কেউ যেন বলতে না পারে তারকা বলেই সুনীল খেলে যাচ্ছে

ভাইচুং ভুটিয়া, আই এম বিজয়ন-কে পিছনে ফেলে এই মুহূর্তে আই লিগে ভারতীয়দের মধ্যে সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনি। নতুন কীর্তি নিয়ে মোবাইল ফোন থেকে আনন্দবাজার-কে একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন সুনীল ছেত্রী।প্রত্যেকটা ম্যাচেই আমি নিজেকে প্রমাণ করার চ্যালেঞ্জ নিয়ে নামি। তা দেশের জার্সিতে হোক, অথবা ক্লাবের হয়ে। লক্ষ্য থাকে গোল করা। রেকর্ডের কথা কখনও মাথায় রাখি না।

Advertisement

শুভজিৎ মজুমদার

শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:৪২
Share:

ভারতীয় ফুটবলে সর্বোচ্চ গোলদাতা এখন সুনীল ছেত্রী। আই লিগে বেঙ্গালুরুর আশা ছাড়েননি।-ফাইল চিত্রSunil Chhetri

• রেকর্ড নিয়ে কখনও ভাবিনি

Advertisement

প্রত্যেকটা ম্যাচেই আমি নিজেকে প্রমাণ করার চ্যালেঞ্জ নিয়ে নামি। তা দেশের জার্সিতে হোক, অথবা ক্লাবের হয়ে। লক্ষ্য থাকে গোল করা। রেকর্ডের কথা কখনও মাথায় রাখি না। আমার দর্শন হচ্ছে— তুমি যদি নিজের কাজটা ঠিকঠাক করতে পারো, তা হলে রেকর্ডই তোমার কাছে আসবে।

• রেকর্ডের সামনে, জানতেন না

Advertisement

আইজল এফসি-র বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে আমার মাথাতেই ছিল না যে, রেকর্ডের সামনে আছি। জানতাম না, একটা গোল করলেই ভেঙে ফেলব ভাইচুং (ভুটিয়া) ভাইয়ের ৮৯ গোলের নজির। ম্যাচের পর সতীর্থরা অভিনন্দন জানানোতেই বুঝতে পারলাম, আই লিগে ভারতীয় ফুটবলারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গোলের (৯০) মালিক এখন আমি।

• প্রেরণা সেই ভাইচুং

ফুটবল যখন শুরু করেছিলাম, ভাইচুং ভাই ছিল আমার প্রেরণা। স্বপ্ন দেখতাম ওর মতো আমিও একদিন জাতীয় দলের অধিনায়ক হব। চার বছর আগে ভাইচুং ভাইকে টপকে জাতীয় দলের সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছিলাম। শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে নেপালের বিরুদ্ধে সেই ম্যাচের পর আনন্দে আমাকে জড়িয়ে ধরেছিল ও। এ বার হয়তো ব্যস্ততার কারণেই ভাইচুং ভাই সঙ্গে সঙ্গে শুভেচ্ছা জানাতে পারেনি। তবে আমি নিশ্চিত, যে কোনও দিন ওর শুভেচ্ছাবার্তা চলে আসবে।

আরও পড়ুন: বাউন্সের ভবিষ্যদ্বাণী উড়িয়ে দিচ্ছে অস্ট্রেলিয়া

• সাফল্যের রহস্য শৃঙ্খলা

আবার বাবা খড়্গ ছেত্রী ছিলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীতে। ফলে প্রচণ্ড শৃঙ্খলা ও অনুশাসনের মধ্যে দিয়ে বড় হয়েছি আমি ও আমার বোন। বাবা বলেন, ‘‘সব সময় মাটিতে পা রেখে চলার চেষ্টা করো। বিনয়ী হও। সাফল্য যেন তোমার মাথা না ঘুরিয়ে দেয়।’’ বাবার এই পরামর্শটা কখনও অমান্য করিনি। কখনও ট্রেনিংয়ে ফাঁকি দিই না। রাত জেগে পার্টি করি না। শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবনযাপন এবং কোচ ও সতীর্থদের সহযোগিতাই আমার সাফল্যের নেপথ্যে।

• ফিটনেসে বাড়তি গুরুত্ব

আমার বয়স এখন ৩২। এই বয়সে ফর্ম ধরে রাখার পাশাপাশি নিজেকে চোটমুক্ত ও ফিট রাখাটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। যে কারণে জিমে অনেক বেশি সময় কাটাতে হচ্ছে। তার জন্য আমার কোনও আক্ষেপ নেই। তা ছাড়া আরও একটা বিষয় আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। কেউ যেন না বলতে পারে, তারকা বলেই খেলার সুযোগ পাচ্ছে সুনীল। আমি নিজের যোগ্যতায় খেলতে চাই। কখনও বোঝা হতে চাই না।

• বেঙ্গালুরু ঘুরে দাঁড়াবেই

তিন বছর হল আমরা আই লিগে খেলছি। তার মধ্যে দু’বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। গত বছর এএফসি কাপের ফাইনালও খেলেছি। কিন্তু চলতি আই লিগে দু’টো ম্যাচ হেরেছি। ড্র করেছি চারটেতে। অনেকেই হয়তো মনে করছেন, বেঙ্গালুরু এফসি খেতাবের দৌড় থেকে ছিটকে গিয়েছে। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, আমরা ঘুরে দাঁড়াবই। এই মুহূর্তে লিগ টেবলের তিন নম্বরে বেঙ্গালুরু এফসি। এত তাড়াতাড়ি হাল ছাড়ছি না।

• মরসুম শেষ হলেই বিয়ে

সোনমের (প্রাক্তন ফুটবলার সুব্রত ভট্টাচার্যের মেয়ে) সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের প্রেম। আমরা ঠিক করেছি এ বছরেই বিয়েটা সেরে ফেলব। তবে সেটা মরসুম শেষ হওয়ার পরেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন