প্রাক্তন পেসাররা আশঙ্কায়

‘বহু রাত ভাল করে ঘুমোতে পারবে না শন অ্যাবট’

এসসিজি-তে সে দিনের দুর্ঘটনার পর মারা গেলেন এক জন, না দু’জন? ফিল হিউজের ঘুম আর ভাঙলই না। কিন্তু শন অ্যাবটও কি আর কখনও ভাল করে ঘুমোতে পারবেন? কখনও আগের মতো বল করতে পারবেন তিনি? সে জন্যই ওই প্রশ্ন উঠেছে ক্রিকেট বিশ্বে। সে দিনের দূর্ঘটনা এক জন ব্যাটসম্যানের সঙ্গে এক জন বোলারকেও মেরে ফেলল না তো?

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:৪৭
Share:

অ্যাবটের দুঃস্বপ্নে বারবার ফিরে আসবে কি এই ছবি।

এসসিজি-তে সে দিনের দুর্ঘটনার পর মারা গেলেন এক জন, না দু’জন?

Advertisement

ফিল হিউজের ঘুম আর ভাঙলই না। কিন্তু শন অ্যাবটও কি আর কখনও ভাল করে ঘুমোতে পারবেন? কখনও আগের মতো বল করতে পারবেন তিনি?

সে জন্যই ওই প্রশ্ন উঠেছে ক্রিকেট বিশ্বে।

Advertisement

সে দিনের দূর্ঘটনা এক জন ব্যাটসম্যানের সঙ্গে এক জন বোলারকেও মেরে ফেলল না তো?

প্রায় তিন দশক আগে নিউজিল্যান্ডের ইউয়েন চ্যাটফিল্ড যাঁর বলে মাথায় মারাত্মক আঘাত পেয়েছিলেন, সেই ইংরেজ ফাস্ট বোলার পিটার লেভার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছেন, অ্যাবটের রাতের ঘুম নিয়ে গেলেন হিউজ। ইংরেজ সংবাদপত্র ‘গার্ডিয়ান’-এ নিজের কলামে লেভার লিখেছেন, “সেই ঘটনার পর আমি তো ঘুমোতে পারিনি। এই ছেলেটাও বহু রাত ঠিক করে ঘুমোতে পারবে বলে মনে হয় না। ওর মনের মধ্যে প্রায়ই ঘটনাটা ঝলসে উঠবে। কারণ, ওরা তো একে অপরের বন্ধু ছিল। অস্ট্রেলিয়ার ওয়ান ডে দলে ওরা একসঙ্গে খেলেছে। একসঙ্গে বড় হয়েছে।”

চ্যাটফিল্ড জীবনযুদ্ধ জিতে ক্রিকেট মাঠে ফিরেছিলেন। তাও লেভারকে সেই দুঃস্বপ্ন তাড়া করে বেরিয়েছিল বহু দিন। অ্যাবটের অবস্থা তাঁর চেয়েও কঠিন বলে মনে করেন লেভার। “ছেলেটার কষ্ট আমার চেয়ে ভাল আর কে বুঝবে? হিউজ ওর ভাল বন্ধু এবং ও এই দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছে। এর চেয়ে বেদনাদায়ক আর কী হতে পারে?”, লিখেছেন তিনি।

পাকিস্তানের কিংবদন্তি পেসার ওয়াকার ইউনিসের প্রশ্ন, “অ্যাবট কি আদৌ মাঠে ফিরতে পারবে?” একই আশঙ্কা ইংরেজ বোলার স্টিভ হার্মিসনেরও। তাঁর মতে, “বাইশ বছরের ছেলেটা সারা জীবন এই দুঃস্বপ্ন চোখে নিয়ে কী করে খেলে যাবে, কে জানে? খুব কঠিন কাজ। আমার ক্ষেত্রে এমন হলে আমি নিজেকে ফেরাতে পারতাম কি না, জানি না।”

এক প্রস্তুতি ম্যাচে যাঁর বল আঘাত করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটসম্যান ফিল সিমন্সের মাথায়, সেই ডেভিড লরেন্সেরও নিজের অভিজ্ঞতার কথা মনে পড়ছে। লরেন্সের মন্তব্য, “সেই ঘটনার ৪৮ ঘন্টা পর আমি সিমন্সকে সরি বলার সুযোগ পেয়েছিলাম। অ্যাবট তো তাও পেল না। এই আক্ষেপটাই না ওর মাঠে ফেরার পথে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়ায়। আমার মনে হয় না ও আর ক্রিকেট খেলতে পারবে।”

লরেন্সের সঙ্গে অবশ্য একমত নন আর এক প্রাক্তন ইংরেজ পেস তারকা ম্যাথু হোগার্ড। তাঁর কথায়, “কোনও বোলারের বলে কোনও ব্যাটসম্যান মারা গেলে, সেই বোলারের মানসিক ভাবে ধ্বংস হয়ে যাওয়াই স্বাভাবিক। তবে আশা করি ওকে শক্তি জোগানোর জন্য ওর চার দিকে অনেক মানুষ আছেন। তাঁদের জন্যই ও আগের মতো মাঠে নামতে পারবে।”

তেমনই এক জন অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন টেস্ট বোলার জ্যাসন গিলেসপি, যিনি বলছেন, “অ্যাবটের মতো ভাল ছেলে ক্রিকেট মাঠ থেকে সরে যাবে, তা হয় না কি? ও মাঠে ফিরবেই। আমরাই ওকে সাহস জোগাব।”

অনেক মহল থেকেই ক্রিকেটে বাউন্সার তুলে দেওয়ার দাবি উঠেছে। কিন্তু প্রাক্তন পেসাররা সবাই বলছেন, বাউন্সার তুলে দেওয়া মানে ক্রিকেটকেই নষ্ট করে ফেলা। অর্থাত্‌, বোলার ও ব্যাটসম্যানদের এমন প্রাণঘাতী সংঘর্ষ যে এই শেষ, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই।

ছবি: রয়টার্স ও এএফপি

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন