নায়ক-বন্দনা: মোহনবাগানের জালে বল ঢুকিয়ে এনেছেন লিগ। সেই আল আমনার পা ছুঁতে ফেন্সিং টপকালেন অনুরাগী। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
শেষ লগ্নে জেগে উঠে ডার্বি জিতে নিল শিলিগুড়ি। উপচে পড়়া ভিড় হবে না বলেই ভেবেছিলেন উদ্যোক্তারা। কিন্তু দুর্গাপুজোর তৃতীয়ার দিন দেখা গেল, মান রাখল শিলিগুড়ি। মাঠ ভরে উঠল।
চতুর্থীর রবিবাসরীয় সন্ধ্যায় এই ডার্বি স্মরণীয় হয়েও থাকবে নানা কারণেই। যে ডার্বিতে মাঠে এবং গ্যালারিতে রং বদলেছে ঘনঘন।
টিকিটের কাটতি যা দাঁড়িয়েছিল তাতে ১২ হাজারের মতো দর্শক হওয়ার কথা। খেলা ২০ মিনিট গড়াতেই মাঠে দর্শক ১৮ হাজারের মতো। নির্ধারিত সময়ের পর টিকিট কাউন্টার বন্ধ দেখে স্টেডিয়ামের বিভিন্ন গেটে ভিড় করেছিল উৎসাহী জনতা। গেটে জমে থাকা সেই জনতাকে স্টেডিয়ামে ঢুকতে দেওয়া হয়। তাতেই গ্যালারিতে লাল-হলুদ এবং সবুজ-মেরুনের সমর্থকদের ছয়লাপ। ব্যান্ড পার্টি, ঢাক, ঢোল, কাঁসর কিছুই বাদ ছিল না। খেলার ৩ মিনিটের মাথায় মোহনবাগান গোল পেতেই ১ এবং ১১-১৪ নম্বর গেটের মোহন গ্যালারিতে হুল্লোড় শুরু হয়। যে গোলের নায়ক আবার এক সময় শিলিগুড়ির সাইয়ের ফুটবলার আজহারউদ্দিন মল্লিক। প্রথমার্ধের শেষ দিকে ইস্টবেঙ্গল গোল শোধ করলে ফেটে পড়ে স্টেডিয়ামের উত্তরের এবং পূর্ব দিকের গ্যালারি। ঢাক বাজানো থেকে গোটা লাল-হলুদ গ্যালারি মোবাইলের টর্চ জ্বালানো কিছুই বাদ যায়নি।
ম্যাচ ২-২ গোলে ড্র হতেই ইস্টবেঙ্গল গ্যালারিতে লাল-হলুদ আবিরে ঢেকে যায়। টানা আট বার কলকাতা লিগের ট্রফি জেতার সুবাদে লাল-হলুদ সমর্থকরা উল্লাসে মেতে ওঠে। আমনা, প্লাজারা গ্যালারির কাছে গিয়ে হাত তুলে অভিনন্দন গ্রহণ করেছে সমর্থকদের। টিম বাসে ফেরার সময় সমর্থকদের দিকে জার্সি ছুড়েও দিতে দেখা গিয়েছে উইলিস প্লাজাকে।
খেলার শেষে মাঠের উত্তেজনা স্টেডিয়ামের বাইরেও সামলাতে বেগ পেতে হয়েছে পুলিশকে। লাল-হলুদের সমর্থকেরা মিছিল করলে মোহন সমর্থকেরা কটূক্তি করছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। স্টেডিয়ামের সামনে উত্তেজনা দেখা দেয়।
ম্যাচ দেখতে এসেছিলেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। মাঠে গিয়ে উদ্বোধন অনুষ্ঠান সেরে মন্ত্রী ফিরে বসতে গিয়ে দেখেন তাঁর জায়গায় সৃঞ্জয় বসু বসে রয়েছেন। কয়েকজন সৃঞ্জয়কে উঠতে বললে তা নিয়ে ভিআইপি গ্যালারিতে হট্টগোল শুরু হয়। পরে প্রাক্তন ফুটবলার তুষার রক্ষিত নিজের জায়গা মন্ত্রীকে ছেড়ে দেন। সৃঞ্জয়বাবু অবশ্য বলেন, ‘‘কোনও সমস্যা হয়নি।’ মন্ত্রীও তা নিয়ে কিছু বলতে চাননি।
শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের সচিব অরূপরতন ঘোষ বলেন, ‘‘মাঠে দর্শক না থাকলে সাদামাঠা লাগবে। অনেকেই কাউন্টার বন্ধ হওয়ার পর ভিড় করেছিলেন। তাদের ঢুকতে দেওয়া হয়েছে।’’