ভারতীয় ক্রিকেটের ‘মিয়াঁ’র লেগেছিল ন’বছর। একশো চুয়াত্তরটা ম্যাচ।
এমএসডির লাগল দুটো বছর কম। একশো একষট্টিটা ম্যাচ।
মহম্মদ আজহারউদ্দিনকে শেষ পর্যন্ত ছুঁয়ে ফেললেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। দেশকে নব্বইটা ওয়ান ডে জেতানোর রেকর্ডে। আজহারের যে রেকর্ড আগে ছিল, শনিবারের পর ধোনিরও সেটা হয়ে গেল। ট্রেন্টব্রিজে ইংল্যান্ডকে হারানোর সঙ্গে সঙ্গে আজহারের রেকর্ড ধরে ফেললেন ধোনি। শুধু তাই নয়, ভারতকে একশোটা ওয়ান ডে জেতানোর নজিরবিহীন রেকর্ডও তাঁর ধরাছোঁয়ার মধ্যে চলে এল।
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধেও ক্যাপ্টেন হিসেবে ধোনির ওয়ান ডে রেকর্ড এখন ঈর্ষণীয়। চব্বিশটা ম্যাচের মধ্যে ধোনি ষোলোটাতেই জিতেছেন। হার পাঁচটায়। বাকি টাই অথবা পরিত্যক্ত। শনিবার ধোনি উইকেটকিপার হিসেবেও একটা রেকর্ড করে ফেললেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি স্টাম্পিংও (১৩১) এখন তাঁর নামের পাশে। কুমার সঙ্গকারার দু’টো কম। আর স্টাম্পিংয়ের রেকর্ড ছোঁয়ার ক্ষেত্রে সঙ্গাকারার চেয়ে ম্যাচও কম নিয়েছেন ধোনি। সঙ্গকারার ৫৬৩ ম্যাচ লেগেছে ১২৯ স্টাম্পিং করতে। ধোনির লেগেছে ৩৮১ ম্যাচ।
এতগুলো রেকর্ড করেও কিন্তু নটিংহ্যামে ধোনির মুখে রেকর্ড নয়, টিমের প্রশংসাই শোনা গিয়েছে। স্পিনারদের। অম্বাতি রায়ডুর। “স্পিনাররাই তো আমাদের সমস্ত কাজ করে দিল। অশ্বিন আর জাডেজা সত্যিই খুব ভাল করেছে। রায়নার স্পেলটার কথাও বলতে হবে,” ম্যাচ জিতে উঠে বলেছেন ধোনি। ধোনি আরও বলেছেন যে, তিনি ভাবতেও পারেননি যে ট্রেন্টব্রিজের উইকেটে এত স্পিন করবে। “আমার ধারণা ছিল না যে বল এত স্পিন করতে পারে। বরং সন্দেহ ছিল বোলাররা পিচ থেকে কিছু পাবে কি না। যখন পিচ দেখেছিলাম সবুজ ব্যাপার ছিল একটা। কিন্তু মিনিট কুড়ি পর বোধহয় শুকিয়ে গিয়েছিল, স্লো-ও হয়ে গিয়েছিল,” বলে দিয়েছেন ধোনি। পাশাপাশি রায়ডু এবং রায়না নিয়ে ধোনির মন্তব্য, “রায়না ভাল বল করেছে। প্রথম ব্রেক থ্রু-টাও ও দিয়েছে আমাদের। রায়ডুও উইকেট পেয়েছে একটা। দু’জন মিলে পরে রান তাড়া করার কাজটাও আমাদের হয়ে করে দিয়েছে।” এমনকী রায়ডুকে যে তিনি ব্যাটিং লাইন আপের চার নম্বরে ভাবছেন, সেই ইঙ্গিতও দিয়ে রেখেছেন ভারত অধিনায়ক।
বিরাট কোহলির উপরও আস্থা হারাচ্ছেন না ধোনি। তাঁর মনে হচ্ছে, বিরাটের রান পাওয়াটা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। বলছেন, “বিরাটের একটা ব্যাড প্যাচ চলছে। কিন্তু ও আগ্রাসী ক্রিকেটার। লড়াকু একটা ব্যাপার আছে ওর মধ্যে। বিরাট ঠিকঠাকই টাইম করছে। শুধু বড় স্কোরে সেগুলো পাল্টে যাচ্ছে না, এটাই যা।”
ইংল্যান্ড অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুক আবার মেনে নিচ্ছেন যে, স্পিন সামলাতে না পেরেই টিম এ ভাবে বিপর্যয়ে পড়ল। “আমরা আবারও একটা ভাল শুরু করে পারলাম না। ভারতের স্পিনারদের ঠিকঠাক খেলতে পারছি না। ইনিংসের মাঝ পর্যায়েও আমাদের ভাল কিছু হচ্ছে না,” বলেছেন কুক। আর ইংরেজ ব্যাটিং লাইন আপকে শনিবার যিনি একাই শেষ করে দিলেন, সেই রবিচন্দ্রন অশ্বিন বলে দিচ্ছেন নিজের বোলিং নিয়ে খাটাখাটনিই তাঁকে এমন পারফরম্যান্স দিয়েছে। “মনে হয়েছিল উইকেটে বাউন্স থাকবে। বল করতে সুবিধেই হচ্ছিল। আমার আর জাড্ডুর (জাডেজা) রেকর্ড ভাল ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে। যেটা খুব সাহায্য করেছে।”