ইস্টবেঙ্গল-২ (ডং)
মহমেডান-১ (করিম)
যুবভারতীতে বা ঘরের মাঠে খেলা থাকলে যে ভাবে দলে দলে তাঁদের সমর্থকরা ভিড় জমান সেই সংখ্যা ছিল না বারাসতে। মেরেকেটে মাঠে আর মাঠের বাইরে হাজির ছিলেন হাজার চারেক ইস্টবেঙ্গল জনতা। রবিবার বারাসতের বিদ্যাসাগর ক্রীড়াঙ্গনে মহমেডান ম্যাচ ২-১ জিতে সেই সমর্থকরাই গলা ফাটালেন, ‘‘জঙ্গলেতে কিং কং, লাল-হলুদে ডু ডং, সাদা-কালোয় পড়ল জং, গোল করল ডু ডং।’’
ম্যাচ শেষে কোনও এক জন সাংবাদিক ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের এই ছড়াটির ইংরেজি তর্জমা করে দিলেন লাল-হলুদের নতুন কোরিয়ান তারকাকে। শুনেই মুখে হাই-ভোল্টেজ হাসি ডংয়ের। প্রথমে বললেন, ‘‘কিং কংয়ের গল্প আমি পড়িনি।’’ তার পরে বললেন, ‘‘গোল করে সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটানোর মতো বড় কাজ এক জন ফুটবলারের কাছে সব-সময়ই কাম্য। আমি সেটাই করেছি।’’
প্রথমার্ধে ‘মিনি ডার্বি’ গোলশূন্য। মহমেডান কোচ মৃদুল বন্দ্যোপাধ্যায় ময়দানের ঝাঁনু ট্যাকটিশিয়ান বলে পরিচিত। আই লিগ জয়ী মোহনবাগানকে রুখে দিয়েছিলেন লিগের শুরুতেই। তাই বারাসতেও একটা অজানা আশঙ্কা হানা দিতে শুরু করেছিল লাল-হলুদ সমর্থকদের মনে। দ্বিতীয়ার্ধেও যখন খেলা শুরু হল, তখনও লাল-হলুদ সমর্থকরা সেই বেশ চিন্তাক্লিষ্ট মুখেই বসেছিলেন। কিন্তু, তাদের মুখে হাসি ফুটল ছেষট্টি মিনিটে এসে। যখন বাঁ-পায়ের জোরালো শটে গোল করে গেলেন সেই ডং। শট নেওয়ার আগে সাদা-কালো শিবিরের তিন ডিফেন্ডারকে পরাস্ত করেছিলেন হেলায়। মৃদুলের এই মহমেডান রক্ষণে অন্যতম সেরা ফুটবলার হলেন রানা ঘরামি। ডং তাঁকেও যে ভাবে আউটস্টেপ ও ইনস্টেপে ড্রিবল করে পরাস্ত করে বল মহমেডানের জালে পাঠালেন তা মুগ্ধ হয়ে দেখার মতোই।
প্রথম গোলের ক্ষেত্রে যদি নিজের পায়ের কাজে মহমেডান রক্ষণকে বোকা বানিয়ে দিয়ে থাকেন ডং, তা হলে দ্বিতীয় গোলের ক্ষেত্রে সাদা-কালো ডিফেন্সকে এই কোরিয়ান হারালেন তাঁর গতিতে। প্রতি-আক্রমণে দুই ডিফেন্ডারকে পিছনে ফেলে নিখুঁত ফিনিশিংয়ে গোল করে যান এ দিনের ম্যাচসেরা ডং।
এই নিয়ে লাল-হলুদের পাঁচ ম্যাচের চারটিতেই ম্যাচ সেরা লাল-হলুদের কোরিয়ান তারকা। এ দিনের ম্যাচের পর পাঁচ ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট সংগ্রহ করে লিগ তালিকায় ফের এক নম্বরে উঠে এল ইস্টবেঙ্গল।
ম্যাচের শেষে হতাশ কোচ মৃদুল বন্দ্যোপাধ্যায় বলছিলেন, ‘‘প্রথমার্ধে টিম যে ছন্দে খেলছিল। দ্বিতীয়ার্ধে সেটা হল না। আর সেই ভুলভ্রান্তি কাজে লাগিয়েই গোল করে গেল ডং।’’ মহমেডানের সান্ত্বনা ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে করিমের গোল। কর্নার থেকে দুরন্ত গোল করে যান সাদা-কালো শিবিরের এই বিদেশি। এ দিনের ম্যাচের পর পাঁচ ম্যাচে মহমেডানের পয়েন্ট দাঁড়াল আট।