ভরা গ্যালারি স্বস্তি দিলেও বেহাল নাইটে অস্বস্তি বাদশার

‘ম্যাচটা তো দিদি বনাম মোদী’! রবিবার সন্ধ্যায় ইডেনে অনেককে এই কথা বলতে বলতে ঢুকতে দেখা গেল। তাঁরা বেরোতে বেরোতে কী বললেন, তা আর শোনা হল না ঠিকই। তবে রবিবাসরীয় ইডেন গ্যালারির হাজার পঞ্চাশ ভরিয়ে তুলে সমর্থকেরা শাহরুখ খানকে স্বস্তি এনে দিলেও তাঁদের মুখে হাসি ফোটাতে পারলেন না বাদশা ও তাঁর প্রাণের কেকেআর। ইডেন ভরলে নাচবেন বলে গিয়েছিলেন শাহরুখ আগের ম্যাচ দেখতে এসে। ইডেন ভরলেও কেকেআরের হারে টিম মালিকের নাচও দেখা হল না দর্শকদের।

Advertisement

রাজীব ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৬ ০২:৫৯
Share:

সান্ত্বনা। বর্তমান নাইটের সঙ্গে শাহরুখ। ছবি: বিসিসিআই

‘ম্যাচটা তো দিদি বনাম মোদী’!

Advertisement

রবিবার সন্ধ্যায় ইডেনে অনেককে এই কথা বলতে বলতে ঢুকতে দেখা গেল। তাঁরা বেরোতে বেরোতে কী বললেন, তা আর শোনা হল না ঠিকই। তবে রবিবাসরীয় ইডেন গ্যালারির হাজার পঞ্চাশ ভরিয়ে তুলে সমর্থকেরা শাহরুখ খানকে স্বস্তি এনে দিলেও তাঁদের মুখে হাসি ফোটাতে পারলেন না বাদশা ও তাঁর প্রাণের কেকেআর। ইডেন ভরলে নাচবেন বলে গিয়েছিলেন শাহরুখ আগের ম্যাচ দেখতে এসে। ইডেন ভরলেও কেকেআরের হারে টিম মালিকের নাচও দেখা হল না দর্শকদের।

উল্টে শাহরুখ ইডেনে ঢুকে গ্যালারি থেকে হাত-টাত নেড়ে সেই যে কেকেআর বক্সে ঢুকে বসে পড়লেন, একেবারে ম্যাচের পর তাঁকে দেখা গেল মাঠে। সাদা কেকেআর টি-শার্টটা ভিজে সপসপে। তবু গলায় নীল স্কার্ফ। সারা ম্যাচে তাঁকে গ্যালারিতে দেখাই যায়নি কেন? কলকাতার অতি আর্দ্র গরমে কাবু শাহরুখ। তাই শীততাপ নিয়ন্ত্রিত কেকেআর বক্সের ভিতরেই থাকলেন প্রায় সর্বক্ষণ।

Advertisement

একই দিনে শহরে শাহেনশাহ। বাদশাহ। মহারাজ। তিন মহাতারা এক জায়গায় চলে এলে চিত্রসাংবাদিকদের কাছে এর চেয়ে ভাল ছবি আর কী হতে পারত? কিন্তু সে আর হল কই! শোনা গেল, সিএবি প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় নাকি চেষ্টা করেছিলেন, বিগ বি-কে কিছুক্ষণের জন্য হলেও এ দিন ইডেনে আনার। অমিতাভ বচ্চন তো আবার গুজরাত সরকারের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাস্যাডর-ও। গুজরাত লায়ন্স খেলছে যেখানে, সেই ইডেনে কি তিনি রায়নাদের উৎসাহ জোগাতে আসবেন না? সৌরভের এক ফোনে তো ভারত-পাক বিশ্বকাপ ম্যাচের আগে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে চলে এসেছিলেন ইডেনে। কিন্তু রবিবার শহরে জয়া বচ্চন-সহ এক অলঙ্কার বিপণি সংস্থার প্রচারে এসে বিস্তর ধকল যাওয়ায় এ বার আর রাজি হননি অমিতাভ। হলে কী জমজমাট ব্যাপারটাই না হত! অন্তত ইডেনে কেকেআরের হারের পরে ভাল রকমের প্রলেপ দেওয়া যেত নাইট সমর্থকদের ক্ষতে।

শাহরুখ মাঠে ঢোকার পরেই ইউসুফ পাঠান ও সাকিব আল হাসানের ব্যাটে বিস্ফোরণ শুরু হলেও এক বারের জন্যও ব্যালকনিতে এসে সেই চেনা ভঙ্গি দেখালেন না তাঁদের টিম মালিক। এক নাইট কর্তা জানালেন, কলকাতার প্রচণ্ড আর্দ্র গরমে নাকি তিনি অতিষ্ঠ। তবে সত্যিই এ দিন সন্ধের পরেও শহরের আর্দ্রতা ছিল আটাত্তর শতাংশ। আগের ম্যাচেই পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে পোডিয়ামে দাঁড়িয়ে এত ঘেমে গিয়েছিলেন যে, অনুষ্ঠান শুরুর আগেই পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আন্দ্রে রাসেলের তোয়ালে কেড়ে মুখ মুছেছিলেন। এ দিন তো তার উপর আবার সকালেই এক বাণিজ্যিক সংস্থার প্রচারে চেন্নাই গিয়েছিলেন। সেখান থেকেই সটান কলকাতায় আসেন।


অভিনন্দন। প্রাক্তন নাইটের সঙ্গে শাহরুখ। ছবি: টুইটার

দল হতাশ করলেও ইডেনের গ্যালারি আগের দিনের মতো শাহরুখকে হতাশ করেনি। শহরের বিরক্তিকর গরমে হাঁসফাঁস করলেও এ দিন ম্যাচের বিরতিতে সিএবি সূত্রে জানা গেল, গ্যালারির দর্শক সংখ্যা ৪৭,১৬৩। যে সংখ্যাটা ক্লাব হাউসের দর্শক বাদ দিয়ে। জানা গেল, এ দিন কেকেআর কর্তাদের কাছ থেকে শুনে বাজিগর নাকি আশ্বস্ত হয়েছেন, পরের দু’ম্যাচে টিকিটের চাহিদা বেশ ভালই। সিএবি-র এক শীর্ষকর্তার দাবি, দুটো কেন, পরের তিন ম্যাচেই মাঠ ভরে যাবে। হয়তো সে জন্যই গভীর রাতে বাদশা টুইটারে লিখলেন, ‘নাইটদের জন্য একটা খারাপ রাত গেল। তবে একটা টিম কিন্তু হার-জিতের সীমার বাইরেও একজোট থাকে।’

আর শাহরুখের নাইটরা? আগের দিন তাঁরা নাকি ইডেনের সবুজ উইকেট নিয়ে বিরক্ত ছিলেন। কিন্তু এ দিন আন্দ্রে রাসেল বলে দিলেন, “এটা তো ১৮০ তোলার উইকেট। পরের ম্যাচে এ রকম রানই তুলতে হবে।” সাংবাদিক সম্মেলনে এসে পীযূষ চাওলাও বলে গেলেন, “উইকেট ভালই ছিল। তবে ফ্রেশ উইকেট লাগছিল। ওদের বোলাররা এই সুবিধেটা কাজে লাগাল।” গৌতম গম্ভীরও স্বীকার করলেন, “আরও বুদ্ধি করে ব্যাটিং করা উচিত ছিল আমাদের। শুরুর দিকে পরপর উইকেট পড়ে যাওয়াতেই গোলমাল হয়ে গেল।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন