হতাশ: হাঁটুতে আইসপ্যাক লাগিয়ে মাঠের বাইরে বসে সনি নর্দে। বৃহস্পতিবার দুপুরে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
প্রশ্ন: রবিবারের ডার্বি খেলবেন?
সনি: শনিবারের আগে বলতে পারব না, খেলছিই। আমি তো চেষ্টা করবই অন্তত কুড়ি-পঁচিশ মিনিট মাঠে থাকতে। কিন্তু এখনও তো বল মারতে পারছি না। পাস দিতে গেলেও ব্যথা লাগছে। সাঁতার কাঁটতে গেলেও। জানি না কী হবে? তবে এটা বলছি, এখনও পর্যন্ত আমি খেলার জায়গায় নেই। মাঠে নেমে যদি কর্নার বা ফ্রি কিক-ই না মারতে পারি, তা হলে নেমে লাভ কী? নেরোকা ম্যাচে তো নেমেছিলাম, কিছু করতে পেরেছি? একটা সেট পিসও তো মারতে পারিনি।
প্রশ্ন: কোচ-কর্তারা একান্তে বলছেন, আপনি ডার্বি খেলবেন?
সনি: ওঁরা সবাই অবুঝ। আমার লিগামেন্টে চোট। যে চোটের জন্য জ্লটান ইব্রাহিমোভিচকেও সম্প্রতি ছয় মাস মাঠের বাইরে থাকতে হয়েছে। কোচ ও কর্তাদের বলেছি, আপনারা চাইলে আমি ইঞ্জেকশন নিয়ে ডার্বিতে নামব। খেলার ঝুঁকি নেব। কিন্তু তার জন্য আই লিগের বাকি আটটা ম্যাচ যদি খেলতে না পারি, দোষ দেবেন না। ইঞ্জেকশনের পরের প্রভাব আমি জানি।
প্রশ্ন: কিন্তু সমর্থকরা তো আপনার দিকে তাকিয়ে? তাদের অনেকে আবার প্রশ্ন তুলছে, শেষ চার ম্যাচ খেলেননি, যদি ডার্বিতেও না খেলতে পারেন তা হলে আপনার জন্য আড়াই কোটি টাকা খরচ করে লাভ কী?
সনি: বিশ্বের সব দেশের সমর্থকের থেকে কলকাতার সমর্থকরা আলাদা। তারা কিছুই বুঝতে চায় না। সনি মাঠে নামুক সবাই চায়। আমি টাকা নিচ্ছি, না খেললে তো প্রশ্ন তো উঠবেই। সত্যি তো, আই লিগে পাঁচটা ম্যাচ খেলেছি। কিন্তু আমার পরিস্থিতিটাও তো বুঝতে হবে। যদি নেমে না খেলতে পারি তা হলেও সমালোচনা হবে। আর মাঠে না নামলেও সবাই বলবে, টাকা নিয়েও খেলছে না। আমি যে কী অবস্থায়, কাকে বোঝাব।
(থেমে গেলেন। তারপর মাথা নিচু করলেন। রুদ্ধ গলায় বললেন)
টিমের জেতা দরকার, অথচ আমি গ্যালারিতে। এটা যে কী যন্ত্রণার আমিই জানি। আমার স্ত্রী-ও প্রতিদিন প্রার্থনা করছে যাতে মাঠে ফিরি। ওরও ইচ্ছে আমি ডার্বিতে খেলি। কী বলব! মোহনবাগানে এত খারাপ সময় আমার কখনও যায়নি।
প্রশ্ন: নতুন আসা লেবানন স্ট্রাইকার আক্রম মোগরাভিকে কেমন লাগল?
সনি: অনুশীলনে খারাপ লাগছে না। কিন্তু ডার্বি তো একজন ফুটবলারের আসল পরীক্ষা দেওয়ার জায়গা। বিশাল চাপ নিয়ে খেলতে হয়। দেখি কী করে?
প্রশ্ন: ডুডু ওমাগবেমি আসায় কি ইস্টবেঙ্গল আরও শক্তিশালী হয়ে গেল?
সনি: অবশ্যই শক্তিশালী হয়েছে। ডুডু পজিটিভ স্ট্রাইকার। গোল চেনে। ওদের মাঝমাঠটাই আসল শক্তি। আমনা-কাতসুমি-রফিক, খুব ভাল খেলছে।
প্রশ্ন: ৯ ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট। মোহনবাগানের এমন দুর্দশার কারণ?
সনি: বেশ কিছু ভাল ফুটবলার না থাকার মাশুল দিতে হচ্ছে। আমি যে ক’বছর খেলছি কখনও লিগে এমন অবস্থা হয়নি। কাতসুমি এবং ফিজিও গার্সিয়াকে ছেড়ে দেওয়া ভুল হয়েছে। জেজে, বলবন্ত সিংহদের মিস করছি।
প্রশ্ন: আপনি আর ইউসা কানওয়াকি ফিট থাকলে ডার্বিটা অন্য রকম হত?
সনি: (মুখ নিচু করে) সে তো হতই। দেখুন, মিনার্ভা বা ইস্টবেঙ্গল আমাদের থেকে অনেক এগিয়ে লিগ টেবলে। নেরোকাও উঠে আসছে। তবুও বলছি, লিগ ওপেন রয়েছে। আমরা ডার্বি জিততে পারলে একটা চেষ্টা করা যাবে। কিন্তু চোট সারিয়ে খেলতে পারব কি না সেটাই তো বুঝতে পারছি না। চোটই এ বার ডুবিয়ে দিল।