লড়াই: চাপ এড়াতে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন ঋদ্ধি। ফাইল চিত্র
লর্ডসে ব্যর্থ দীনেশ কার্তিক। ইংল্যান্ডে তৃতীয় টেস্টে তাঁকে বসিয়ে ঋষভ পন্থকে খেলানোর কথা ভাবা হচ্ছে। পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পেরে দ্বিতীয় টেস্টে মুখ থুবরে পড়েছে ভারতীয় দল। এ সবে হেলদোল নেই ভারতীয় টেস্ট দলের এক নম্বর উইকেট কিপার ঋদ্ধিমান সাহার! কাঁধে অস্ত্রোপচার করিয়ে সদ্য দেশে ফিরেছেন। কিন্তু তাঁর টেস্ট দলের সতীর্থরা ইংল্যান্ডে কী করছেন, কেমন খেলছেন, সে দিকে মন নেই ঋদ্ধির। জানালেন, সময় পেলে মাঝে মাঝে ক্রিকেট দেখছেন।
মাঠে ফিরতে এখনও অনেক সময় লাগবে তাঁর। নভেম্বরের আগে ক্রিকেটে ফেরার কোনও সম্ভাবনাই নেই। তার আগে এখন অন্তত তিন মাস ধরে কাঁধের শুশ্রুষা চলবে। জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে এক সপ্তাহ পর থেকেই শুরু হবে চোট সারিয়ে তাঁর কাঁধের জোর ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া। তার আগে ক্রিকেট থেকে নিজেকে দূরেই রাখছেন ঋদ্ধি। মঙ্গলবার রাতে ‘আনন্দবাজার’-কে বললেন, ‘‘টিভিতে ক্রিকেট খুব বেশি দেখা হচ্ছে না। যখন সময় পাচ্ছি দেখছি। বেশির ভাগ সময়টাই কাটাচ্ছি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। একজন সাধারণ মানুষের সময় যে ভাবে কাটে, সে রকমই।’’ ভারতীয় দলের পারফরম্যান্স নিয়েও কোনও মন্তব্য করতে চাইলেন না ঋদ্ধি। বোধহয় বোর্ডেরই নিষেধ রয়েছে। বললেন, ‘‘এই নিয়ে কোনও কথা বলতে চাই না। আসলে খেলাও তো সে ভাবে দেখছি না।’’
কাঁধের অস্ত্রোপচারের তিন সপ্তাহ পর থেকে আসল রিহ্যাব শুরু হবে বেঙ্গালুরুতে। তার আগে অবশ্য নিজেই কিছু রুটিন রিহ্যাব শুরু করে দিয়েছেন বাংলার টেস্ট তারকা। বললেন, ‘‘অস্ত্রোপচারের পরের দিন থেকেই রিহ্যাব শুরু হয়ে গিয়েছে আমার। এখন নিজেই কাঁধকে অল্পস্বল্প নড়াচড়া করানোর চেষ্টা করছি। যে ভাবে ডাক্তার বলে দিয়েছেন। হাল্কা ব্যথাও রয়েছে। বেঙ্গালুরুতে আসল রিহ্যাব হবে।’’
ইংল্যান্ডে এমন একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তাঁর কাঁধে অস্ত্রোপচার করেন, যিনি ইংল্যান্ডের এক অলিম্পিক পদকজয়ী বক্সারের জীবন ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। সেই ডা. লেনার্ড ফাঙ্ক সম্পর্কে বলেন, ‘‘উনি যেমন ভাল ডাক্তার, তেমনই ভাল মানুষ। অস্ত্রোপচারের আগে খুব যত্ন সহকারে আমাকে বোঝান, কাঁধে চোটটা ঠিক কী হয়েছে। কী ভাবে অস্ত্রোপচার করবেন। অস্ত্রোপচার হয়ে যাওয়ার পরে আমাকে সাহসও জুগিয়েছেন অনেক।’’ তবে ঠিক কত সময় লাগবে তাঁর স্বাভাবিক হতে, তা বলে দেননি। ঋদ্ধি বলেন, ‘‘ডাক্তার বলেছেন, এক একজনের ক্ষেত্রে এক এক রকম সময় লাগে। আমার শরীর কী ভাবে চিকিৎসায় সাড়া দেবে, তার উপর নির্ভর করছে সব কিছু।’’
তবে একেবারেই কোনও মানসিক চাপে নেই তিনি। জানালেন ঋদ্ধি। বললেন, ‘‘আমি যে সে রকম নই, যে সহজে ভেঙে পড়ে, তা তো জানেনই। যতটা পারছি স্বাভাবিক জীবন কাটানোর চেষ্টা করছি। মেয়ে, স্ত্রীর সঙ্গে সময় কাটালে মন এমনিতেই ভাল থাকে। তাই সেটাই বেশি করছি।’’ আসল লড়াইটা যে শুরু হবে বেঙ্গালুরুতে পৌঁছনোর পরে, তা অবশ্য স্বীকার করেই নিচ্ছেন বঙ্গ তারকা। স্টাম্পের পিছনে লড়াইয়ের চেয়েও বোধহয় বেশি কঠিন সেটা।