Football

পদ্মশ্রী ফেরত পাওয়ার আর আশা নেই, বলছে গোষ্ঠ পালের হতাশ পরিবার

বৃহস্পতিবার মোহনবাগানের সঙ্গে এটিকে-র ঐতিহাসিক চুক্তি হল। ভারতীয় ফুটবলে ঝড় উঠল সেই চুক্তি নিয়ে। গোষ্ঠ পালের পরিবারে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, তাঁরা এই সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। ক্লাব নিয়ে খোঁজখবরও রাখেন না।

Advertisement

কৃশানু মজুমদার

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২০ ১৬:৪৫
Share:

গোষ্ঠ পালের হারিয়ে যাওয়া পদ্মশ্রী আর পাওয়া যাবে না। জেনে গিযেছেন ছেলে নীরাংশু।

এটিকে-তে মোহনবাগান মিশে যাওয়ায় শেষ আশাটুকুও হারিয়ে ফেলেছে গোষ্ঠ পালের পরিবার। ২৮ বছর আগে ‘চাইনিজ ওয়াল’-এর পদ্মশ্রী, মূল্যবান সব ট্রফি, মানপত্র মোহনবাগান ক্লাবকর্তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। তার পর সে সব পদকের আর হদিশ মেলেনি।

Advertisement

থানা-পুলিশ করে কিছু মেডেল-ট্রফির ধ্বংসাবশেষ মাস কয়েক আগে কিংবদন্তি ফুটবলারের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। এটিকে-র সঙ্গে সংযুক্তির পরে বাকি পুরস্কারগুলোর খোঁজ যে আর পাওয়া যাবে না সে ব্যাপারে প্রায় নিশ্চিত গোষ্ঠ পালের ছেলে নীরাংশু পাল। কাঁদতে কাঁদতে আশি ছুঁই ছুঁই নীরাংশুবাবু বলছিলেন, “ক্লাবকর্তারা এখনই আর উচ্চবাচ্য করছেন না। মোহনবাগান ক্লাবের নাম বদলে যাওয়ার পরে বাবার পাওয়া পদ্মশ্রী-সহ অন্য পুরস্কারগুলো ফেরত পাওয়ার আর কোনও আশাই দেখছি না।”

গত ১৫-২০ বছর ধরে শতাব্দীপ্রাচীন ক্লাবের সঙ্গে গোষ্ঠ পালের পরিবারের কোনও সম্পর্ক নেই। সবুজ-মেরুনের কোনও অনুষ্ঠানে তাঁরা আর ডাক পান না। ‘চিনের প্রাচীর’-এর জন্মদিনেও ক্লাবের তরফ থেকে আর আসেন না কেউ। গোষ্ঠ পালকে কি তবে ভুলে গেল মোহনবাগান? গলায় আবেগের বাষ্প জড়িয়ে নীরাংশুবাবু বলেন, “বাবাকে হয়তো সম্মান জানাতে চায় না ক্লাব। কিন্তু মোহনবাগান সমর্থকদেরও কি গোষ্ঠ পালের প্রতি কোনও দায়িত্ব নেই?” প্রশ্ন তুলে দিচ্ছেন নীরাংশু পাল।

Advertisement

আরও পড়ুন: নজরে আরও দুই, কিউয়িদের বিরুদ্ধেই ফের টেস্ট দলে ডাক পেতে পারেন লোকেশ রাহুল

বৃহস্পতিবার মোহনবাগানের সঙ্গে এটিকে-র ঐতিহাসিক চুক্তি হল। ভারতীয় ফুটবলে ঝড় উঠল সেই চুক্তি নিয়ে। গোষ্ঠ পালের পরিবারে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, তাঁরা এই সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। ক্লাব নিয়ে খোঁজখবরও রাখেন না। নীরাংশুবাবুর ছেলে গিরবান পাল বলছিলেন, “মোহনবাগান নিয়ে কোনও খবর আমি আর রাখি না। রাত বারোটার সময়ে টুইটারে দেখলাম এটিকে-মোহনবাগান মিশে গিয়েছে। এক বন্ধু মেসেজ করে জানতে চেয়েছিল, রবিবার একসঙ্গে বসে খেলা দেখব কিনা। রবিবার কী খেলা রয়েছে আমি খোঁজ রাখি না। পরে জানলাম ডার্বি রয়েছে। ক্লাবকে নিয়ে দুঃখ, কষ্ট, আনন্দ, ভাল লাগা কিছুই আর নেই।’’

তাঁর বাবার অনুভূতিটা অবশ্য একটু আলাদা। নীরাংশুবাবু বলছিলেন, ‘‘মোহনবাগানের সঙ্গে যেহেতু বাবার নাম জড়িয়ে রয়েছে, তাই ক্লাবের নামটা শুনলে রক্তের গতি বেড়ে যায়। বাবার কথা মনে পড়ে। চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ে আমার। তবে ক্লাব হারল কী জিতল, তাতে আর কিছু এসে যায় না।’’

এখন তো গোষ্ঠ পালের প্রাণাধিক প্রিয় ক্লাবের নামটাও বদলে গেল! শতাব্দীপ্রাচীন ক্লাবের সঙ্গে জুড়ে গিয়েছে এটিকে। সেটা মেনে নিতে পারছেন না অনেক সমর্থকই। গোষ্ঠ পালের ছেলে বলছেন, “বাবা, মান্নাদা (শৈলেন মান্না) মোহনবাগানকে ভালবাসতেন। অসংখ্য সমর্থক মোহনবাগানকেই ভালবাসে, এটিকে-মোহনবাগানকে নয়। সমর্থকদের সম্মতি নিয়ে তো ক্লাবের নাম পরিবর্তন করা যেত। কেন করা হল না তা?’’

আরও পড়ুন: রাজকোটে কেন ভারতের কাছে হারতে হল? স্টিভ স্মিথ বললেন...​

কেন করা হল না, তা ক্লাবকর্তারাই বলতে পারবেন। কিন্তু মোহনবাগানের অন্যতম সেরা আইকনের পরিবারের কাছে ‘আবেগের রং’ যে আর সবুজ-মেরুন নেই, তা দিনের আলোর মতোই স্পষ্ট।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন