৩৩ মাস পর যুবভারতীতে ফের লাল-হলুদের ডার্বি জয়ের মশাল জ্বলে উঠল।— ফাইল চিত্র।
ইস্টবেঙ্গল ৩ (রালতে ২, জাস্টিন)
মোহনবাগান ২ (আজহার, ডিকা)
৩৩ মাস পর যুবভারতীতে ফের লাল-হলুদের ডার্বি জয়ের মশাল জ্বলে উঠল। রবিবাসরীয় আই লিগ ডার্বিতে ৩-২ গোলে জয় পেল ইস্টবেঙ্গল।
আলেসান্দ্রো মেনেন্দেসের দল তাদের চির প্রতিদ্বন্দ্বীর থেকে এই ম্যাচে অনেকটাই এগিয়ে গেল লিগ টেবলে। ৭ ম্যাচ পর ইস্টবেঙ্গলের পয়েন্ট ১২। মোহনবাগান সমসংখ্যক ম্যাচ খেলে দাঁড়িয়ে রইল ৯ পয়েন্টে।
রবিবাসরীয় ডার্বিতে নাটকীয়তা, রোমাঞ্চ কোনও কিছুরই অভাব ছিল না। সকাল থেকেই শহর জুড়ে উন্মাদনা। দুপুরের পর থেকেই যুবভারতী যাওয়ার সব রাস্তার দখল নিয়ে নিয়েছিলেন মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা। ম্যাটাডোর, লরি বোঝাই হয়ে চির প্রতিদ্বন্দ্বী দুই দলের অনুরাগীরা মাঠে এসেছেন। কেউ ফিরেছেন স্বপ্নভঙ্গের বেদনা নিয়ে। কারওর মুখে আবার ছিল চওড়া হাসি। এঁরা কে কোন দলের মনে হয় না, আলাদা করে বলতে হবে বলে!
আরও পড়ুন: ডার্বি ম্যাচের লাইভ আপডেট
এই ম্যাচের দিনকয়েক আগে থাকতেই সংবাদ মাধ্যমে প্রবল ভাবে আলোচিত হচ্ছিল বড় ম্যাচে দীর্ঘ দিন ইস্টবেঙ্গলের না জেতার প্রসঙ্গ। সেই কবে ২০১৬ সালের এপ্রিলে শেষ বার মোহনবাগানের বিরুদ্ধে জয় পেয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। বহু দিনের খরা কাটাতে এ বার মরিয়া ছিল লাল-হলুদ শিবির। এত দিনকার স্বপ্নভঙ্গের বেদনা গড়পড়তা লাল-হলুদ সমর্থকদের কাছে কাঁটার মতো বিঁধছিল।
রবিবার খেলা শুরুর কিছুক্ষণ কাটতে না কাটতেই কিন্তু ইস্টবেঙ্গল শিবিরে ধাক্কা! ১৩ মিনিটে বাগানের তরুণ তুর্কী আজহারউদ্দিন মল্লিকের গোল সবুজ-মেরুন গ্যালারিতে উচ্ছ্বাসের ঢেউ এনে দিল। বেশি ক্ষণ অবশ্য সেই উল্লাস দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। মিনিট চারেকের মধ্যেই ইস্টবেঙ্গলকে সমতায় ফিরিয়ে আনেন পাহাড়ি তারকা রালতে। এই গোল স্বভাবতই লাল-হলুদ বাহিনীকে চাঙ্গা করে দেয়।
বিরতির আগে বাগান কোচ শঙ্করলাল গোলদাতা আজহারকে বসিয়ে নামান ফৈয়াজকে। এর আগে ডিকাদের পেনাল্টির আবেদন নাকচ হয়। বিরতির ঠিক আগে ইস্টবেঙ্গলকে গোল করে এগিয়ে দেন কেরলের স্ট্রাইকার জবি জাস্টিন। বিরতির পরও ইস্টবেঙ্গলের খেলাতেই বেশ ঝাঁঝ লক্ষ করা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: কোহালির ২৫তম সেঞ্চুরির দিনে লায়নের দাপট, ১৭৫ রানের লিড অজিদের
৬০ মিনিটে লাল কার্ড দেখে বাগান অধিনায়ক কিংসলে বেরিয়ে যাওয়ার পর, ম্যাচে আরও জাঁকিয়ে বসে ইস্টবেঙ্গল। এর ঠিক পরে পরেই রালতের দ্বিতীয় গোল। লাল-হলুদ জনতার বিস্ফোরণ ঘটল যুবভারতীতে। মাঠের মধ্যে দু দলের ফুটবলাররা মাঝে মাঝেই মাথা গরম করলেন।
ঝিরঝিরে বৃষ্টিও স্টেডিয়ামে হাজির হাজার হাজার মানুষের উত্সাহে বিন্দুমাত্র ভাটা ফেলেনি। ৭৫ মিনিটে দিপান্দা ডিকা গোল করে ব্যবধান কমালেও, শেষ বেলায় বাগানের ঝোড়ো আক্রমণের মুখে পড়েও লাল-হলুদ রক্ষণ অবিচল রইল। ম্যাচের একেবারে শেষ লগ্নে বাগান গোলকিপার শঙ্কর রায়কে একা পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ হন জবি জাস্টিন।
খেলার শেষে যুবভারতীর গ্যালারিতে জ্বলে উঠল মশাল। ডার্বির শেষে, অনেক দিন পর এমন দৃশ্য দেখা গেল।