রেফারিং নিয়ে এ বারের কলকাতা লিগ উত্তাল। তা সত্ত্বেও রবিবারের ডার্বিতে বাঁশি থাকবে কলকাতার রেফারিদের হাতেই। আজ বৃহস্পতিবার রেফারিজ কমিটির সভায় ছ’জনের প্যানেল তৈরি হবে। যাঁদের নাম যোগ্য বলে বিবেচিত হচ্ছে তাদের মধ্যে রঞ্জিত বক্সী ছাড়া কেউ ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ম্যাচ খেলাননি। তবে বাকিদের সহকারী রেফারি থাকার অভিজ্ঞতা রয়েছে।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে রেফারিং নিয়ে নিজেদের মধ্যে চাপান উতোর চালালেও দুই প্রধান অবশ্য মেনে নিয়েছে আইএফএ-র সিদ্ধান্ত। কেউ কোনও প্রশ্ন তোলেননি রাত পর্যন্ত। বহু দিন পর কলকাতার লিগের ফয়সালা হবে ডার্বিতে। অনেক বছর পর এই টুনার্মেন্টে ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান পয়েন্টের নিরিখে দাঁড়িয়ে আছে একই বিন্দুতে। গোল পার্থক্যে ইস্টবেঙ্গল এগিয়ে থাকলেও, তাতে অবশ্য উত্তেজনার পারদ একেবারেই কমেনি। খালিদ জামিলের টিম টানা আট বার লিগ জেতার দুর্লভ রেকর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে। আর মোহনবাগানের অগ্নিপরীক্ষা সেই রেকর্ড আটকে বহুদিন পর খেতাব জেতার। আর সে জন্যই উৎসবের আবহেও ডার্বি নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে। যার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল গত মঙ্গলবারই। একদল ইস্টবেঙ্গল সমর্থক অভব্য আচরণ করেছিলেন মোহনবাগান তাঁবুতে গিয়ে। এই ঘটনার জের যাতে শিলিগুড়িতে আছড়ে না পরে সে জন্য এ দিন নজিরবিহীন উদ্যোগ নেন লাল-হলুদ কর্তারা। তাতে সায় দেয় সবুজ-মেরুন শিবির। প্রায় কুড়ি বছর পর ইস্টবেঙ্গলের শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার, ফুটবল সচিব রজত গুহ বুধবার বিকেলে যান চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর তাঁবুতে। তাদের সঙ্গে যান প্রাক্তন ফুটবলার ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়ও। সহ সচিব সৃঞ্জয় বসু, অর্থ সচিব দেবাশিস দত্ত-সহ মোহনবাগান কর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন তাঁরা। ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের উপরও যে বাঁশ-লাঠি নিয়ে চড়াও হয়েছিলেন সবুজ-মেরুন সমর্থকরা তার ভিডিও নিয়ে গিয়েছিলেন লাল-হলুদ কর্তারা। কারা আগে আক্রমণ করেছে তা নিয়ে মতান্তর হলেও দু’পক্ষের কর্তারাই এক যোগে জানিয়ে দেন, ‘‘যা ঘটেছে তা নিন্দনীয়।’’
বুধবার থেকে টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে শিলিগুড়িতে। আঠাশ হাজারের মধ্যে প্রথম দিন-ই প্রায় আট হাজার টিকিট বিক্রি হয়েছে বলে খবর। যার সত্তর শতাংশ কিনেছেন লাল-হলুদ সমর্থকরা।
তবে ঝিরঝিরে বৃষ্টিতে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের মাঠের হাল খারাপ। তার মধ্যেই ঘাস কাটার কাজ শুরু হয়েছে। উদ্যোক্তাদের আশা দু’দিন রোদ উঠলেই মাঠ তৈরি হয়ে যাবে। শুক্রবারই শিলিগুড়িতে পৌছে যাচ্ছে দু’দলই। দুপুরে নেমেই বিকেলে অনুশীলন করতে মাঠে যাবেন বলে ঠিক করেছেন খালিদ জামিল। শঙ্করলাল চক্রবর্তীরা অবশ্য অনুশীলন করেই যাচ্ছেন বিকেলে। দু’দলই সলতে পাকানোর কাজ শুরু করেছে। খালিদ এ দিন সকালে অনুশীলনের পর উইলিস প্লাজার সঙ্গে আলাদা ভাবে কথা বলেন। বলেন, ‘‘টালিগঞ্জ ম্যাচের পারফরম্যান্স মরসুমের শেষ ম্যাচ পর্যন্ত ধরে রাখতে হবে।’’ অন্য দিকে শঙ্করলাল চিন্তায় আছেন তাঁর দুই চোট পাওয়া ফুটবলার আজহারউদ্দিন মল্লিক ও শিল্টন ডি সিলভাকে শুরু থেকে নামানো নিয়ে। তবে কার্ড সমস্যা না থাকায় দুই কোচই বেশ যুদ্ধংদেহী মেজাজে।