সেরা ভল্টের পর বাইলসের বাহবাও পেলেন বাঙালি

তখনও জানেন না কোয়ালিফাই করতে পারবেন কি না। মোট ৯৩ জন কোয়ালিফায়ার নামবেন। তখনও ৫৬ জন জিমন্যাস্ট শেষ করেছেন। আমেরিকা, মেক্সিকোর মতো জিমন্যাস্টিক্সে শক্তিশালী দেশের কোয়ালিফায়ারে নামা তখনও বাকি। তবু চোখমুখে কোনও হতাশা নেই তাঁর। বরং নিজের সেরা ইভেন্ট ভল্টে পারফরম্যান্সের পর কিছুটা সন্তুষ্টি ঘিরে রয়েছে বলেই মনে হল তাঁকে। দীপা কর্মকারকে।

Advertisement

রতন চক্রবর্তী

রিও দে জেনেইরো শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৬ ০৪:১৭
Share:

তখনও জানেন না কোয়ালিফাই করতে পারবেন কি না। মোট ৯৩ জন কোয়ালিফায়ার নামবেন। তখনও ৫৬ জন জিমন্যাস্ট শেষ করেছেন। আমেরিকা, মেক্সিকোর মতো জিমন্যাস্টিক্সে শক্তিশালী দেশের কোয়ালিফায়ারে নামা তখনও বাকি। তবু চোখমুখে কোনও হতাশা নেই তাঁর। বরং নিজের সেরা ইভেন্ট ভল্টে পারফরম্যান্সের পর কিছুটা সন্তুষ্টি ঘিরে রয়েছে বলেই মনে হল তাঁকে। দীপা কর্মকারকে।

Advertisement

ইভেন্ট শেষ করে ওঠার পরই অলিম্পিক্সে নামা প্রথম ভারতীয় মেয়ে জিমন্যাস্টকে মিডিয়া তখন ছেঁকে ধরেছে। ভল্ট থেকে মোট ৯৩ জনের মধ্যে আট জন যাবেন ফাইনালে। সেই তালিকায় থাকবেন কি না কোয়ালিফায়ার শেষ না হলে বলা যাবে না। তার মধ্যেই দীপা জানিয়ে দিলেন, ‘‘জীবনের সেরা পয়েন্ট করেছি। প্রদুনোভা ভল্টিংয়েও বেস্ট করেছি। এই স্টেডিয়ামেই অলিম্পিক্সে কোয়ালিফাই করেছিলাম। ১৪.৮৫০ পেয়েছি এ বার। ফাইনালে কোয়ালিফাই করার ব্যাপারে আমি আশাবাদী।’’

শুধু ভল্টে দারুণ পারফর্ম করার সন্তুষ্টিই নয়, সঙ্গে আরও একটা ভাললাগাও রয়েছে দীপার। ভল্টের পরই দশ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন মার্কিন জিমন্যাস্ট সিমোন বাইলসের বাহবা পেয়েছেন। দীপা বলছিলেন, ‘‘প্রদুনোভা ভল্টের পরই সিমোন এসে জড়িয়ে ধরেছিল।’’ তবে প্রদুনোভার মতো ফ্লোর এক্সারসাইজে সে রকম পারফর্ম করতে পারেননি দীপা। তার কারণ হিসেবে বললেন, তখন স্টেডিয়ামে এত চিৎকার হচ্ছিল মিউজিক শুনতে সমস্যা হচ্ছিল। যে মিউজিকের সুরে তাল মেলাতে হত দীপাকে। আর অলিম্পিক্সে নামার অভি়জ্ঞতা কেমন লাগল? বুকের উপর ‘ইন্ডিয়া’ লেখা জার্সিতে নামার উত্তেজনা যে কী রকম দীপার কথাতেই স্পষ্ট, ‘‘যখন এই স্টেডিয়ামে কোয়ালিফাই করেছিলাম দশটা লোকও ছিল না দর্শকাসনে। এখন এত লোক। এত উত্তেজনা। এ অনুভূতির কোনও তুলনা হয় না।’’

Advertisement

দীপার মোট পয়েন্ট ৫১.৬৬৫। কোয়ালিফাইং রাউন্ড শেষ হতে ভারতীয় সময়ে ভোর পাঁচটা বেজে যাবে। তাই রাতটা আর ঘুম হবে না। হওয়ার কথাও তো ছিল না। দীপা কর্মকারের দু’চোখে যে এখন অলিম্পিক্স পদক জয়ের স্বপ্ন জ্বলজ্বল করছে।

• দীপিকারা ব্যর্থ শেষ আটে
নজির গড়েও শেষ রক্ষা হল না। রাশিয়ার কাছে প্রবল লড়াই করেও মেয়েদের রিকার্ভ টিম তিরন্দাজির কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে ছিটকে গেল ভারত। প্রি-কোয়ার্টারে কলম্বিয়াকে ৫-৩ হারিয়েই দীপিকা কুমারী, বোম্বাইলা দেবী ও লক্ষ্মীরানি মাঝি নজির গড়েছিলেন। এই প্রথম অলিম্পিক্সে দ্বিতীয় রাউন্ডের ওঠার। চার বছর আগে লন্ডন অলিম্পিক্সে দীপিকারা প্রথম রাউন্ডেই ডেনমার্কের কাছে হেরে ছিটকে গিয়েছিলেন। ব্যক্তিগত ইভেন্টে নামার আগের দিন টিম ইভেন্টে আরও আত্মবিশ্বাস পেতে পারতেন দীপিকা কুমারীরা এ দিন রাশিয়াকে হারাতে পারলে। র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা রাশিয়ার সঙ্গে লড়াই শুট অফেও যায়। কিন্তু চূড়ান্ত যুদ্ধে চাপ রাখতে পারলেন না দীপিকারা। হারলেন ৪-৫-এ।

• হতাশ করলেন হিনা
জিতু রাইয়ের পর এ দিন একই ইভেন্ট ১০ মিটার এয়ার পিস্তলে ভারতের মেয়ে শুটার হিনা সিধু হতাশ করলেন। কোয়ালিফিকেশন রাউন্ডেই ছিটকে যান হিনা। ৪৪ শ্যুটারের মধ্যে ১৪ নম্বরে শেষ করেন তিনি। ২০১০ গুয়াংঝু এশিয়ান গেমসে রুপোজয়ী সব মিলিয়ে পান ৩৮০। তবে এখানেই হিনার আশা শেষ হয়ে যাচ্ছে না। এখনও আরও একটি ইভেন্ট বাকি রয়েছে ২৬ বছরের শ্যুটারের। ২৫ মিটার পিস্তলের। মঙ্গলবার যে চ্যালেঞ্জে নামবেন তিনি। হিনা অবশ্য এ দিন ছিটকে গিয়েও হার মানছেন না। তাঁর টুইট, ‘‘যা হয়েছে তা হয়েছে। এ বার টার্গেট পরের ইভেন্ট। যা ৯ তারিখে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন