শিবির লাল-হলুদ। কোচের সঙ্গে মেন্ডি-মেহতাব। ছবি: উৎপল সরকার
ভাস্কো দা গামা যেখানে প্রথম পা রেখেছিলেন তাঁর ভারত-আবিষ্কারে, সেখান থেকে তিলক ময়দান হেঁটে যাওয়া যায়।
যে স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার বিকেলে তাঁর টিমে দু’টো জিনিস আছে কি না ‘আবিষ্কার’ করতে নামছেন বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য। এক) নক আউট ম্যাচের মেজাজে আই লিগ খেলতে পারেন কি না র্যান্টি-মেহতাবরা। দুই) মোহনবাগানকে টপকাতে ছেলেরা কতটা মরিয়া।
‘‘আমাদের সামনে জেতা ছাড়া এখন আর কোনও রাস্তা খোলা নেই। হয় জেতো নয় ছিটকে পড়ো চ্যাম্পিয়নশিপ দৌড় থেকে। সব ম্যাচ নক আউট ভেবে খেলতে হবে আমাদের।’’ রোদ চশমা পরা লাল-হলুদ কোচ যখন আশা-আশঙ্কায় দুলতে দুলতে সোমবার কথাগুলো বলছেন তখনই প্র্যাকটিসে নামছে ডাফি-বাহিনী। দেখা গেল, সালগাওকরের গোলমেশিন ক্লাব হাউসে বসে থাকা ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্সের নেতা মেন্ডির দিকে তাক করে নিজের সতীর্থ ব্রাজিলিয়ান স্টপারকে কিছু বলছেন। কী বলছিলেন ডাফি?
অনুশীলন শেষ করে আই লিগে একশো শতাংশ গোল-সাফল্য যাঁর পায়ে সালগাওকরের সেই স্কটিশ স্ট্রাইকার বললেন, ‘‘এডারকে বলছিলাম, মেন্ডি আসার পর ইস্টবেঙ্গল টিমটা ভাল খেলছে। ওকে কাল স্বস্তিতে থাকতে দেওয়া যাবে না।’’ সঙ্গে ডাফির সংযোজন, ‘‘আমি তো গোল করছি। করবও। কিন্তু আমাদের ডিফেন্ডাররা তো গোল খেয়ে যাচ্ছে।’’
মেন্ডি বনাম ডাফি।
র্যান্টি বনাম এডার।
জ্যাকিচাঁদ-সত্যসিংহ বনাম তুলুঙ্গা-জাইরু উইং দখলের লড়াই।
সালগাওকরের অবনমন বাঁচানোর লড়াই বনাম ইস্টবেঙ্গলের খেতাবের জন্য পয়েন্ট জোগাড়ের মরিয়া চেষ্টা।
ক্যানভাসটা বড় করলে এ রকম আরও অনেক যুদ্ধ এসে যাবে। সেটা জানেন বলেই ইস্টবেঙ্গল কোচ টিম মিটিংয়ে বলে দিয়েছেন, ‘‘সাত পয়েন্ট পিছিয়ে থেকে ট্রফির লড়াইয়ে ফিরতে পারলে সব ম্যাচ জেতাও যায়।’’ কাল রাইট ব্যাক সামাদ ছাড়া দলে বড় কোনও পরিবর্তন করতে চাইছেন না তিনি। সকালে বিশ্বজিতের অনুশীলন করানো দেখে মনে হল লিগে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীকে তাড়ার যুদ্ধে সফল হতে নিজেদের উইংকে কাল বাড়তি কার্যকর করতে চাইছেন। কারণ ডাফি যে বলগুলো পান তা আসে দুই উইং জ্যাকি আর সত্যর পা থেকে। সেটা থামাতে চাইছে ইস্টবেঙ্গল।
ট্রেভর মর্গ্যানের স্ট্র্যাটেজির ছায়া থেকে মেহতাবকে বার করে এনেছেন বিশ্বজিৎ। ফলে এখন অনেক বেশি আক্রমণাত্মক লাল-হলুদ মাঝমাঠের জেনারেল। বলছিলেন, ‘‘আরে আমাদের বিরুদ্ধেই হয়তো দেখবেন সালগাওকর দারুণ খেলে দিল! জিততে হলে শুরুতেই গোল তুলতে হবে কাল।’’ যা শুনে সালগাওকর কোচ সন্তোষ কাশ্যপের আবার পাল্টা মন্তব্য, ‘‘মোহনবাগান ম্যাচে আমরা খেলতে পারিনি। সেই ভুল শুধরে এ বার মাঠে নামব। ছেলেরা ড্রেসিংরুমে কথা দিয়েছে পয়েন্ট আনবেই।’’
ডাফিরা আগুনে হয়ে উঠলে লাল-হলুদ মশাল কী পাল্টা জ্বলবে? ইস্টবেঙ্গল টিম হোটেল কিন্তু কেমন যেন শান্ত! হয়তো ঝড় ওঠার ইঙ্গিত!
আজ আই লিগে
ইস্টবেঙ্গল: সালগাওকর (ভাস্কো, ৪-০০)