই খেলো ঋদ্ধি, আবেদন ভক্তদের

ঋদ্ধি কী করবেন, তা সম্পূর্ণ তাঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত, কিন্তু ইডেন যে তাঁর ফেরার অপেক্ষাতেই থাকবে, এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০২২ ০৭:২৮
Share:

সমর্থন: ঋদ্ধির পাশে আছি। ইডেনে এমনই বার্তা দেওয়া পোস্টার নিয়ে হাজির দর্শকেরা। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র।

সিএবি-র এক কর্তার অপমান সহ্য করতে না পেরে বাংলার হয়ে আর না-খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ঋদ্ধিমান সাহা। গুজরাত টাইটান্সের হয়ে প্রথম কোয়ালিফায়ার খেলতে নামার আগের দিনও তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, ইডেন এখন তাঁর ঘরের মাঠ নয়। গুজরাত টাইটান্সে খেলার সৌজন্যে মোতেরাকেই ঘরের মাঠ হিসেবে দেখছেন তিনি। কিন্তু ঋদ্ধির ভক্তেরা মানতে পারছেন না, বাংলার হয়ে তাঁদের প্রিয় ক্রিকেটার আর খেলবেন না। মঙ্গলবার ইডেনে প্রথম কোয়ালিফায়ার দেখতে এসে ভক্তেরা গ্যালারি থেকে রব তুললেন, ‘‘ঋদ্ধিকে বাংলায় চাই। বাংলায় ফিরেএসো ঋদ্ধিদা।’’

Advertisement

ভক্তদের আবেদন ঋদ্ধির কান পর্যন্ত পৌঁছনো সম্ভব নয়। কারণ, ইডেনে এ দিন উপস্থিত ছিলেন প্রায় ৪৮ হাজার দর্শক। তিন বছর পরে ইডেনে ফিরল আইপিএল। যার সাক্ষী থাকার জন্য দর্শকদের উন্মাদনাও ছিল তুঙ্গে। কিন্তু ঋদ্ধি ভক্তেরা সমর্থকদের গর্জন উপেক্ষা করেই তাঁদের প্রতিবাদ চালিয়ে গেলেন গ্যালারি থেকে। বাঁকুড়া থেকে খেলা দেখতে আসা অর্ঘ্যদীপ মুখোপাধ্যায় বলছিলেন, ‘‘ঋদ্ধিদার জন্যই এত দূর ম্যাচ দেখতে আসা। আমি ওর বড় ভক্ত। আশা করব, এত ভাল পারফরম্যান্সের পরে নির্বাচকেরা তাঁর দিকে মুখ তুলে তাকাবেন।’’ বাগুইআটি থেকে আসা সুকান্ত চৌধুরী বলছিলেন, ‘‘ঋদ্ধিদাকে বাংলার হয়েই দেখতে চাই। অন্য কোনও রাজ্যের জার্সিতে তাঁকে কোনও ভাবে দেখতে চাই না।’’

ঋদ্ধি কী করবেন, তা সম্পূর্ণ তাঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত, কিন্তু ইডেন যে তাঁর ফেরার অপেক্ষাতেই থাকবে, এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। শূন্য রানে তিনি আউট হওয়ার পরে এক মুহূর্তের জন্য নিঃস্তব্ধ হয়ে যায় ইডেন। ৪৮ হাজার দর্শকের ইডেনে সেই মুহূর্তে হয়তো পিন পড়ার শব্দও শোনা যেত। তিনি বেরিয়ে যাওয়ার সময় হাততালি দিয়ে অভ্যর্থনা জানালেন সমর্থকেরা।

Advertisement

ঋদ্ধির ব্যর্থতায় ইডেন যতটাই হতাশ, ততটাই মুগ্ধ জস বাটলারের ইনিংসে। তাঁর ব্যাটিংয়ের সময়ই গ্যালারিতে ওঠে ‘মেক্সিকান ওয়েভ’। বহু দিন পরে ইডেনের গ্যালারি সাক্ষী থাকল এই দৃশ্যের। বাটলারের ব্যাটিংয়ের সময়ই মাঠে প্রবেশ করার চেষ্টা করেছিলেন এক দর্শক। ‘ডি’ ব্লকের প্রান্ত থেকে বাউন্ডারি লাইন অতিক্রমও করে ফেলেছিলেন। কিছুটা এগোনোর পরেই নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে মাঠের বাইরে বার করে দিতে বাধ্য হন। তাতে ম্যাচের যদিও কোনও ক্ষতি হয়নি। কোনও ক্রিকেটারকে তিনি ছুঁয়ে দিলে জৈব সুরক্ষা বলয় ভঙ্গ হতেও পারত।

প্লে-অফের দিন সকালে বেশ কিছুক্ষণ ভারী বৃষ্টি হয় কলকাতায়। ম্যাচ আদৌ আয়োজন করা সম্ভব হবে কি না, ছিল সংশয়। কিন্তু মাঠকর্মীদের কাছে পুরো মাঠ ঢাকার আচ্ছাদন উপস্থিত ছিল। বৃষ্টি থামলেই যাতে খেলার উপযোগী করে তোলা যায় এই মাঠ। বিকেল চারটের সময় বোর্ড প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও মাঠে প্রবেশ করে আউটফিল্ডে হাত দিয়ে দেখে নেন, ভিজে আছে কি না। একেবার পিচ দেখে ভিতরে চলে যান তিনি।

ইডেনের বাইশ গজে যে বড় রান হতে পারে, তা আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন পিচ প্রস্তুতকারক। রাজস্থান রয়্যালস অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসনের ইনিংসই পরিষ্কার করে দিল, পিচে কোনও জুজু নেই। সঞ্জুর ব্যাট করার সময় ইডেন সবচেয়ে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। এক সময় কেকেআরে খেলতে এসেছিলেন তিনি। কলকাতায় থাকাকালীন ম্যাচ খেলার সুযোগ খুব একটা না পেলেও এই পিচের চরিত্র সম্পর্কে তিনি ওয়াকিবহাল। সঞ্জুর আক্রমণই ইডেনের গ্যালারিকে জাগিয়ে তুলল ম্যাচ শুরুর ৪৫ মিনিটে।

সঞ্জুকে আপন করে নেওয়ার পাশাপাশি ইডেন ভোলেনি শুভমন গিলকে। তাঁর ব্যাটিংয়ের সময় দর্শকেরা ‘‘কেকেআর... কেকেআর...’’ ধ্বনিও তোলেন। নাইট জার্সিতে ইডেনকে একাধিক আনন্দের মুহূর্ত দিয়েছেন শুভমন। তাঁকে গুজরাতের জার্সিতে দেখতে শহরের ক্রিকেটপ্রেমীদের কিছুটা খারাপ লাগতেই পারে। নাইট শিবির তাঁকে ছেড়ে দেওয়ায় কেকেআর সমর্থকদের অনেকেই আশ্চর্য হয়েছিলেন। কিন্তু শুভমন ইডেনকে ভোলেননি। মাঠে নামার সময় গ্যালারির উদ্দেশ্যে হাত নেড়ে তাঁর ইঙ্গিত, এই শহর এখনও তাঁর কাছে প্রিয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন