সংবর্ধনা: পিঙ্কি প্রামাণিক ও সরস্বতীর সঙ্গে স্বপ্না। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
দু’বছর পরে টোকিয়ো অলিম্পিক্সে প্রথম বারোর মধ্যে থাকার লক্ষ্য নিয়েই ফের অনুশীলনে ফিরছেন স্বপ্না বর্মণ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রোটারি সদনে রাজ্য অ্যাথলেটিক্স সংস্থার সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসে স্বপ্না বলে দিলেন, ‘‘আমাকে ডাক্তাররা অস্ত্রোপচার করতে বারণ করেছেন। পুজোর পরেই অনুশীলনে নামব বলে ঠিক করেছেন আমার কোচ। অলিম্পিক্সে পদক পেতে হলে আমাকে ৬৫০০ পয়েন্ট করতে হবে। সেটা নিয়ে ভাবব পরে। আমার প্রথম লক্ষ্য প্রথম বারো জনের মধ্যে থাকা। যা ভারতের কেউ কখনও পারেনি।’’
জাকার্তা এশিয়াডে হেপ্টাথলনে সোনাজয়ী মেয়ের পাশে এ দিন বসেছিলেন এর আগে এশিয়াডে সোনা জয়ী দুই অ্যাথলিট সরস্বতী সাহা এবং পিঙ্কি প্রামাণিক। দুই সোনার মেয়েই পরবর্তী কালে অলিম্পিক্সে কিছু করতে পারেননি। কিন্তু স্বপ্না নিশ্চিত অলিম্পিক্সের যোগ্যতামান পেরোতে তাঁর কোনও অসুবিধা হবে না। বলে দিলেন, ‘‘আমি এশিয়াডে সোনা জিতলেও হেপ্টাথলনের সাতটা ইভেন্টের মধ্যে পাঁচটা ইভেন্টে খারাপ পয়েন্ট পেয়েছি। রাজ্য মিটের মতো দৌড়েছি। যে জন্য আমার তিনশো পয়েন্ট নষ্ট হয়েছে। আমাকে আরও কঠোর অনুশীলন করতে হবে। ওগুলোতে একটু ভাল করতে পারলেই ৬৩০০ পেরিয়ে
যেতে পারব।’’
এ দিন রাজ্য সংস্থার পক্ষ থেকে তাঁর হাতে এক লাখ টাকার চেক তুলে দেওয়া হয়। তাঁর কোচ সুভাষ সরকারকে দেওয়া হয় পঞ্চাশ হাজার টাকা। সবার অনুরোধে এখানেও দু’টো ভাটিয়ালি গান গাইতে হয়। গান গাওয়ার আগে অবশ্য স্বপ্না তাঁর এগোনোর পথের দিশা দেন। জানিয়ে দেন, সামনের বছর ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় গেমসে বাংলার হয়ে নামবেন। তার পরে এপ্রিলে দোহায় এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে যোগ দেবেন। ‘‘অস্ত্রোপচার তো করতে হবে না। তাই রি-হ্যাব করে সুস্থ হয়ে প্রতিযোগিতায় নামতে কোনও সমস্যা হবে বলে মনে হয় না।’’
দু’দিন পর শুক্রবার জলপাইগুড়ি যাচ্ছেন বাংলার খেলাধুলোর নতুন আইকন। সেখানে কামতাপুরি একটি সংগঠন রাজবংশী মেয়েকে সংবর্ধনা দেবে। জেলা ক্রীড়া সংস্থাও স্বপ্নাকে একটি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। প্রায় এক বছর পরে বাড়ি যাবেন ওই সময়ই। তবে পুজো উদ্বোধনের কোনও অনুরোধ হয়তো রাখতে পারবেন না স্বপ্না। দু’পায়ে ছয় আঙুল নিয়ে বিস্ময়কন্যা বলছিলেন, ‘‘পুজোয় কলকাতায় থাকতে পারব কি না জানি না। কারণ ওই সময় আমাকে জার্মানি যেতে হতে পারে জুতোর মাপ দেওয়ার জন্য।’’