রিওতে চাপ নিতে পারেনি দল: অল্টম্যান্স

তাঁর হাত ধরেই যেন নবজাগরণ ঘটছে ভারতীয় হকিতে। বেশ কিছু ভাল পারফরম্যান্সের সৌজন্যে ২০২০ টোকিও অলিম্পিক্স পর্যন্ত চুক্তি বাড়ানো হয়েছে তাঁর। রিও অলিম্পিক্স থেকে আগামী বছরের বিশ্বকাপ। বর্তমান অধিনায়ক সৃজেশ থেকে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম। ভারতীয় হকির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আনন্দবাজার-কে ফোনে সাক্ষাৎকার দিলেন ভারতীয় কোচ রোনাল্ট অল্টম্যান্স।তাঁর হাত ধরেই যেন নবজাগরণ ঘটছে ভারতীয় হকিতে। বেশ কিছু ভাল পারফরম্যান্সের সৌজন্যে ২০২০ টোকিও অলিম্পিক্স পর্যন্ত চুক্তি বাড়ানো হয়েছে তাঁর।

Advertisement

সোহম দে

শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৭ ০৩:৩৭
Share:

গুরু: হকিতে নতুন স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছেন কোচ অল্টম্যান্স।

ভারত কি ফিরছে সোনার দিনে

Advertisement

আমার তো মনে হয় আস্তে আস্তে ভারতও পাল্লা দিচ্ছে সেরা দলগুলোর সঙ্গে। র‌্যাঙ্কিংয়েও ভারত প্রথম ছয়ের মধ্যে আছে। শেষ কয়েকটা টুর্নামেন্টেও আমাদের পারফরম্যান্স ভাল ছিল। বিশেষ করে আজলান শাহ কাপে। রাতারাতি কোনও দলকে পাল্টে ফেলা সম্ভব নয়। কিন্তু ভারতে এই নতুন প্রজন্মে এমন অনেক প্রতিভা আছে, যারা আবার হকিতে সোনার দিন ফেরাতে পারবে। তবে আমাদের আরও বেশি করে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট জিততে হবে।

ভারতকে ফিট রাখার মন্ত্র

Advertisement

এটা ঠিক যে, হকির সার্কিটে ভারতকে এখন ফিট দলগুলোর মধ্যে একটা ধরা হয়। আমি নিজেও অনেক চেষ্টা করি যাতে নির্দিষ্ট একটা পদ্ধতি মেনে চলে সবাই। ডায়েট তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। এমন খাবার, যা শরীরের ক্ষতি করে সেগুলো বাদ রাখি। তার সঙ্গে জিম আর কার্ডিও তো আছেই। ফিটনেস না থাকলে নেদারল্যান্ডস, আর্জেন্তিনার মতো দলের বিরুদ্ধে জেতা কঠিন।

রিও অলিম্পিক্সে ব্যর্থতা

অতিরিক্ত চাপের জন্যই আমাদের ফল খারাপ হয়েছে। অলিম্পিক্সে ভারতের দল নিয়ে প্রত্যাশা ছিল অনেক বেশি। কানাডার বিরুদ্ধে ড্র করা একদমই মেনে নেওয়া যায় না। আমাদের সেই ম্যাচটা জেতা উচিত ছিল। তা হলে হয়তো নকআউটের ছবিটা অন্য হতো। কোয়ার্টার ফাইনালেও তো আমরা খুব একটা খারাপ খেলিনি। শুরুটা বেশ ভাল করেছিলাম বেলজিয়ামের বিরুদ্ধে। প্রথমে গোলও করেছিলাম। কিন্তু চাপটা রাখতে পারল না দল। তিন গোল খেয়ে বসল।

ভারতে হকি বিশ্বকাপ

নিজেদের দেশে আমাদের দল খেলছে। আমার কাছে এটা একদমই চাপের নয়। বরং নিজেদের মাঠে খেলতে পারলে অ্যাডভ্যান্টেজ থাকে অনেক। ভারতের জুনিয়র হকি দল যেমন কয়েক দিন আগেই বিশ্বকাপ জিতল। তা-ও আবার ঘরের মাটিতে। তা হলে আমরা পারব না কেন? জুনিয়রদের পারফরম্যান্স আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে। ঘরের মাঠে খেললে উদ্বুদ্ধ থাকবে সবাই। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগও থাকবে।

বিশ্বকাপের ফেভারিট

সে রকম ভাবে কোনও একটা দলের নাম বলা কঠিন। অনেক দল আছে যারা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দাবিদার। সবার প্রথম বলব আর্জেন্তিনা। যারা অলিম্পিক্সে সোনা জিতল। সেই দলের অধিকাংশ সদস্যই হয়তো আসবে বিশ্বকাপে। নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রেলিয়া তো আছেই। এরা সবাই ধারাবাহিক দল। তাই বেশ জমজমাট হবে বিশ্বকাপ।

দলের শক্তি

পি আর সৃজেশ দলের আদর্শ নেতা। ও জানে কী ভাবে বাকিদের উদ্বুদ্ধ করতে হয়। গোলকিপার হিসেবেও ও খুব ধারাবাহিক। কিন্তু ভারতীয় হকি দলে আরও ভাল ভাল খেলোয়াড় আছে। যেমন মনপ্রীতের মতো ভাল মিডফিল্ডার আছে। আকাশদীপ গোলটা ভাল চেনে। হরমনপ্রীত সিংহও তরুণ প্রতিভা। এই ভারতীয় দলে তারুণ্য আর অভিজ্ঞতার মিশ্রণটা দারুণ।

আরও পড়ুন:

সূর্যাস্তের শোভা দেখে নতুন সূর্যোদয়ের স্বপ্ন

ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অবস্থা

জুনিয়র বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়া দলে অনেক ভাল ভাল হকি খেলোয়াড় আছে। আমি কারও নাম ধরে বলব না। কিন্তু অনেকে আমার পরিকল্পনায় ঢুকে পড়েছে। পরের বিশ্বকাপেই এদের কাউকে নেব কি না, এখনই হয়তো বলতে পারব না। তবে এটুকু বলতে পারি যে, ভারতীয় হকির আগামী প্রজন্মে বেশ ভাল ভাল ভাল খেলোয়াড় আছে।

তাঁর পছন্দের স্টাইল

ম্যাচ অনুযায়ী নির্ভর করে। আক্রমণাত্মক দলের বিরুদ্ধে সব সময় রক্ষণ সামলে তারপর এগোতে হয়। আবার যাদের বিরুদ্ধে শুরু থেকে আক্রমণ করা যায়, সেটা করতে হয়। নির্দিষ্ট একটা প্ল্যান মেনেই শুরু করতে হয়। কিন্তু সব সময় প্ল্যান বি-ও হাতে রাখতে হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন