অনুশীলন না করে ইকো পার্কে জবিরা

যুবভারতীতে সাংবাদিক সম্মেলন ছেড়ে পুরো দলকে নিয়ে রাজারহাটের সবুজে-সবুজ পার্কে হাজির লাল-হলুদের কোচ আলেসান্দ্রো মেনেন্দেস। ফুটবলারদের দিকে তাকিয়ে হাসছেন তিনি। দলের সঙ্গে যাওয়া এক কর্তা ইকো পার্ক ঘোরার নানা দৃশ্যের বর্ণনা করতে করতে বিস্মিত কণ্ঠে বললেন, ‘‘কোচ সব রকম কথা বললেন ফুটবলারদের সঙ্গে। শুধু চার্চিল ম্যাচ এবং ফুটবল ছিল না কোথাও।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৪:৩২
Share:

—ফাইল চিত্র।

ইকো পার্কের ভিতরের সবুজ ঘাসের উপর শুয়ে রয়েছেন জবি জাস্টিন। জলে পা ডুবিয়ে দু’দিন আগে হ্যাটট্রিক করা লালডানমাউইয়া রালতে তাঁর সঙ্গে খুনসুটি করছেন। সপ্তম আশ্চর্যের আদলে তৈরি নানা প্রতিকৃতি দেখে মুগ্ধ হয়ে ছবি তুলছেন স্প্যানিশ টোনি দোভালে, মেক্সিকান এনরিকে এসকুয়েদা। পার্কের ভিতর নকল তাজমহলের সামনে দাঁড়িয়ে নিজস্বী তুলতে পেরে কাশিম আইদারার মুখে অনাবিল তৃপ্তি। কলকাতায় প্যারিসের আইফেল টাওয়ার! অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলেন কোস্টা রিকার বিশ্বকাপার জনি আকোস্তা।

Advertisement

যুবভারতীতে সাংবাদিক সম্মেলন ছেড়ে পুরো দলকে নিয়ে রাজারহাটের সবুজে-সবুজ পার্কে হাজির লাল-হলুদের কোচ আলেসান্দ্রো মেনেন্দেস। ফুটবলারদের দিকে তাকিয়ে হাসছেন তিনি। দলের সঙ্গে যাওয়া এক কর্তা ইকো পার্ক ঘোরার নানা দৃশ্যের বর্ণনা করতে করতে বিস্মিত কণ্ঠে বললেন, ‘‘কোচ সব রকম কথা বললেন ফুটবলারদের সঙ্গে। শুধু চার্চিল ম্যাচ এবং ফুটবল ছিল না কোথাও।’’

খেতাবের লড়াইতে এগিয়ে যাওয়ার জন্য চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে মুখোমুখি হতে হবে ‘গোল মেশিন’ উইলস প্লাজ়ার চার্চিল ব্রাদার্সের। আই লিগের সেই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে ইস্টবেঙ্গল অনুশীলনই করল না শনিবার! ফুটবলাররা অনুশীলনের সময় হোটেলে থাকলেন, দুপুরে ঘণ্টা খানেক সল্টলেকের সবচেয়ে আকর্ষণীয় পার্কে ঘুরলেন।

Advertisement

কেন অনুশীলন করালেন না ম্যাচের আগের দিন? লাল-হলুদের স্প্যানিশ কোচ প্রশ্ন শুনে নির্বিকার। গম্ভীর মুখে বলে দিলেন, ‘‘অনুশীলন হলে ভাল হত। কিন্তু পরপর ম্যাচ। তাই ফুটবলারদের ক্লান্তি কাটানো আর সুস্থ রাখাটা আমার কাছে বেশি জরুরি ছিল।’’ লিগ টেবলের ‘লাস্ট বয়’ শিলং লাজং ম্যাচের বাহাত্তর ঘণ্টার মধ্যে চার্চিলের বিরুদ্ধে নামতে হচ্ছে বোরখা গোমেজদের। তা সত্ত্বেও আলেসান্দ্রো যেভাবে এ দিন জবি, জনি, এনরিকেদের ড্রেসিংরুমে কোনও আলোচনা না করে বা বল পায়ে মাঠে না নামিয়ে পার্কে ঘুরলেন, তা চমকে দিয়েছে সবাইকেই।

আপনারা কোচিং করলে এই ঝুঁকি নিতে পারতেন? ইস্টবেঙ্গলকে লিগ জেতানো কোচ মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য বললেন, ‘‘জয়ের মধ্যে থাকলে কোচেদের সব কাজই সমর্থন পায়। যে কোচ যা করবেন তা-ই অসাধারণ মনে হবে। তবে এটা ঠিক বিদেশি কোচেদের ফুটবল জ্ঞান তো আমাদের থেকে অনেক বেশি। উনি রিয়াল মাদ্রিদের যুব দলকে কোচিং করিয়েছেন। অভিজ্ঞতাও বেশি। নিশ্চয়ই অনেক ভেবেচিন্তে এ রকম সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’’ আর মোহনবাগানকে আই লিগ জেতানো কোচ সঞ্জয় সেন গোয়া থেকে ফোনে বললেন, ‘‘বিদেশে এ রকম হয়ই। প্রত্যেক কোচেরই নিজস্ব কোচিং সূচি তৈরি থাকে। ফুটবলারদের মনস্তত্ত্ব বুঝে সেটা করা হয়। আলেসান্দ্রো নিশ্চয়ই পরপর ম্যাচ বলে এ দিনটা ফুটবলারদের চাপমুক্ত এবং চাঙ্গা রাখার জন্য পার্কে বেড়াতে নিয়ে গিয়েছেন। তবে আমরা এ রকম করলে সমালোচনার ঝড় বইত।’’ আর শ্রীনগরে ফোনে ধরা হলে রিয়াল কাশ্মীরের স্কটিশ কোচ ডেভিড রবার্টসন বললেন, ‘‘এর মধ্যে নতুনত্ব কিছু নেই। আমিও এ রকম সিদ্ধান্ত বহুবার নিয়েছি। এখনও নিই।’’ দলের সঙ্গে থাকা লাল-হলুদ কর্তাদের ব্যাখ্যা, একটা ম্যাচ খেলার পরের দিন রিকভারি সেশন থাকে। তার পরদিন ছুটি দেন আলেসান্দ্রো। এর মধ্যে নতুনত্ব কিছু নেই। সেটাই হয়েছে।

আলেসান্দ্রো ইকো পার্কে বেড়াতে যাওয়ার আগে অবশ্য যুবভারতীতে এসে বলে যান, ‘‘আমাদের কাছে এটা খুবই কঠিন ম্যাচ। শুরু থেকেই লিগ টেবলে উপরের দিকে চার্চিল। নিয়মিত গোল পাচ্ছে। বেশ কয়েক জন ভাল ফুটবলারও আছে। আমরা সতর্ক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন