প্রস্তুতি: চলছে আমনাদের মহড়া। মঙ্গলবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
কলকাতা লিগ জেতা অভ্যাস করে ফেললেও, ডার্বি জেতা প্রায় ভুলেই গিয়েছে ইস্টবেঙ্গল। সোশ্যাল মিডিয়ায় সবুজ মেরুন সমর্থকরা গত কয়েক দিন কটাক্ষে করে লিখছেন, ‘‘যতবার ডার্বি, ততবার হারবি।’’
এ সব দেখে বা পড়ে ইস্টবেঙ্গল টেকনিক্যাল ডিরেক্টর সুভাষ ভৌমিক কি চাপে? রবিবারের ডার্বি ম্যাচের আগে আজ বুধবার ইস্টবেঙ্গলের শেষ খেলা জর্জ টেলিগ্রাফের সঙ্গে। সেই ম্যাচের প্রস্তুতির একদিন আগে তিন বারের আই লিগ জয়ী কোচ সুভাষের কথাবার্তায় ধরা পড়ে যায় সেটা।
ডার্বির কথা ভেবে আজ সুভাষ খেলাতে চাইছেন না প্রথম একাদশের দুই নির্ভরযোগ্য লালরাম চুলোভা এবং কমলপ্রীত সিংহকে। দু’জনেরই একটি করে হলুদ কার্ড আছে। বলেও দিচ্ছেন, ‘‘ওদের বাঁচিয়ে রাখতেই হবে পরের ম্যাচের জন্য। উপায় নেই। ওদের কেউ একটা করে কার্ড দেখে ফেললে ডার্বিতে সমস্যায় পড়ব।’’ আবার পাশাপাশি তাঁকে এ-ও বলতে শোনা গেল, ‘‘ডার্বি নিয়ে আমি এখন ভাবতে যাব কেন? আমি জর্জ নিয়েই ভাবছি। আমি দিন আনি দিন খাওয়া লোক।’’ চুলোভা, কমলপ্রীত ছাড়াও দুটি হলুদ কার্ড দেখায় খেলতে পারছেন না সামাদ আলি মল্লিক। পরিবর্ত হিসাবে কৌশিক সরকার এবং মনোজ মহম্মদকে রক্ষণে খেলানো হতে পারে।
এক মাস পরও কোস্টা রিকার বিশ্বকাপার জনি আকোস্তার ছাড়পত্র আনতে পারেননি ইস্টবেঙ্গল কর্তারা। সম্ভবত ডার্বিতেই তাঁর অভিষেক ঘটবে। এ দিন তাঁর ছাড়পত্র আসার কথা ছিল। আকোস্তা সই করতে পারেন ভেবে রাত বারোটা পর্যন্ত দফতর খোলা ছিল আইএফএ-র। এই অবস্থায় সুভাষ বিরক্ত হলেও প্রকাশ্যে বলছেন, ‘‘আকোস্তার ছাড়পত্র এলে খেলবে। বাকিটা আমার জানার কথা নয়। হাতে চার টাকা থাকলে আট টাকা আছে ভাবতে যাব কেন?’’
ইস্টবেঙ্গলের নতুন স্প্যানিশ কোচ এসে যাচ্ছেন সামনের সপ্তাহেই। কলকাতা লিগের পর সুভাষের ভবিষ্যৎ কী হবে তা নিয়ে ধোঁয়াশা রেখেছেন কর্তারা। এই অবস্থায় বহু দিন পর একটা ডার্বি-জয় যে তাঁর ইউ এস পি বাড়িয়ে তুঙ্গে নিয়ে যাবে সন্দেহ নেই। সে জন্যই আরোপিত উচ্ছ্বাস দেখিয়ে তিনি মোহনবাগান কোচের গুণগান শুরু করে দিয়েছেন, ডার্বির চার দিন আগেই। ‘‘শঙ্করলালের মতো কোচিং বুদ্ধি যদি আমার পাঁচ শতাংশও থাকত তা হলে আমি অনেক কিছু করে ফেলতাম। আমি ওর গুরু নই ও আমার গুরু।’’ কথা শুনলেই বোঝা যায়, এসবই বড় ম্যাচের আগে সুভাষের সেই পুরনো কৌশল। এটা বলে, তিনি নিজের উপর চাপ কাটাতে চাইছেন।
কিন্তু ডার্বি লড়াইয়ের আগে পড়শি ক্লাবের সঙ্গে টক্করে থাকার জন্য তো আজকের ম্যাচটিও জেতা দরকার ইস্টবেঙ্গলের। সে জন্যই এ দিন সুভাষ নিজেই বলে দিয়েছেন, ‘‘আগের রেনবো ম্যাচে আমার দল জঘন্য ফুটবল খেলেছে। আমার কোচিং-এ কোনও দল এত খারাপ খেলছে, দেখিনি। তবে আমি আজ সব ঠিক করে দিয়েছি অনুশীলনে নেমে।’’ কতটা বদলেছেন আল আমনা-কাশিম আইদারারা সেটা বোঝা যাবে মাঠে নামলেই। জর্জের কোচ রঞ্জন ভট্টাচার্য ইস্টবেঙ্গলে খেলছেন রমন বিজয়ন, ইলিয়াস পাসাদের সঙ্গে। বলছিলেন, ‘‘আমরা পয়েন্ট পাওয়ার লড়াই করব। মহমেডানের কাছ থেকে পয়েন্ট কেড়েছি। মোহনবাগান অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছে ওদের গোলকিপারের জন্য।’’ জর্জ নামছে তিন বিদেশি নিয়ে। ইচের সঙ্গে জাস্টিন মর্গ্যান এবং স্টিফেন হ্যারি। রঞ্জন বললেন, ‘‘আমাদের হারানো সহজ হবে না।’’
বুধবার কলকাতা প্রিমিয়ার লিগ—ইস্টবেঙ্গল: জর্জ টেলিগ্রাফ (ইস্টবেঙ্গল ৪-৩০)।