ম্যাকগ্রেগর বনাম মেওয়েদারের লড়াই তো স্রেফ টাকার খেলা, বলছেন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন বক্সার আমির খান

বক্সিং রিংয়ে বিজেন্দ্রকে একবার চান আমির

২০০৮ অলিম্পিক্সে ভারতের হয়ে ব্রোঞ্জ। পদক এসেছে কমনওয়েলথ, এশিয়ান গেমসেও। পেশাদার দুনিয়ায় লড়ছেন সুপার মিডলওয়েটে। বয়স ৩১। উচ্চতা ৬ ফুট। নাম বিজেন্দ্র সিংহ।

Advertisement

কৌশিক দাশ

শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৭ ০৪:০৫
Share:

চ্যালেঞ্জ: বিজেন্দ্র সিংহকে ব্লকবাস্টার লড়াইয়ে চান পাক বংশোদ্ভূত আমির।

মাত্র ১৭ বছর বয়সে গ্রেট ব্রিটেনের হয়ে অলিম্পিক্সে পদক। এর পরে লাইট ওয়েল্টারওয়েটে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত এই বক্সার লড়েছেন ওয়েল্টারওয়েটেও। বয়স ৩০। উচ্চতা ৫ ফুট সাড়ে আট ইঞ্চি। নাম আমির খান।

Advertisement

২০০৮ অলিম্পিক্সে ভারতের হয়ে ব্রোঞ্জ। পদক এসেছে কমনওয়েলথ, এশিয়ান গেমসেও। পেশাদার দুনিয়ায় লড়ছেন সুপার মিডলওয়েটে। বয়স ৩১। উচ্চতা ৬ ফুট। নাম বিজেন্দ্র সিংহ।

এই দুই বক্সারের মেগাফাইট কি দেখা যেতে পারে? প্রথম জনের কথা মানলে, অবশ্যই যেতে পারে। আজ, শুক্রবার থেকে শুরু আট টিমের, তিন দিনের সুপার বক্সিং লিগের (যা দেখা যাবে শুধু সোনি ইএসপিএন, সোনি ইএসপিএন এইচ ডি-তে) জন্য ভারতে এসেছেন আমির খান। মুম্বই থেকে ফোনে আনন্দবাজার-কে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় তিনি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন বিজেন্দ্রকে।

Advertisement

আরও পড়ুন:সুব্রতদের ডাক্তারকে ফিরতে বলা হল

প্রশ্ন: আপনারা টিম বক্সিং টুর্নামেন্ট চালু করছেন ভারতে। আইপিএলের সাফল্য কি এর পিছনে কাজ করছে?

আমির: দেখুন, ভারতের জনসংখ্যা বিশাল। এখানে বক্সিংও খুব জনপ্রিয়। আর আইপিএল দেখিয়ে দিয়েছে, টিম স্পোর্টস কতটা সফল হতে পারে ভারতে। আমাদের মাথায় সেটা ছিল। আমি নিশ্চিত, বক্সিংও জনপ্রিয় হবে।

প্র: বাহুবলী বক্সারস, দিল্লি গ্ল্যাডিয়েটরস, হরিয়ানা ওয়ারিয়র্স— এ সব টিমের সঙ্গে তো বলিউড জড়িয়ে গিয়েছে। বলিউড তারকারা টিম কিনেছেন। প্রচারে ফিল্মস্টারদের নামটাও তো কাজে আসছে।

আমির: সেটা আসছে। তবে শুধু গ্ল্যামার বাড়াতেই চাই না আমরা। চাই, ভারত থেকে চ্যাম্পিয়ন বক্সার তুলে আনতে। এ দেশে প্রচুর প্রতিভা আছে। আমরা তাদের সুযোগ দিতে চাই। কে বলতে পারে, এখান থেকে এক দিন অলিম্পিক্স চ্যাম্পিয়ন, বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন বক্সার পাবে না ভারত।

প্র: ভারতীয় বক্সিংয়ের কথায় বিজেন্দ্র সিংহের নামটা উঠবেই। বিজেন্দ্র নিয়ে আপনার ধারণা কী রকম?

আমির: কোনও সন্দেহ নেই, বিজেন্দ্র খুব ভাল বক্সার। প্রতিভা আছে। পরিশ্রম করতে ভালবাসে। আমি ওকে শ্রদ্ধা করি। ও যদি ফোকাসটা ঠিক রাখে, অনেক দূর যাবে।

প্র: বিজেন্দ্রর একটা প্লাস পয়েন্ট বাছতে বললে কী বাছবেন?

আমির: শক্তি। বিজেন্দ্র খুব শক্তিশালী।

প্র: আপনারা দু’জনে এক ওয়েট ক্যাটেগেরির নন। ওজন আলাদা। কিন্তু তা সত্ত্বেও আমির খান বনাম বিজেন্দ্র সিংহ— এই লড়াইটা দেখা যায় না?

আমির: কেন যাবে না? আমি নামকরা বক্সারদের সঙ্গে সব সময় লড়তে চাই। আর আপনাদের বিজেন্দ্র এখন তো ভালই নাম করেছে।

প্র: আপনি কি বিজেন্দ্রকে চ্যালেঞ্জ জানাবেন রিংয়ে নামার জন্য?

আমির: অবশ্যই জানাব। আমি তো বিজেন্দ্রকে এক বার রিংয়ে চাই।

প্র: কী মনে হয়, লড়াইটা হলে ব্যাপারটা দারুণ জনপ্রিয় হবে?

আমির: কী বলছেন? দুর্দান্ত লড়াই হবে একটা। এ তো শুধু আমির বনাম বিজেন্দ্র নয়। লড়াইয়ে তো ভারত বনাম পাকিস্তানের আঁচটাও থাকবে। আর যেখানে ভারত-পাকিস্তানের নাম জড়িয়ে যায়, সেটা তো বক্স অফিস হবেই।

প্র: আমির বনাম বিজেন্দ্র, এই লড়াইয়ে আপনার প্লাস পয়েন্ট কী, বিজেন্দ্ররই বা কী?

আমির: আমার ক্ষিপ্রতার সঙ্গে কিন্তু পাল্লা টানা সোজা নয়। আমার বিরুদ্ধে রিংয়ে নামলে প্রতিদ্বন্দ্বীরা টের পায়, স্পিড জিনিসটা কী। আমার প্লাস পয়েন্ট যদি বলেন, তা হলে বলব, ক্ষিপ্রতা, শক্তি এবং অভিজ্ঞতা।

প্র: আর বিজেন্দ্রর?

আমির: আগেই বলেছি, বিজেন্দ্র খুব শক্তিশালী বক্সার। ওর চেহারাটাও আমার চেয়ে বড়।

প্র: আর একটা বক্সিং ম্যাচের কথায় আসি। ফ্লয়েড মেওয়েদার বনাম কনর ম্যাকগ্রেগর...

আমির (থামিয়ে দিয়ে): ওটাকে বক্সিং বলছেন কেন? ওই লড়াইটা তো স্রেফ টাকার খেলা। খুব খারাপ লাগছে, গোটা দুনিয়া এই লড়াইটা নিয়ে মেতে আছে। এর কোনও মানেই নেই।

প্র: কেন বলছেন এ কথা?

আমির: কেন বলব না? ম্যাকগ্রেগর বক্সিংয়ের কী বোঝে? ও তো স্রেফ উ়ড়ে যাবে। মেওয়েদারকে আমি চিনি। ও খুব ভাল বক্সার। খুব চালাক। এটা মিক্সড মার্শাল আর্টস নয়। ম্যাকগ্রেগর জীবনে বক্সিং করেনি। মেওয়েদারের সামনে ওকে বোকা বোকা লাগবে।

প্র: আর একটা বিতর্কিত বিষয়ে আসি। গড়াপেটা। ক্রিকেটে হয়েছে, ফুটবলে হয়েছে, টেনিসে হয়েছে। বক্সিংয়ের নামও তো ভেসে ওঠে। আপনি কি বক্সিংয়ে কোনও দিন গড়াপেটার গন্ধ পেয়েছেন?

আমির: আপনারা যা-ই শুনে থাকুন, আমি বলব বক্সিংয়ে গড়াপেটা হয় না। কেন জানেন? রিংয়ে একটা ভুল করলে এক জন বক্সারের জীবন চলে যেতে পারে। সেই ঝুঁকিটা কে নেবে? ক্রিকেট, ফুটবল, টেনিসে কিন্তু মানুষের জীবন যায় না।

প্র: তা হলে বলছেন, বক্সাররা গড়াপেটা করার ঝুঁকি নেয় না?

আমির: কোনও প্রশ্নই নেই। ধরুন, আপনি গড়াপেটা করলেন। এ বার রিংয়ে আপনি প্রতিদ্বন্দ্বীকে সুযোগ দিলেন আপনাকে মারার। এ বার সেই ঘুসিটা মারাত্মক হয়ে যেতে পারে। ওই একটা ঘুসি আপনার জীবন কেড়ে নিতে পারে। তাই এ রকম ঝুঁকি কোনও বক্সার কোনও দিন নেবে না।

প্র: পুরনো প্রসঙ্গে ফিরে যাই। আমির খান বনাম বিজেন্দ্র সিংহ লড়াইটা তা হলে সত্যি দেখা যেতে পারে?

আমির: নিশ্চয়ই দেখা যেতে পারে। অবশ্যই দেখা যেতে পারে। ব্লকবাস্টার ফাইট হবে একটা। আর আপনি যদি সেই লড়াইয়ে আমাকে সমর্থন না করেন, তা হলে আপনাকে খুঁজতে আসব আমি (হাসতে, হাসতে)।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন