ইস্টবেঙ্গলও কাত বাতিলের দাপটে

আগের দিন ওডাফা ওকোলি। চব্বিশ ঘণ্টা পরেই রিউজি সুয়োকা। যাঁকেই এ বার দল থেকে ছেঁটেছে কলকাতার দুই প্রধান, সেই ‘দুর্বল’ অঙ্গের সৌজন্যেই আই লিগ জেতার স্বপ্নভঙ্গ হচ্ছে বাগান কিংবা বেঙ্গলের। রবিবার সুয়োকার বাড়ানো দুটো গোলের পাসেই লাল-হলুদ তাঁবুতে আই লিগ ট্রফি ঢোকা কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়াল।

Advertisement

সোহম দে

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০১৫ ০২:০১
Share:

হতাশ এলকো। রবিবার বারাসতে। ছবি: সুদীপ ঘোষ।

ইস্টবেঙ্গল-১ (ইসফাক, হাওকিপ)
পুণে এফসি-২ (ডুডু)

Advertisement


আগের দিন ওডাফা ওকোলি। চব্বিশ ঘণ্টা পরেই রিউজি সুয়োকা।
যাঁকেই এ বার দল থেকে ছেঁটেছে কলকাতার দুই প্রধান, সেই ‘দুর্বল’ অঙ্গের সৌজন্যেই আই লিগ জেতার স্বপ্নভঙ্গ হচ্ছে বাগান কিংবা বেঙ্গলের।
রবিবার সুয়োকার বাড়ানো দুটো গোলের পাসেই লাল-হলুদ তাঁবুতে আই লিগ ট্রফি ঢোকা কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়াল।
মরসুমের মাঝপথে ইস্টবেঙ্গলে কোচ হয়ে এসে এলকো সতৌরি কোনও সময় বলেছেন, হাতে পর্যাপ্ত সময় পাননি। কোনও সময় বলেছেন, প্রথম দলটা কী ঠিক বুঝতে পারছেন না। অজুহাত দিতে দিতে ক্লান্ত হয়ে পড়া সতৌরি এ দিন ম্যাচ শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে স্বীকার করলেন, ‘‘খুব কঠিন হয়ে গেল লিগ জেতা। এখন লক্ষ্য শেষ তিন ম্যাচ জিতে লিগ টেবলে যতটা সম্ভব ভাল জায়গায় থাকা।’’
কিন্তু এলকোর দলের খেলা থেকে জয়ের সেই জেদটাই যে উধাও! ‘গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ’ বললেও ইস্টবেঙ্গল কোচ চারের বদলে দুই বিদেশি র‌্যান্টি-ডুডু নিয়ে প্রথম দল গড়েছিলেন। সুসাক না হয় আনফিট, কিন্তু বার্তোসকেও এমন ম্যাচে ৭৩ মিনিট বেঞ্চে বসিয়ে রাখার মানে কী? একটা সহজ হেড মিস আর একটা বল গোলকিপারের গায়ে মেরে র‌্যান্টিও নিজের চেনা মেজাজে ছিলেন না। ফলে ৪-৫-১ ফর্মেশনে দল সাজিয়ে ৬২ শতাংশ বল পজেশন রেখেও বিশেষ লাভ হয়নি।

পুণের আক্রমণের দায়িত্ব নিয়েছিলেন ইস্টবেঙ্গল ছাঁটাই সুয়োকা-ই। ডিফেন্স চেরা পাস, প্রতিআক্রমণ সাজানো, উইংয়ে খেলা ছড়ানো—বারাসত স্টেডিয়ামে পুণের সব কিছুতেই এ দিন এই জাপানি। তবে রাস্তা দিয়ে লোক হেঁটে যাওয়ার মতোই স্লো খেলা হঠাত্ করে হাফটাইমের আগে নতুন প্রাণ পায়। যখন মেহতাবের পাসে স্ট্রাইকার’স ফিনিশ করেন ডুডু। কিন্তু পরক্ষণেই, তখনও লাল-হলুদ জার্সিদের সেলিব্রেশনের রেশও কাটেনি, অর্ণবের হ্যান্ডবলে দ্রুত ফ্রি-কিক নেয় পুণে। যার নিটফল, ইস্টবেঙ্গলের দুই প্রাক্তনীর একজন সুয়োকার পাসে অন্য জন ইসফাকের হে়ডে ১-১ করা।

Advertisement

বিরতিতে সমর্থকদের টিপ্পনিও তাতাতে পারল না এলকোর দলকে। বরং খেলা যত এগোল ততই ইস্টবেঙ্গল চলে যায় মান্ধাতার লং বল-এ। হলে হল, না হলে না হল। যা করতে গিয়ে বরং নিজেদের ডিফেন্সিভ থার্ড ফাঁকা পড়ে যাচ্ছিল। যে ফোঁকর দিয়েই সুয়োকার দুর্দান্ত পাসে হাওকিপ মাথা ঠান্ডা রেখে পুণেকে ২-১ করে দিলেন। যার পরে শুধুই লাল-হলুদের মিস পাস আর গোলের বাইরে শটের বিরক্তিকর প্রদর্শন! কোচের চিন্তা বাড়িয়ে আবার চোট পেলেন র‌্যান্টি।

পুরনো ক্লাবকে হারিয়ে অবশ্য ‘দুঃখিত’ সুয়োকা। ‘‘ইস্টবেঙ্গলের উপর আমার কোনও রাগ নেই। আমি শুধু নিজের কাজটা করেছি। লাল হলুদ সমর্থকদের জন্য খারাপ লাগছে।’’ এলকোর তখন দাবি, ‘‘আমার থেকে আশা করা হচ্ছে বারো সপ্তাহের মধ্যে ইস্টবেঙ্গলের সব কিছু পাল্টে দেব। কিন্তু আমি তো আর ম্যাজিশিয়ান নই।’’ যার জবাবে লাল-হলুদ ফুটবল-সচিব সন্তোষ ভট্টাচার্য বললেন, ‘‘কোচ আর কত সময় চায় বুঝতে পারছি না। আমরা হাল ছেড়েই দিয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন