চুনী থেকে সৌরভ কাতর শোকে

ময়দানের সফল সংগঠক ও প্রশাসক বিশ্বনাথ দত্ত চলে গেলেন। বয়স হয়েছিল ৯২। বেশ কিছুদিন ধরেই শ্বাসকষ্টের রোগে ভুগছিলেন  ষাট থেকে আশি দশকের ফুটবল ও ক্রিকেটের এই কর্তা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৩০
Share:

বিদায়: শেষ যাত্রায় সিএবিতে প্রয়াত বিশ্বনাথ দত্তকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন সচিব অভিষেক ডালমিয়া ও অন্যেরা। সোমবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

ময়দানের সফল সংগঠক ও প্রশাসক বিশ্বনাথ দত্ত চলে গেলেন। বয়স হয়েছিল ৯২। বেশ কিছুদিন ধরেই শ্বাসকষ্টের রোগে ভুগছিলেন ষাট থেকে আশি দশকের ফুটবল ও ক্রিকেটের এই কর্তা। শনিবার থেকেই তাঁর শ্বাস কষ্ট বাড়ছিল। সোমবার ভোর চারটে পাঁচ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। দু’বছর আগে তাঁর স্ত্রী বিয়োগ হয়। রেখে গেলেন এক ছেলে ও মেয়েকে। প্রয়াত বিশ্বনাথবাবুর ছেলে সুব্রত দত্ত বর্তমানে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট।

Advertisement

এ দিন সকালে তাঁর মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বনাথবাবুর ভবানীপুরের বাড়িতে চলে আসেন বহু মানুষ। সাংসদ, বিধায়ক, মন্ত্রী এবং ময়দানের ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান-সহ বিভিন্ন ক্লাবের কর্তারাও এসেছিলেন শ্রদ্ধা জানাতে। মিলান থেকে শোকবার্তা পাঠান মুখ্যমন্ত্রী। ফোনও করেন। ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের পক্ষ থেকেও দুঃখ প্রকাশ করে শোকবার্তা এসেছে। দুপুরে প্রয়াত কর্তার মরদেহ তাঁর বাড়ি থেকে যায় পারিবারিক ক্লাব ময়দানের জর্জ টেলিগ্রাফ তাঁবুতে। এর পর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় আই এফ এ অফিস হয়ে সি এ বি-তে। রাজ্যের ক্রীড়া দফতরের প্রতিমন্ত্রী ও ক্রিকেটার লক্ষ্মীরতন শুক্ল, প্রাক্তন ক্রিকেটার সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রণব রায় এসেছিলেন শ্রদ্ধা জানাতে। তবে অলোক মুখোপাধ্যায়, রঞ্জন ভট্টাচার্য ছাড়া কোনও ফুটবলারকে দেখা যায়নি।

সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এখন পুণেয়। সেখান থেকে তিনি বলেছেন, ‘‘বিশ্বনাথ দত্ত ছিলেন দক্ষ সংগঠক। তাঁর জায়গা পূরণ হওয়ার নয়। যখন জাতীয় অনূর্ধ্ব ১৯ দলের হয়ে খেলার সুযোগ পেয়েছিলাম তখন থেকেই ওনার সঙ্গে যোগাযোগ। গত তিন বছর সি এ বি-র প্রেসিডেন্ট থাকার সুবাদে তা আরও ঘনিষ্ঠ হয়েছে।’’ বিশ্বনাথবাবুর জীবদ্দশায় তাঁর নামে গ্যালারি তৈরি হয়েছে সিএবি-তে। সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে সৌরভ বলেছেন, ‘‘আমি প্রেসিডেন্ট থাকার সময় ওঁর নামে গ্যালারি তৈরি করতে পেরেছি বলে গর্ব অনুভব করছি।’’ সৌরভের পাশাপাশি সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলছিলেন, ‘‘উনি শুনতেন বেশি বলতেন কম।’’ নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে রঞ্জি ট্রফি জয়ী বাংলা দলের অধিনায়ক বলছিলেন, ‘‘দলীপ ট্রফির ম্যাচে মদনলালের বলে পলাশ নন্দী আউট হয়ে ফেরার সময় কিছু দর্শক পলাশকে থুতু দিচ্ছিল। আমরা তাদের দিকে তেড়ে গিয়েছিলাম। আমাকে এবং পলাশকে সাসপেন্ড করেছিল সিএবি। এক বছরের জন্য। পরে বিশ্বনাথবাবু ডেকে নিয়ে আলোচনার পর শাস্তি তুলেও দেন। সে বারই আমি জাতীয় শিবিরে ডাক পাই।’’

Advertisement

কিংবদন্তি ফুটবলার চুনী গোস্বামী বলছিলেন, ‘‘ক্রিকেট এবং ফুটবল দুটো খেলাই আমি খেলেছি। দু’জায়গাতেই উনি ছিলেন দক্ষ প্রশাসক।’’ আর ফুটবলার অলোক মুখোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘জর্জ টেলিগ্রাফে খেলতে গিয়েই পরিচয়। ওনার মতো মানুষকে নিয়ে একটা কথাই বলব, আদর্শ হিসাবে সামনে রাখতে পারেন যে কোনও কর্তা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন