সাংবাদিক সম্মেলনে এটিকের দেবজিৎ মজুমদার ও জোর্দি ফিগুয়েরা মন্তেল। —নিজস্ব চিত্র।
যে দলের হয়ে সাফল্যের শিখরে ওঠা সেই দল ছেড়ে এই মুহূর্তে বাংলার সেরা গোলকিপার যোগ দিয়েছেন এটিকেতে। গতবারও ছিলেন। কিন্তু আই লিগে ফিরে গিয়েছিলেন মোহনবাগানে। এ বার সেই সুযোগ নেই। যাঁরা আইএসএল-এ খেলবেন তাঁদের খেলা হবে না আই লিগে। কারণ দুই লিগই চলবে পাশাপাশি। যে কারণে মোহনবাগান ছাড়তে বাধ্যই হয়েছেন গোলকিপার দেবজিৎ মজুমদার। সেই সময় হতাশ সমর্থকদের ক্ষোভের শিকারও হতে হয়েছিল দেবজিতকে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যদিও সেই চেনা যুবভারতীতে এটিকের হয়ে আবারও নামবেন দেবজিৎ। তাঁর বিশ্বাস সমর্থকরা একই ভাবে পাশে থাকবেন এই বাঙালি গোলকিপারের। শুক্রবার টিম হোটেলে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন দেবজিৎ মজুমদার ও তাঁর সতীর্থ পর্তুগালের ডিফেন্ডার জোর্দি ফিগুয়েরা মন্তেল।
আরও পড়ুন
আইএসএল খেললেও রবিনের মন আই লিগেই
জোর্দি তো এই প্রথম কলকাতায়। পরিচিতদের থেকে শুনেই খেলতে এসেছেন ভারতে। পর্তুগালের সঙ্গে খুব একটা পার্থক্যই নাকি খুঁজে পাননি। যদিও হয়েছে মাত্র একটাই ম্যাচ। হোটেলের ঘরে বসে সব সময়ই অবশ্য চোখ রেখেছেন টিভিতে। রবিবারের প্রতিপক্ষ পুণে সিটি এফসি। দিল্লি বনাম পুণের খেলা দেখার পর কিন্তু মন্তেল মজে দিল্লিতেই। বলছিলেন, ‘‘দিল্লি কিন্তু খুব ভাল দল। ওরা সব ডিপার্টমেন্টেই সেরাটা দিয়েছে।’’ বার বারই মন্তেলের মুখে ঘুরে ফিরে এল দিল্লি ডায়নামোসের কথা। যদিও প্রথম ম্যাচে দল গোল করতে না পারলেও দলের খেলায় আত্মবিশ্বাসী এই ডিফেন্ডার। বলছিলেন, ‘‘পুরো ম্যাচে আমরাই খেলেছি। বল পজেশনেও আমরা এগিয়ে ছিলাম। ওপেন করেছি একাধিক। পোস্টেও লেগেছে। শুধু গোলটাই করতে পারিনি।’’
দেবজিৎ অবশ্য গোলের নীচে একইভাবে আত্মবিশ্বাসী। জানেন, তাঁকে ঘিরে অনেক প্রত্যাশা এই শহরের। সে জার্সির রঙ যাই হোক না কেন। বলছিলেন, ‘‘এমনিতে কোনও চাপ নেই কিন্তু একটা চাপ সব সময়ই সবার উপর থাকে সেটা হল নিজের সেরাটা দেওয়ার। আমি সেই চেষ্টাই করে যাচ্ছি।’’ যখন সামনে দেবজিৎ, ক্লাবের হয়ে দুরন্ত পারফরমেন্স তখন জাতীয় দলে সুযোগ না পাওয়ার প্রসঙ্গ আসবে না তা কি হয়? যতই ভাল খেলুন না কেন জাতীয় কোচ কনস্টানটাইনের না পসন্দ তিনি। তার পরও আত্মবিশ্বাসী এই বঙ্গ সন্তান। বলেন, ‘‘আমি জানি নিজের খেলাটা খেলে যেতে পারলে আমি একদিন জাতীয় দলে সুযোগ পাবই। আর ওটাই আমার প্রাথমিক লক্ষ্য। বিদেশে খেলতে যাওয়া তার অনেক পরে।’’ পাশে থাকা মন্তেল অবশ্য সতীর্থর কাঁধে হাত দিয়ে সেই আশ্বাসই দিয়ে গেলেন। বললেন, ‘‘ও দারুণ প্লেয়ার, খুব ভাল মানুষও। আমি ওর জন্য বিদেশে খেলার ব্যবস্থা করার চেষ্টা করব।’’ দেবজিৎও ধন্যবাদ জানাতে ভুললেন না।
আরও পড়ুন
লড়াই জামশেদপুর-কেরলের, নজর রাখুন এই ফুটবলারদের দিকে
আই লিগ না খেলতে পারলেও রবিন সিংহর মতো তিনিও আই লিগ দেখতে চান। মোহনবাগানকে শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন আই লিগের জন্য। মাঠে হয়তো যেতে পারবেন না কিন্তু সুযোগ পেলেই টিভিতে চোখ রাখবেন। ‘‘ওখানে তো সবাই আমার বন্ধু। ওদের খেলা অবশ্যই দেখব।’’ কিন্তু সব কিছুকে ছাপিয়ে যাচ্ছে এটিকের জন্য দেবজিতের লড়ে যাওয়ার মানসিকতা। গত মরসুমের প্রায় কেউ নেই এই দলে। তাঁকে রেখে দিয়েছে দল। কৃতজ্ঞতা তো আছেই। সঙ্গে রয়েছে, তাঁর মতে দেশের সর্বোচ্চ লিগে খেলা, উচ্চ মানের কোচ, প্লেয়ারদের সঙ্গে খেলা। নিজেকে আরও ভাল মতো তৈরি করা। বিদেশি গোলকিপারকে বসিয়ে প্রথম দলে জায়গা করে নেওয়ার দায়িত্বটাও তো অনেকবেশি। সেটা ধরে রাখতে চান দেবজিৎ মজুমদার।