আটলেটিকোর ম্যাচ দেখে আপ্লুত অন্য আটলেটিকো

বক্স থেকেই কোচিং নির্বাসিত সিমিওনের

শুরুতে যেতে চাননি অনেকেই। চেয়েছিলেন হোটেলে বিশ্রাম নিতে। কিন্তু লা লিগায় আটলেটিকোর ঘরের মাঠ ভিসেন্তে কালদেরনে সেল্টা ভিগোর বিরুদ্ধে দিয়োগো গডিন, দিয়েগো সিমিওনেদের দেখে আসার প্রায় চব্বিশ ঘণ্টা পর রবিবারও ঘোর কাটছে না আটলেটিকো দে কলকাতার রাকেশ মাসি, অর্ণব মণ্ডলদের।

Advertisement

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:১৯
Share:

আটলেটিকো-সেল্টা ভিগো ম্যাচের বিরতিতে মাঠে কলকাতার ফুটবলাররা। নীচে ট্রফিরুমে।

শুরুতে যেতে চাননি অনেকেই। চেয়েছিলেন হোটেলে বিশ্রাম নিতে। কিন্তু লা লিগায় আটলেটিকোর ঘরের মাঠ ভিসেন্তে কালদেরনে সেল্টা ভিগোর বিরুদ্ধে দিয়োগো গডিন, দিয়েগো সিমিওনেদের দেখে আসার প্রায় চব্বিশ ঘণ্টা পর রবিবারও ঘোর কাটছে না আটলেটিকো দে কলকাতার রাকেশ মাসি, অর্ণব মণ্ডলদের।

Advertisement

রবিবার বিকেলে মাদ্রিদ সেন্ট্রালের শপিং মলে ঘোরার ফাঁকে আটলেটিকো কলকাতার সহকারী কোচ কাম ম্যানেজার রজত ঘোষদস্তিদার ফোনে আনন্দবাজারকে বললেন, “একদম মোহিত হয়ে যাওয়ার মতো ব্যাপার। চোখের সামনে দিয়ে টানেলে গডিন, মিরান্দা, হুয়ানফ্রানরা গটগট করে হেঁটে চলে গেল! যাদের খেলা কয়েক মাস আগেও শুধু টিভিতেই দেখেছি!” সঙ্গে এটাও বললেন, “সাসপেনশনে থাকায় আমাদের খুব কাছের বক্সেই ছিলেন সিমিওনে। সেখান থেকেই ‘হেড সেটে’ সারাক্ষণ নির্দেশ দিয়ে গেলেন রিজার্ভ বেঞ্চে বসা টিম ম্যানেজারকে। গডিন প্রথমার্ধের শেষ দিকে ২-১ এগিয়ে দিতে কী উল্লাস! তবে ২-২ হতেই আবার মুখ গম্ভীর সিমিওনের।”

আর ফুটবলাররা? লা লিগার ম্যাচ দেখার পাশাপাশি মাঠে নেমে ১৪ নম্বর জার্সি বদল এবং তার পর ট্রফি রুমে গিয়ে আটলেটিকো মাদ্রিদ প্রেসিডেন্ট এনরিকে সেরেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তাঁদের কী অনুভূতি? রাকেশ মাসি বলছেন, “কোমরে চোট থাকায় প্রথমে যেতে চাইছিলাম না। কিন্তু মাঠ থেকে ফিরে এসে যন্ত্রণা ভুলে গিয়েছি!” আর লেফট ব্যাক এন মোহনরাজ বলছেন, “মনে হল একটা মায়াবী জগৎ থেকে ঘুরে এলাম। মাঠে পা দেওয়ার আগেও বুঝতে পারিনি কী হতে চলেছে। সত্যিই একটা ঘোরের মধ্যে ছিলাম!” বঙ্গসন্তান কিংশুক-অর্ণবরাও আপ্লুত। দলের দ্রুততম উইঙ্গার চেক ফুটবলার জেকব পোদানি আবার খুশি, দেশে বসে তাঁর বান্ধবী তাঁকে টিভিতে দেখতে পেয়েছেন বলে। শনিবার স্থানীয় সময় রাত সাড়ে এগারোটায় হোটেলে ফিরে চেক প্রজাতন্ত্র থেকে বান্ধবীর ফোন পেয়ে খুশিতে পোদানি সোজা চলে যান ম্যানেজারের ঘরে। ধন্যবাদ জানিয়ে আসেন টিম ম্যানেজমেন্টকে। সহকারী কোচ হোসে ব্যারেটোও উচ্ছ্বসিত, স্বপ্নের ফুটবলারদের কাছ থেকে ছবি তুলতে পেরে।

Advertisement

টিম সূত্রের খবর, দলের স্প্যানিশ ফুটবলাররা বাড়ি গিয়েছিলেন বলে শনিবার প্র্যাকটিসে ছুটি দেওয়া হয়েছিল। এর আগে বেশ কয়েক দিন ধরেই আটলেটিকো মাদ্রিদের ঘরের মাঠে ম্যাচ দেখতে গিয়ে দু’দলের মধ্যে সৌজন্য বিনিময়ের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছিলেন দুই আটলেটিকোর কর্তারা। শুক্রবার রাতে সবুজ-সঙ্কেত পান দলের ম্যানেজার। শনিবার ব্রেকফাস্ট টেবিলে খবরটা সবাইকে দেন। প্রথম দিকে কেউ কেউ গররাজি হলেও পরে সবাই টিম বাসে ওঠেন। স্টেডিয়ামের ভিভিআইপি জোনে লাল-সাদা জার্সির ঢলের মধ্যে বাস থেকে নামার পর সকলেই বুঝতে পারেন, আজকের অভিজ্ঞতাটা একদম অন্য রকম হতে চলেছে। সঞ্জু, কিংশুকদের বাস দাঁড়িয়েছিল মাদ্রিদের কোচ সিমিওনের পোর্শে গাড়ির সামনে। ক্লাব কর্মীদের কাছ থেকে গাড়ির মালিকের নাম জানতে পেরেই কলকাতার দলের অনেকে সেটা ভাল করে দেখতে দাঁড়িয়ে যান। এর পর ভিভিআইপি লাউঞ্জে প্রথমার্ধ দেখার পর গোটা দলকে নিয়ে বিরতিতে নিয়ে যাওয়া হয় মাঠে। যেখানে দর্শকদের তুমুল চিৎকারের মাঝে পরিচয় করানো হয় কলকাতার দলটির সদস্যদের। কলকাতা টিমের কর্তাদের সঙ্গে মাদ্রিদের প্রেসিডেন্ট এনরিকে সেরেসের জার্সি বিনিময়ের পর সোজা আটলেটিকোর ট্রফি রুম। যেখানে কিংশুকদের শুভেচ্ছা জানিয়ে সেরেস স্প্যানিশে বলেন, “বেঙ্গা, বেঙ্গা, বেঙ্গা ভামোস কলকাতা।” বাংলায় যার অর্থ, “এগিয়ে চলো কলকাতা।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন