অলিম্পিক্সের স্বপ্ন কার্যত শেষ দীপার

গত অক্টোবরে জার্মানিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে চোটের জন্য নামতে পারেননি রিয়ো অলিম্পিক্সের চতুর্থ স্থান পেয়ে সাড়া ফেলে দেওয়া জিমন্যাস্ট।

Advertisement

রতন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:০২
Share:

আশঙ্কা: দীপার ভল্ট হয়তো দেখা যাবে না টোকিয়োয়। ফাইল চিত্র

দীপা কর্মকারের টোকিয়ো অলিম্পিক্সে নামার সম্ভাবনা কার্যত শেষ হয়ে গেল। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহের আগে তাঁকে অনুশীলনে নামতে নিষেধ করে দিলেন ডাক্তাররা।

Advertisement

গত অক্টোবরে জার্মানিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে চোটের জন্য নামতে পারেননি রিয়ো অলিম্পিক্সের চতুর্থ স্থান পেয়ে সাড়া ফেলে দেওয়া জিমন্যাস্ট। টোকিয়োর যোগ্যতামান পাওয়া জন্য যেখানে পদক পাওয়া ছিল জরুরি। স্টুটগার্টে নামতে না পারলেও দীপা আশায় ছিলেন নতুন বছরে যে তিনটি বিশ্বকাপ আছে, তাতে পদক জিতে টোকিয়োর ছাড়পত্র জোগাড়ের শেষ চেষ্টা করবেন।

কিন্তু শুক্রবার ফের ধাক্কা খেলেন বিশ্বেশ্বর নন্দীর ছাত্রী। মুম্বইয়ের ডাক্তার ও ফিজিয়োরা তাঁকে এখন অনুশীলনে নামার অনুমতিই দিলেন না। উল্টে চোট সারানোর জন্য আরও পঞ্চাশ দিন রি-হ্যাব করার পরামর্শ দিলেন দেশের সর্বকালের অন্যতম সেরা জিমন্যাস্টকে। ফোনে দীপার কোচ বললেন, ‘‘দীপা ফ্লোরে নামার জন্য জোরাজুরি করলেও ডাক্তাররা যত দিন পর্যন্ত ছাড়পত্র না দেবেন, তত দিন ওকে নামানোর প্রশ্নই নেই। আমাকে ওর জিমন্যাস্ট-পরবর্তী জীবনের কথাও ভাবতে হচ্ছে। এমন কোনও ঝুঁকি নিতে চাই না যাতে ও সারাজীবনের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ডাক্তাররা আরও ৫০ দিন রি-হ্যাব করতে বলেছেন।’’ বিশ্বেশ্বরবাবুর কথাতেই স্পষ্ট, ফেব্রুয়ারির শেষে হয়তো অনুশীলনে পুরোপুরি নামতে পারবেন না আগরতলার মেয়ে। এর পরে হাতে থাকবে দুটি বিশ্বকাপ। যা পরিস্থিতি, তাতে টোকিয়োতে যোগ্যতা পাওয়ার জন্য ওই দুটি বিশ্বকাপ থেকে সোনা অথবা রুপো পেতেই হবে দীপাকে। যা শুধু কঠিন নয়, অসম্ভবও মনে করছেন জিমন্যাস্টিক্স মহল। তাঁদের বক্তব্য, দীপার ‘ব্র্যান্ড’ ছিল ‘প্রোদুনোভা’ ভল্ট। সেটা করেই রিয়োতে বেশি পয়েন্ট তুলেছিলেন তিনি। দীপার যা চোট, তাতে ‘প্রোদুনোভা’ করা আর সম্ভব নয়। তা হলে বিশ্বকাপে পদক পাবে কী করে? বিশ্বেশ্বরবাবু নিজেও সেই যুক্তি উড়িয়ে দিচ্ছেন না। বলে দিলেন, ‘‘ফেব্রুয়ারির শেষে অনুশীলন শুরু করলেও নিজের জায়গায় ফিরতে আরও দু’মাস লাগবে। আর দীপা নামলেই একটা প্রত্যাশা তৈরি হয়। সবাই ধরে নেয় পদক পাবেই। ফলে যতক্ষণ না ও পুরো সুস্থ হবে, তত দিন কোনও প্রতিযোগিতায় নামাব না।’’ তা হলে কি টোকিয়োর আশা ছেড়ে দিলেন? বিশ্বেশ্বর বললেন, ‘‘২০২০-র অলিম্পিক্সে যোগ্যতা পাওয়ার জন্য যে যোগ্যতামান রাখা হয়েছে, তা পাওয়া এখন কঠিন। তবুও দীপা যা জেদি মেয়ে— ও একটা শেষ চেষ্টা করবেই। যদি না হয়, সে ক্ষেত্রে ২০২৪ প্যারিস অলিম্পিক্সের জন্য তৈরি হবে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: এখনই জাতীয় দলে নেওয়া উচিত! কার সম্পর্কে বললেন কিরণ মোরে?

রিয়ো অলিম্পিক্সে ভারতীয় মেয়ে জিমন্যাস্টিক্স ইতিহাসে নিজেকে সেরার আসনে নিয়ে যাওয়ার পরে চোট পেয়ে প্রায় দু’বছর কোনও প্রতিযোগিতায় নামতে পারেননি দীপা। ২০১৮-র তুরস্কে আর্টিস্টিক জিমন্যাস্টিক্সে সোনা জিতেছিলেন তিনি। জার্মানি বিশ্বকাপেও ব্রোঞ্জ জেতেন। তার পর বাকুতে বিশ্বকাপে গিয়ে ফের চোট পান। দোহাতে নামতেই পারেননি। নামতে পারেননি এশিয়ান গেমসেও। গত মার্চ থেকে আর কোনও প্রতিযোগিতায় নামেননি দীপা। কবে ফিরবেন, তা-ও নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না কেউ-ই। ডাক্তারদের কথায় হতাশ হলেও কোচের পাশে দাঁড়িয়ে দীপা বললেন, ‘‘ কোচ এবং ডাক্তাররা যা বলবেন, তা তো মানতে হবেই। তবে আমি সুস্থ হয়ে ফিরবই। আন্তর্জাতিক পদক জেতার জন্য অনুশীলন করে যাব। ফিরে আমাকে পদক জিততে হবেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন