নিউজিল্যান্ডে বিশ্বজয় ছোটদের

ট্রফি জিতে নাচলেন রাহুল স্যার-ও

সাত ওভার বল করে ৩০ রান দিয়ে তুলে নিলেন দু’টি উইকেট। বিশ্ব জয় করে নিউজিল্যান্ড থেকে ফোনে আনন্দবাজার-কে একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন ঈশান পোড়েল।সাত ওভার বল করে ৩০ রান দিয়ে তুলে নিলেন দু’টি উইকেট। বিশ্ব জয় করে নিউজিল্যান্ড থেকে ফোনে আনন্দবাজার-কে একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন ঈশান পোড়েল।

Advertisement

ইন্দ্রজিৎ সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৪:০৮
Share:

হুঙ্কার: ফাইনালেও সফল বাংলার ঈশান। উইকেট নিয়ে হুঙ্কার। ছবি: টুইটার।

প্রশ্ন: প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে চোট নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল। শনিবার তাদের হারিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। অনুভূতিটা ঠিক কী রকম?

Advertisement

ঈশান: এই দিনটা দেখার জন্যই এতদিন সবাই মিলে একসঙ্গে অনুশীলন করেছি। সত্যিই স্বপ্নপূরণ। তবে এখানেই থেমে গেলে চলবে না। এটা সবে শুরু। এখনও অনেক পথ এগিয়ে যেতে হবে।

Advertisement

প্রশ্ন: বিশ্বকাপ কাকে উৎসর্গ করবেন?

ঈশান: প্রথমত আমার মা, বাবা ও পরিবারের সবাই আমার পাশে না থাকলে এই জায়গায় কখনও পৌঁছতে পারতাম না। তার পরেই বলব আমার কোচেদের কথা। বিভাস স্যার, প্রদীপ স্যার আমার জন্য অনেক সময় দিয়েছেন। দলের প্রত্যেক সদস্যকে ধন্যবাদ দিতে চাইব। দলগত চেষ্টাতেই আমরা চ্যাম্পিয়ন হতে পেরেছি। রাহুল স্যারের অবদান সব চেয়ে বেশি।

প্রশ্ন: ফাইনালের আগের রাতটা কী ভাবে কাটল?

ঈশান: রাতটা কাটতেই চাইছিল না। খুব বেশি হলে মাত্র দু’ঘণ্টা ঘুমোতে পেরেছি। তার পরে সারা রাত শুধু জেগে বসেছিলাম। ভাবছিলাম কখন মাঠে গিয়ে প্রথম বলটা করব।

প্রশ্ন: দুশ্চিন্তা হচ্ছিল?

ঈশান: দুশ্চিন্তা নয়। তবে চাপ এবং উত্তেজনা মিশিয়ে একটা অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছিল। রিয়ান পরাগ আমার রুমমেট। কিছুক্ষণ পরে লক্ষ্য করলাম, পরাগেরও ঘুম হচ্ছে না। ভোর বেলা উঠেই জোরে গান চালিয়ে দিয়েছিলাম।

প্রশ্ন: ফাইনালের আগের দিন কোনও বিশেষ পরামর্শ পেয়েছিলেন রাহুল স্যারের থেকে?

ঈশান: বিশ্বকাপ খেলতে আসার আগে থেকে রাহুল স্যার আমাদের একটা কথাই বলতেন যে, যেটা শুরু করেছ সেটা শেষ করে আসতে হবে। ফাইনালের আগের দিন অবশ্য আরও ফুরফুরে মেজাজে দলের প্রত্যেকের সঙ্গে কথা বলছিলেন তিনি। বিশ্বকাপের ফাইনাল হিসেবে এই ম্যাচটি খেলতে বারণ করেছিলেন। বাকি পাঁচটি ম্যাচের মতোই এটিকে দেখতে বলেছিলেন।

প্রশ্ন: বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে কি প্রতিক্রিয়া স্যারের?

ঈশান: চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে একটা টিম হাড্ল হয়েছিল। সেখানে রাহুল স্যার বললেন, ‘তোমাদের প্রচেষ্টার জন্য সফল হয়েছো। তোমরা যদি হাল ছেড়ে দিতে, এই জায়গা থেকে খালি হাতে দেশে ফিরতে হতো। তোমরা সেটা হতে দাওনি। প্রথম দিন থেকে এই স্বপ্ন দেখানোরই চেষ্টা করেছিলাম। আজ তোমাদের জন্য আমি গর্বিত।’ স্যারের কথা শুনে আমরা সবাই খুব আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলাম।

বিশ্বজয়ী: ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে চূর্ণ করে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ভারত। গর্বিত কোচ রাহুল দ্রাবিড়কে নিয়ে গ্রুপ ছবি দলের। ট্রফির সঙ্গে রয়েছে দেশের জাতীয় পতাকাও। ছবি: পিটিআই

প্রশ্ন: কী ভাবে বিজয়োৎসব করবেন?

ঈশান: সেলিব্রেশন ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে রাহুল স্যারকে দেখে আমি বেশ অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। রাহুল স্যারকে এত খুশি আগে কখনও দেখিনি। ড্রেসিংরুমে ফিরে আমাদের সবার সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টার ওপরে নাচ করলেন। আমাদের থেকে কোনও অংশে তাঁর এনার্জি কম ছিল না। আমি, পৃথ্বী, শুভমান নাচ থামাতেই চাইছিলাম না। বিশ্বকাপ জেতার অনুভূতিটা যে এরকম হতে পারে, কল্পনাও করতে পারিনি। তবে আমরা ঠিক করেছি এই রাতটা ঘুমোব না। সবাই মিলে এক সঙ্গে রাত জাগব।

প্রশ্ন: দলের বাকি সদস্যরা কী বলছেন?

ঈশান: সবাই একই রকম খুশি। তবে পৃথ্বী (শ) ও আমি একটা কথা আলোচনা করছিলাম যে, কত তাড়াতাড়ি সব কিছু শেষ হয়ে গেল। এই এক মাস আগে বেঙ্গালুরুতে আবাসিক শিবিরে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলাম। শনিবার কাপ জয়ের সেলিব্রেশন করছি।

প্রশ্ন: যে পোশাক পরে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জিতেছেন, ফাইনালেও কি সেই একই জার্সি পরে নেমেছিলেন?

ঈশান: একটুও বাড়িয়ে বলছি না। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যে জিনিসগুলো করে আমি সফল হয়েছি। ফাইনালের আগেও সেই কাজগুলো করেছি। মাঠে ঢুকে প্রথমে রান-আপ মেপেছি। তার পর একই পোশাক পরে নেমে পড়েছি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন