ইস্টবেঙ্গলের স্প্যানিশ কোচ আলেয়ান্দ্রো । — ফাইল ছবি।
সব তো ঠিকঠাকই চলছিল। আলেসান্দ্রো মেনেন্দেসকে ঘিরে দিনবদলের স্বপ্ন দেখছিল ইস্টবেঙ্গল। গতবার স্প্যানিশ কোচের হাত ধরে আইলিগ ঘরে তোলার প্রায় কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল লাল-হলুদ।
শেষ ল্যাপে চেন্নাই সিটি এফসি স্বপ্ন ভেঙে দেয় কোয়েস ইস্টবেঙ্গলের। পুরনো মরসুমের ব্যর্থতা ভুলে নতুন বছরের দিকেই পাখির চোখ করেছিলেন মেনেন্দেস। তাঁর সঙ্গে চুক্তিও বাড়িয়েছে কোয়েস ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু হঠাৎই অভিমানী বোরহা ফার্নান্দেজদের ‘দ্রোণাচার্য’। সূত্রের খবর, দলগঠন পদ্ধতির গতি নিয়ে তিনি মোটেও সন্তুষ্ট নন।
স্পেনে ছুটি কাটাতে যাওয়ার আগে কোয়েস ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের কাছে নতুন মরসুমের জন্য ফুটবলারদের একটা তালিকা জমা দিয়ে গিয়েছিলেন মেনেন্দেস। সেই ফুটবলারদেরই নতুন মরসুমে লাল-হলুদে চেয়েছিলেন স্প্যানিশ কোচ। দলবদলের হাওয়া বইতে শুরু করেছে ময়দানে। এখনও পর্যন্ত কোয়েস ইস্টবেঙ্গল সেই ভাবে কোচের পছন্দের ফুটবলারদের সই করাতে পারেনি। দলগঠন প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে কোয়েস ইস্টবেঙ্গল কিন্তু কাজে যেরকম গতি চেয়েছিলেন মেনেন্দেস, সেই গতিটাই তিনি দেখতে পাচ্ছেন না বলে ঘনিষ্ঠ মহলে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন অভিজ্ঞ কোচ।
আরও খবর: মোরিনহো মন্ত্রে স্বপ্নের সন্ধানে আলেসান্দ্রো
মেনেন্দেস পুরোদস্তুর পেশাদার কোচ। প্রতিটি কাজেই তাঁর পেশাদারিত্বের ছোঁয়া। গতবার কলকাতা লিগের পরে তিনি দলের হাল ধরেছিলেন। আই লিগে তার ফল পেয়েছে ইস্টবেঙ্গল শিবির। প্রতিবার আই লিগের শেষ ধাপে এসে ছন্দ হারিয়ে ফেলতেন লাল-হলুদ ফুটবলাররা। এ বার সেই ছবিটা দেখাই যায়নি। মরসুমের শেষ প্রান্তেও এসেও দাপিয়ে খেলে গিয়েছেন চুলোভা-অ্যাকোস্টারা। এমনকি, সুপার কাপ থেকে নাম সরিয়ে নেওয়ার পরেও ফুটবলারদের নিয়ে পড়েছিলেন তিনি। অন্য ক্লাব কিন্তু ছুটি দিয়ে দিয়েছিল ফুটবলারদের। ব্যতিক্রম ইস্টবেঙ্গল। পরের মরসুমের জন্য ফুটবলারদের ফিটনেসের কাজটাও শুরু করে দিয়েছিলেন আগেই। একটা চিন্তাভাবনার পরিচয় পাওয়া যাচ্ছিল তাঁর কাজে।
কিন্তু স্পেনে বসেই তাঁকে শুনতে হচ্ছে, কয়েকজন ফুটবলার নাকি ক্লাব ছাড়তে পারেন। যাঁদের চেয়েছিলেন, তাঁদের দলে পাওয়ার ক্ষেত্রে সময় খরচ হচ্ছে অনেকটাই। এর ফলে তাঁরাও হাতছাড়া হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্প্যানিশ কোচ। সুত্রের খবর, ঘনিষ্ঠ মহলে মেনেন্দেস জানিয়েছেন, যে দল তিনি চেয়েছেন, সেই দল না পেলে তাঁর কিছু করার নেই। তিনি কোনওভাবেই দায়ী নন।
এরকম পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে লাল-হলুদ কোচের মনে হচ্ছে, তাঁর কথাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। কোয়েস ইস্টবেঙ্গল শিবিরে কান পাতলে অবশ্য শোনা যাচ্ছে, কোচের পছন্দ অনুযায়ী ফুটবলারকে সই করানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু তাতে কোচের মন গলছে কোথায়! তিনি চান গতি। সেই গতিটা দেখতে না পেয়েই অসন্তুষ্ট আলেসান্দ্রো মেনেন্দেস।