সুভাষই দায়িত্বে, কোচের দৌড়ে এগিয়ে বাস্তব

সুভাষের হাতে আল আমনা, ইউসা কাতসুমিদের পুরো দায়িত্ব তুলে দেওয়ার দিনই ছেঁটে ফেলা হল কোচ খালিদ জামিলকে। তাঁকে চিঠি পাঠিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে সিদ্ধান্ত।

Advertisement

রতন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৪১
Share:

তৃপ্ত: ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে সাংবাদিক বৈঠকে উচ্ছ্বসিত সুভাষ। —নিজস্ব চিত্র।

আই লিগ পেতে মরিয়া ইস্টবেঙ্গল সুভাষ ভৌমিকের উপরই আস্থা রাখল। বৃহস্পতিবার বিকেলে ক্লাবের শীর্ষ কর্তারা বিশেষ সভা ডেকে সিদ্ধান্ত নিলেন পুরো মরসুমের জন্য টেকনিক্যাল ডিরেক্টরের দায়িত্ব দেওয়া হবে দেশের অন্যতম সফল কোচ সুভাষকে।

Advertisement

আর দায়িত্ব পাওয়ার পর কর্তাদের পাশে বসে তিন বারের জাতীয় ও আই লিগ জয়ী কোচ তুরীয় মেজাজে বলে দিলেন, ‘‘আই লিগই আমার কাছে এখন বিশ্বকাপ। ওটা ইস্টবেঙ্গলকে এ বার জেতাতেই হবে। শুরুর দিন থেকেই সবার মজ্জায় এই মন্ত্র ঢুকিয়ে দেব।’’

সুভাষের হাতে আল আমনা, ইউসা কাতসুমিদের পুরো দায়িত্ব তুলে দেওয়ার দিনই ছেঁটে ফেলা হল কোচ খালিদ জামিলকে। তাঁকে চিঠি পাঠিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে সিদ্ধান্ত। খালিদের জায়গায় কাকে কোচ করা হবে তা ঠিক করার দায়িত্বও তুলে দেওয়া হয়েছে সুভাষের হাতেই। জানা গিয়েছে, খালিদের জায়গায় কোচ হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছেন বাস্তব রায়। সূত্রের খবর, সুভাষ ইতিমধ্যেই বাস্তবকে ফোনে প্রস্তাব দিয়েছেন। গত সাড়ে তিন বছর এটিকেতে সহকারী কোচ হিসাবে কাজ করছেন বাস্তব। তাঁর প্রয়োজনীয় ‘এ’ ডিগ্রিও আছে। এখন শিলিগুড়িতে এটিকের জুনিয়র ফুটবলার বাছার কাজে গিয়েছেন তিনি। আজ শুক্রবার ফিরবেন শহরে। এটিকে কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি। আন্তোনিও হাবাস, হোসে মোলিনা, টেডি শেরিংহ্যামের মতো নামী বিদেশি কোচেদের সহকারী হিসাবে নিঃশব্দে কাজ করা বাস্তব ফোনে বললেন, ‘‘আই লিগের একটি দল আমাকে কোচ হিসাবে চাইছে। আমি আই লিগে কাজ করতে আগ্রহী। এক দিন সময় চেয়েছি ওদের কাছে।’’ বাস্তব ছাড়া আর কারও নাম অবশ্য এ দিন শোনা যায়নি ক্লাব তাঁবুতে। বাস্তব কী সিদ্ধান্ত নেন সেটা জানার পরই অন্য নাম নিয়ে ভাববে ইস্টবেঙ্গল। স্বভাবতই খালিদের বদলি হিসাবে কারও নাম সরকারি ভাবে ঘোষণা করেননি ক্লাব সচিব কল্যাণ মজুমদার। সুভাষ অবশ্য সচিবের পাশে বসে বলে দেন, ‘‘এ লাইসেন্স আছে এ রকম ২৩ জন কোচের নাম আছে আমার কাছে। এর মধ্যে এক জনকে বেছে নেব। তাড়াহুড়োর কিছু নেই।’’

Advertisement

কোচ হয়ে বাস্তব আসুন বা অন্য কেউ, ইস্টবেঙ্গলের সামনের মরসুমের লাগাম যে সুভাষের হাতেই থাকবে এ দিন তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন ক্লাব কর্তারাও। ‘‘কাদের নিয়ে সুভাষ কাজ করবেন সেটা উনিই ঠিক করবেন। কোচ, গোলকিপার কোচ, ফিজিও সবকিছু নিয়েই সিদ্ধান্ত নেবেন উনি,’’ বলে দিয়েছেন ক্লাব সচিব। তখন তাঁর পাশে বসে সহ সচিব ও ফুটবল সচিব। আর এ সব কথা শুনে বহু দিন পর পুর্ণ দায়িত্ব নিয়ে আসা লাল হলুদের টিডির মুখ তৃপ্ত দেখায়। আবেগে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘২০১৯ এ ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে আমার যোগাযোগের ৫০ বছর পূর্তি হবে। আমি তো এই দলের একজন সৈনিক।’’

এ বার যে দল তৈরি হয়েছে তা সুভাষের মতামত নিয়েই তৈরি। তবুও সরকারিভাবে ২৮ ফুটবলারের নামের তালিকা তাঁর হাতে তুলে দেন কর্তারা। সুভাষ বলে দেন, ‘‘দল পেয়ে আমি খুশি। আরও চার পাঁচ জন ফুটবলার নেব। চার জন বিদেশিও বাছতে হবে।’’ তাঁর ইচ্ছা, প্রাক মরসুম প্রস্তুতি করবেন চার বা ছয় সপ্তাহের। লাল হলুদ টিডি ভেবে রেখেছেন, আসিয়ান কাপের মতো কোনও টুর্নামেন্ট খেলার। বলে দেন ‘‘আলবের্তো রোকার বেঙ্গালুরুর খেলা দেখে আমি মুগ্ধ। খেলতে খেলতে তিন চার রকম রণনীতি নেয় দলটা। ইচ্ছে আছে রোকার কাছে গিয়ে কৌশলটা শিখে আসার।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন