বাংলার দ্বিতীয় ফুটবলের শহরে ডার্বির আবেগ কি হারিয়ে গেল?
আই লিগের গুরুত্বপূর্ণ ডার্বি ম্যাচ রবিবার। যে জিতবে সেই কয়েকধাপ এগিয়ে যাবে খেতাবের দিকে। এই আবহে ম্যাচ শুরু হতে বাকি আর বাহাত্তর ঘণ্টা। অথচ শিলিগুড়ি কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের বাইরে সেই লাইন কোথায়? সেই লম্বা লাইন, যা প্রথম পর্বের ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ম্যাচের ক্যানভাস রঙিন করে তুলেছিল। কিন্তু শুক্রবার রাত পর্যন্ত যা খবর তাতে পঁচিশ হাজারের মধ্যে সাত হাজার মাত্র টিকিট বিক্রি হয়েছে। তার মধ্যে নব্বই শতাংশ লাল-হলুদ সমর্থকরা কিনেছেন। মোহনবাগান এই ম্যাচ সংগঠনের পুরো দায়িত্বটা ছেড়ে দিয়েছে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের হাতে। তাদের কর্তারা অবশ্য আশাবাদী, শনি ও রবিবার সকালে সব টিকিট বিক্রি হয়ে যাবে। তবে রবিবার রাতের ম্যাচ বলে কলকাতা থেকে দু’তরফেরই সমর্থকরা আসছেন কম। যা আগের দুটো ডার্বি ম্যাচে হয়নি। অনেকে আবার বলছেন, পাহাড়ের কোলে এই শহরে ইস্টবেঙ্গলের সমর্থক বেশি। ট্রেভর মর্গ্যানের টিমের পরপর হার দেখে তাঁরা এতটাই বিরক্ত যে মাঠমুখো হচ্ছেন না।
ঘটনা যাই হোক কলকাতায় অনুশীলন করে সনি নর্দে, ওয়েডসন আনসেলমে-রা পৌঁছে গেলেন শিলিগুড়িতে। দু’ঘণ্টার তফাতে দু’রকম মুখাবয়ব নিয়ে। সঞ্জয় সেনের টিমের সমর্থকরা ভিড় করেছিলেন টিম হোটেলের সামনে। বিশাল পতাকা, বাইক মিছিল করে সেবক মোড় থেকে তাঁরা নিয়ে এলেন টিমকে। গেটে বড় ব্যানারে লেখা ছিল, ‘গ্যাং অব ওয়ারিয়ার্স’ সঙ্গে পুরো মোহনবাগান টিমের ছবি। আর ইস্টবেঙ্গল টিমকে আনতে হ্যান্ড মাইক হাতে বিমানবন্দরেই চলে গিয়েছিলেন একদল সমর্থক। তবে আগের দু’টো ডার্বির তুলনায় কিছুই নয়।
সঞ্জয় সেন আর ট্রেভর জেমস মর্গ্যানের শরীরী ভাষাতেও দেখা গেল বিস্তর তফাত। কথাতেও। টিম বাসে ওঠার আগে মোহনবাগান কোচ বললেন, ‘‘ডার্বি জিতলেই খেতাব জেতা যাবে মনে করি না। দিল্লি বহুদূর। তবে এই ম্যাচটা জিততেই হবে এগোতে গেলে।’’ আর ট্রেভর মর্গ্যানকে বিমানবন্দরে দেখে মনে হচ্ছিল ক্লাব সচিবের কড়া চিঠিতে বেশ বিরক্ত এবং বিমর্ষ। মেহতাব হোসেন, ওয়েডসন, উইলিস প্লাজাদের থেকে অনেকটা দূরে এক কোণে চেয়ারে বসেছিলেন মর্গ্যান। সহকারী ওয়ারেন হ্যাকেটকে নিয়ে। বলে দিলেন, ‘‘সচিবের চিঠিতে ফুটবলারদের কোনও উপকার হবে বলে মনে করি না।’’ আর টিম হোটেলে দাঁড়িয়ে ব্রিটিশ কোচের মন্তব্য, ‘‘এই ম্যাচটা না জিততে পারলে আমরা খেতাব থেকে ছিটকে যাব। সনি ভাল খেলছে। কিন্তু ওদের পুরো টিমটাই ভাল খেলছে।’’ এরই মধ্যে মেহতাব হোসেন বলে দিয়ে গেলেন, ‘‘এই ম্যাচটা না জিতলে আর ডার্বি খেলব না।’’