ক্রিকেটার ছেলের মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন তুলে এফআইআর দায়ের করলেন প্রয়াত অঙ্কিত কেশরীর বাবা রাজকুমার কেশরী। পুলিশের কাছে আবেদন করলেন, তাঁর ছেলের মৃত্যুর পিছনে যারা দায়ী, তাদের শাস্তি দিতে।
বুধবার রাতে বিধান নগর থানায় দায়ের করা এফআইআরে দু’টো অভিযোগের কথা তুলে এনেছেন রাজকুমার কেশরী। এক, তাঁর ছেলের চিকিৎসা ঠিকমতো হয়নি। চিকিৎসার গাফিলতিতেই অঙ্কিতের মৃত্যু হয়েছে। আর দুই, মস্তিষ্কের চোট সমেত অঙ্কিতকে যে এক হাসপাতাল থেকে আর এক হাসাপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সেটা তাঁকে কিছু জানানো হয়নি। সম্পূর্ণ অজ্ঞাত রেখে সেটা করা হয়েছে। ‘‘সব সময় বলা হচ্ছিল ও নাকি ঠিক আছে। দু’টো হাসপাতালই বলে যাচ্ছিল। গাফিলতি নয় এটা? তা ছাড়া ওকে যে এক হাসপাতাল থেকে আর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, সেটা একবার জানানো হবে না আমাকে? অনুমতি নেওয়া হবে না,’’ এ দিন সন্ধেয় বলছিলেন অঙ্কিতের বাবা রাজকুমার। কিন্তু এত দিন বাদে এফআইআর করলেন কেন? ঘটনার এক মাস কেটে যাওয়ার পর কেন? ‘‘দেখুন, আমি নিজেকে এখনও নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছি না। গত এক মাস বুঝতে পারিনি কী করছি, না করছি। এখনও যে কাজে যাচ্ছি, মন দিতে পারছি না। এত হিসেব করে, ভেবেচিন্তে এফআইআর করিনি। মনে হয়েছে যে আমার ছেলের সঙ্গে অন্যায় হয়েছে। তাই তার প্রতিকারের আশায় এফআইআর করেছি।’’
হাসপাতাল— তারা কী বলছে? সিএবির স্থানীয় লিগের ম্যাচে ফিল্ডিং করতে গিয়ে সতীর্থের সঙ্গে সংঘর্ষে মাথায় চোট পেয়েছিলেন অঙ্কিত। প্রথমে তাঁকে দ্রুত মাঠের পার্শ্ববর্তী আমরিতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে স্থানান্তরিত করা হয় নাইটিঙ্গলে। যেখানে অঙ্কিতের মৃত্যু হয়। অঙ্কিতের বাবার অভিযোগ অনুযায়ী, আমরি থেকে নাইটিঙ্গলে অঙ্কিতকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাঁর অনুমতি ছাড়া। কিন্তু আমরি কর্তৃপক্ষ বলছে, সে সময় অঙ্কিতের পরিবারের বিশেষ কোনও ভূমিকাই ছিল না। পুরোটাই দেখছিল অঙ্কিতের ক্লাব ইস্টবেঙ্গল। তারাই হাসপাতালকে বলে দিয়েছিল, আর্থিক থেকে শুরু করে সমস্ত ব্যাপ্যারস্যাপার নিয়ে তাদের সঙ্গেই শুধু কথা বলতে হবে। আমরি-র সিইও রূপক বড়ুয়া এ দিন বললেন, ‘‘অঙ্কিতকে ভর্তি করিয়েছিলেন এক ক্লাব কর্তা। ছাড়িয়ে নিয়েও গিয়েছিলেন নিজে সই করে। তিনিই বলেছিলেন, যে কোনও ব্যাপারে শুধু তাঁর সঙ্গে কথা বলতে হবে। রোগীকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাবেন কি না, সেটা তো আমরা ঠিক করিনি। ওঁরাই করেছেন। ওঁরা সেটা নিয়ে যেতেও পারেন। আর অঙ্কিতের পরিবার তখন ব্যাপারটার মধ্যে সে ভাবে ছিল না।’’