পাসিং ফুটবলের ভরসায় এলকো।
তাকজিম-৪ (নাজরিন, সফিক, চানতুরু, সাফি সালি)
ইস্টবেঙ্গল-১ (র্যান্টি)
দায়িত্ব নেওয়ার পর অনুশীলনের সময় পেয়েছিলেন দু’দিন। নিজের টিম সম্পর্কে মগজস্থ করেছিলেন প্রাক্তন ছাত্র দীপক মণ্ডলের টিপস!
তা দিয়েই অভিষেক ম্যাচে বিদেশের মাঠে নিজের সাধ্যমতো চেষ্টা করেছিলেন ইস্টবেঙ্গলের নবনিযুক্ত কোচ এলকো সতৌরি। কিন্তু নিটফল মোটেই ভাল নয় লাল-হলুদের ডাচ কোচের। এএফসি কাপের প্রথম ম্যাচে মালয়েশিয়ার জোহর দারুল তাকজিমের কাছে ১-৪ হারতে হল।
আগের দিন সাংবাদিক সম্মেলনে এলকো জানিয়েছিলেন, ডিফেন্স এবং গোলকিপার নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন। সেই চিন্তা যে অমূলক নয় চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই প্রমাণিত। মঙ্গলবার মালয়েশিয়ার জোহর বাহরু স্টেডিয়ামে র্যান্টির ফ্রিকিকে সমতা ফিরিয়েও পরে আরও তিন গোল হজম করার পিছনে মিলান সুসাকদের রক্ষণকে দায়ী করা যায়। তবে মাঠের ভিতর ফুটবলারদের চেয়েও প্রশ্ন উঠছে মাঠের বাইরে লাল-হলুদ কর্তাদের অপেশাদার মনোভাব নিয়ে।
কেন ম্যাচ সাসপেনশনে থাকা অর্ণব মণ্ডলকে নিয়ে যাওয়া হল মালয়েশিয়ায়? কর্তারা কি তাঁর কার্ডের ব্যাপারে অবহিত ছিলেন না? কেন ডিফেন্ডার রাজু গায়কোয়াড়ের ভিসা হল না? এ সব নিয়ে প্রশ্ন উঠছে ম্যাচ শেষ হতেই।
এক সপ্তাহ আগে নিজের শেষ ম্যাচে রাজুকে নামিয়ে ফাটকা খেলেছিলেন লাল-হলুদের সদ্য অপসারিত কোচ আর্মান্দো কোলাসো। সেই সম্মানের ডার্বি ড্র রাখা আর্মান্দোর প্রাক্তন ছাত্রদের মালয়েশিয়ায় গিয়ে চার গোল হজমের ব্যাপারে লাল-হলুদের প্রাক্তন গোয়ান কোচ সামান্যতম প্রতিক্রিয়া দিতেও নারাজ। তবে ইস্টবেঙ্গলের এ দিনের পাসিং ফুটবল খেলার কথা জানতে পারলে আর্মান্দোর কী জাতীয় অনুভূতি হবে কে জানে! মালয়েশিয়া থেকে দলের টেকনিক্যাল ম্যানেজার অ্যালভিটো ডি’কুনহা ফোনে দাবি করলেন, “চার গোল খেলেও আমরা খুব ভাল পাসিং ফুটবল খেলেছি। যার বেশির ভাগ পাস নিখুঁত ছিল। তবু ছোটখাটো ভুলের জন্য গোলগুলো হজম করতে হল। কোচ নতুন। তাঁকে তো সময় দিতে হবে।”
এলকো আসলে ধাক্কা খেয়েছিলেন ম্যাচের আগের দিনই। যখন তিনি জানতে পারেন ডিফেন্সে অর্ণবকে পাচ্ছেন না। তা সত্ত্বেও অ্যাওয়ে ম্যাচে পাসিং ফুটবল খেলে ম্যাচের রাশ হাতে রাখার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ডিফেন্সে গুরবিন্দর আর মিলান সুসাকের বোঝাপড়ার অভাব কাজে লাগিয়ে শুরুতেই গোল করে যান মালয়েশিয়ান দলের নাজরিন। তবে গোলের পর বলের দখল রেখে পাল্টা ঝাঁপিয়েছিলেন র্যান্টি মার্টিন্সরা। তার থেকেই ১-১ করা র্যান্টির। কিন্তু তিন মিনিট পরেই বক্সের ভিতর সুসাকের হাতে বল লাগায় পেনাল্টি থেকে ফের এগিয়ে যায় স্থানীয় দল। এর পর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই পরপর আরও দু’গোল খেয়ে বসায় ডুডু-মেহতাবদের উদ্যম আর কাযর্কর হয়নি। তা ছাড়া দুই সাইডব্যাক দীপক এবং রবার্টও চেনা ছন্দে ছিলেন না। ডুডুকে বোতলবন্দি করে ফেলেন বিপক্ষ ডিফেন্ডাররা।
এ দিন ইস্টবেঙ্গল হারলেও অবশ্য এএফসি কাপের অন্য গ্রুপে মলদ্বীপের মাজিয়া স্পোর্টসকে ২-১ হারিয়েছে বেঙ্গালুরু এফসি। এএফসি কাপে ইস্টবেঙ্গলের পরের ম্যাচ ১০ মার্চ হংকংয়ের কিটচির সঙ্গে। তার আগে আই লিগে ডেম্পো ম্যাচ।