Euro Cup 2020

সুইসদের প্রতিআক্রমণের ফাঁদে পা দিয়ো না স্পেন

ফ্রান্স বনাম সুইৎজ়ারল্যান্ড ম্যাচের আগে কেউ কি ভাবতে পেরেছিল যে জ়ার্দান শাকিরি-রা ও রকম নাটকীয় প্রত্যাবর্তন ঘটিয়ে জিতবে?

Advertisement

মারিয়ো রিভেরা  (ইস্টবেঙ্গল কোচ)

মাদ্রিদ শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০২১ ০৬:৩৮
Share:

আলভারো মোরাতা এবং হ্যারিস সেফেরোভিচ

সুইৎজ়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপের কথা যত মনে পড়ছে, তত আতঙ্কিত হয়ে পড়ছি। প্রথম ম্যাচে স্পেনকে হারিয়ে চমকে দিয়েছিল সুইসরা। এ বার ওরা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সকে হারিয়ে ইউরো ২০২০-র শেষ আটে উঠেছে।

Advertisement

ফ্রান্স বনাম সুইৎজ়ারল্যান্ড ম্যাচের আগে কেউ কি ভাবতে পেরেছিল যে জ়ার্দান শাকিরি-রা ও রকম নাটকীয় প্রত্যাবর্তন ঘটিয়ে জিতবে? এর জন্য দায়ী অবশ্য দিদিয়ে দেশঁ-এর অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস। হঠাৎ করেই রণনীতি বদলে তিন ডিফেন্ডারে দলকে খেলিয়েছিলেন। পল পোগবা, আঁতোয়া গ্রিজ়ম্যানরা শেষ মুহূর্তের এই পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেনি। আমার মনে হয় না, লুইস এনরিকে এই ধরনের ভুল করবে। স্পেনীয় কোচের কাছে সব ম্যাচই অগ্নিপরীক্ষার। ব্যর্থ হলে সব চেয়ে আগে ওকেই কাঠগড়ায় তোলা হবে। অধিকাংশ মাদ্রিদবাসী তো সেই দিনটার জন্যই অপেক্ষা করে আছেন!

ইউরো ২০২০-তে স্পেনের শুরুটা ভাল হয়নি। প্রথম দু’ম্যাচে ড্রয়ের পরে রীতিমতো দুশ্চিন্তা হচ্ছিল। শেষ ষোলোয় আদৌ কি যোগ্যতা অর্জন করতে পারবে স্পেন? মাঠে নেমে গোল ছাড়া সব কিছুই করছিল আলভারো মোরাতা-রা। ফুটবলে গোলটাই সব। দু’দিন পরে কেউ মনে রাখবে না বল দখলের লড়াইয়ে কতটা এগিয়ে ছিল স্পেন। কী ভাবে বিপক্ষকে পাসের বন্যায় ভাসিয়ে দিয়েছে। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে স্লোভাকিয়ার বিরুদ্ধে ৫-০ জয়ের পরে আমার উদ্বেগ কিছুটা দূর হয়েছিল।

Advertisement

ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচটাই আমি এখনও পর্যন্ত এই ইউরোয় স্পেনের সেরা বলে মনে করি। কারণ, কোপেনহাগেনের ওই দ্বৈরথেই মোরাতাদের লড়াকু মানসিকতার প্রমাণ পেয়েছিলাম। নক-আউট পর্বে লড়াই সব সময়ই কঠিন হয়। এই ধরনের ম্যাচে একটা ভুল দলের আত্মবিশ্বাস শেষ করে দিতে পারে। ম্যাচের ২০ মিনিটে গোলরক্ষক উনাই সিমোনের মারাত্মক ভুলে স্পেন পিছিয়ে পড়ার পরে অনেকেই আশা ছেড়ে দিয়েছিল। আমার পরিচিতদের কেউ কেউ তো টেলিভিশন বন্ধই করে দিয়েছিল। মনে করেছিল, গোল করার কেউ নেই। স্পেনের পক্ষে ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন। ওদের মতে স্লোভাকিয়ার বিরুদ্ধে পাঁচ গোলে জয়টা ছিল অঘটন। ক্রোয়েশিয়ার রক্ষণ অনেক বেশি শক্তিশালী। দীর্ঘ দিন স্পেনের ফুটবলের সঙ্গে জড়িত থাকার সুবাদে এনরিকের সম্পর্কে আমি খুব ভাল ভাবে জানি। অসম্ভব মনের জোর। প্রচণ্ড লড়াকু। অনেকটা জার্মানদের মতোই মানসিকতা। কন্যার দুঃখজনক মৃত্যুর পরে জাতীয় দলের কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছিল। সেই শোক সামলে আবার ফিরে এসেছে। এ রকম মনের জোর খুব কম মানুষেরই থাকে। তাই বারবার মনে হচ্ছিল, স্পেন ঘুরে দাঁড়াবেই।

ফ্রান্সের বিরুদ্ধে সুইৎজ়ারল্যান্ড কোচের রণনীতি ছিল রক্ষণ মজবুত করে প্রান্ত দিয়ে আক্রমণের ঝড় তোলা। বিপক্ষের পেনাল্টি বক্সের মধ্যে হ্যারিস সেফেরোভিচের উদ্দেশে বল ভাসিয়ে দেওয়া। এই ছকে খেলেও ওরা দু’গোল করেছিল। আমার মনে হয়, স্পেনের বিরুদ্ধেও একই রণকৌশল থাকবে ওদের। সেই সঙ্গে লক্ষ্য থাকবে লম্বা পাসে খেলা। যাতে পেদ্রি, রদ্রিরা মাঝমাঠের দখল নিতে না পারে। মোরাতা ও ফেরান তোরেসের জন্য পেতকোভিচ বিশেষ পাহারার ব্যবস্থা করলেও আমি অবাক হব না। সুইৎজ়ারল্যান্ড চাইবে ম্যাচটা টাইব্রেকারে নিয়ে যেতে। কারণ, আগের ম্যাচে কিলিয়ান এমবাপের শট বাঁচিয়েই দলকে শেষ আটের ছাড়পত্র এনে দিয়েছিল গোলরক্ষক ইয়ান সোমের।

সুইসদের পাতা ফাঁদে পা দিয়ো না এনরিকে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন