মানসিকতায় সমস্যা, বলছেন বঙ্গ প্রাক্তনীরা

জের ওপর নিজেদেরই এই আরোপিত চাপ প্রসঙ্গে গোপাল বসু আরও বলছেন, ‘‘গোটা মরসুমটা তো আমরা কোনও বিপক্ষকে পাল্টা হুঙ্কার ছাড়িনি।

Advertisement

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৪:২৭
Share:

দায় নিলেন অধিনায়ক নিজে।

দিল্লির বিরুদ্ধে রঞ্জি সেমিফাইনালে বাংলার দ্বিতীয় ইনিংসে ৮৬ রানে অলআউট হওয়া নিয়ে এখনও বিস্ময়ের ঘোর কাটেনি প্রাক্তনদের।

Advertisement

বুধবার ফোনে গোপাল বসু বলছেন, ‘‘মনোজ, ডিন্ডা, শ্রীবৎস বেশ কয়েক বছর ধরে রঞ্জি খেলছে। কিন্তু মঙ্গলবার বাংলার ছিয়াশি রানে অলআউট হয়ে যাওয়ার ব্যাখ্যা আমার কাছে একটাই। বাংলা মহম্মদ শামির বোলিংয়ের জোরে ম্যাচে ফিরলেও ব্যাটসম্যানরা চাপটা নিজেদের ওপরই নিয়ে নেয়। তাই নভোদীপ-এর বোলিংয়ের সামনে মুখ থুবড়ে পড়তে হয়েছে।’’

নিজের ওপর নিজেদেরই এই আরোপিত চাপ প্রসঙ্গে গোপাল বসু আরও বলছেন, ‘‘গোটা মরসুমটা তো আমরা কোনও বিপক্ষকে পাল্টা হুঙ্কার ছাড়িনি। তা হলে মনোজরা কেন দিল্লি ম্যাচের আগে ও সব কথা বলতে গিয়েছিল? এটাই তো চাপ বাড়িয়ে দেয় বাংলার উপরে।’’ বাংলার দ্বিতীয় ইনিংসের শুরু থেকেই যা দেখা গিয়েছিল। অভিমন্যু ঈশ্বরন তাঁর ক্যাচ পড়ার পরের বলেই একই ভাবে ব্যাট চালিয়ে উইকেট দিয়ে আসেন।

Advertisement

যা দেখে বাংলার রঞ্জিজয়ী প্রাক্তন ওপেনার প্রণব রায় বলছেন, ‘‘আমাদের ছেলেরা দ্বিতীয় ইনিংসে পরিকল্পনা মতো ১১২ রান লিড-এর মধ্যে দিল্লিকে আটকে রাখতে পেরে বোধহয় আত্মতুষ্টিতে ভুগেছিল। ব্যাটসম্যানদের প্রত্যেকেই হয়তো ভেবে নিয়েছিল যে সে একাই ম্যাচ বার করে দেবে।’’

আরও পড়ুন: প্রথম রঞ্জি ফাইনালের স্বপ্ন দেখছে বিদর্ভ

যা মানছেন বাংলা অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারিও। বুধবার তিনি বলছেন, ‘‘দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ের সময় আমরা তাসের ঘরের মতো হুডমুড়িয়ে ভেঙে পড়েছিলাম।’’ বাংলা অধিনায়ক সঙ্গে আরও বলেন, ‘‘ব্যাটিংয়ের সময় আমাদের দুই ব্যাটসম্যানের দিকে আগ্রাসী মেজাজে তেড়ে এসে আম্পায়ারের কাছে বার বার আবেদন করছিল দিল্লির ক্রিকেটাররা। ঈশ্বরন বাংলা দলে নিয়মিত হলেও বেশি অভিজ্ঞ নয়। ওই সময় ওর মনে কী চলছিল তা হয়তো ও নিজে বলতে পারবে। তবে এটা ঠিক দিল্লির ‘মাইন্ড গেম’-এর সামনে আমরা দাঁড়াতে পারিনি।’’

প্রণব রায়ও মনে করছেন, দিল্লির বিরুদ্ধে সেমিফাইনাল জিততেই হবে, এই চাপটাই বেশি করে কাজ করেছে ব্যাটসম্যানদের সামনে। তাই এই ব্যাটিং বিপর্যয়। প্রাক্তন বাংলা ক্রিকেটার বলছেন, ‘‘কেউ কেউ আমাদের ছেলেদের টেকনিক নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। কিন্তু আমি সেই দলে পড়ছি না। বরং বলব অপেশাদারিত্ব দেখিয়ে ব্যাটসম্যানরা অহেতুক তাড়াহুড়ো করতে গিয়েই বিপদ ডেকে এনেছিল প্রথমে। মিডল অর্ডারে মনোজ বা সিনিয়রদের কেউ দাঁড়িয়ে গেলেই এই সমস্যা কাটিয়ে ফিরে আসা যেত। কেউ একজন পঞ্চাশ ওভার খেলে দিতে পারলেই এই চাপ কেটে যেত। সেটা হয়নি বলেই ছিয়াশিতে অলআউট হতে হয়েছে।’’

বাংলা শিবির অবশ্য ম্যাচে হওয়া সব ভুলভ্রান্তি নিয়ে পর্যালোচনা করেই বুধবার সারা দিন কাটাল। কোচ সাইরাজ বাহুতুলে এ দিন সকালেই হোটেল ছেড়ে মুম্বইয়ের বাড়িতে ফিরে গেলেন। বাংলা দলও মাঝরাতে পুণে ছেড়ে কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেয়।

তার আগে দুপুরে অধিনায়ক মনোজ বলছিলেন, ‘‘গৌতম গম্ভীর আর হিম্মত সিংহের ক্যাচ পড়েছে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে। তা ছাড়া দুই ইনিংসে আমরা ব্যাটিংয়ে অজস্র ভুল করেছি। দ্বিতীয় ইনিংসে দাঁড়াতেই পারিনি। তাই এই বিপর্যয়।’’

এই বিপর্যয়ের দিনেও অবশ্য দিল্লির কোচ ভাস্কর পিল্লাইকে ফের এক হাত নেন মনোজ। বলেন, ‘‘শুনলাম উনি বলেছেন, কেন আমরা টস জিতে ব্যাটিং নিয়েছিলাম। তা দেখে উনি নাকি অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। তা হলে আমরা যখন প্রথম ইনিংসে তিন উইকেটে ২০০ ছিলাম, তখন তো অবাক হননি। আসলে কী জানেন, জিতে গেলে অনেকেই অনেক কিছু বলে থাকে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন