দুই বন্ধুই যেন সমান খুশি। চ্যাম্পিয়ন পেনেত্তা (ডান দিকে) ও ভিঞ্চি।
জীবনের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের শৃঙ্গে দাঁড়িয়ে টেনিসকে চিরবিদায়!
শনিবার গভীর রাতে আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে নতুন রূপকথা লিখলেন ইতালির ফ্লাভিয়া পেনেত্তা। যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে মেয়েদের ফাইনালে যিনি স্বদেশি ও বন্ধু, সেরেনা উইলিয়ামস ‘ঘাতক’ রবের্তা ভিঞ্চিকে স্ট্রেট সেটে হারালেন ৭-৬ (৭-৪), ৬-২। জিতে কান্নায় ভাসা পেনেত্তা চমকে দেওয়া ঘোষণাটা করেন অবশ্য ট্রফি হাতে নিয়ে। বলেন, ‘‘একটা স্বপ্ন সত্যি হল। কিন্তু এই ভাবেই টেনিসকে চিরবিদায় জানাতে চাই। আমি সত্যিই খুশি!’’
সেরেনা মহাকাব্য অসমাপ্ত থমকে যাওয়ায় চব্বিশ ঘণ্টা আগে হতাশ ছিল টেনিস বিশ্ব। তবে তিরিশের কোঠায় পা দুই ইতালীয়ের স্বতঃস্ফূর্ত ফাইনালের পর তাঁদের সঙ্গে আবেগে ভাসল দর্শকে ঠাসা গ্যালারিও। খেলার শেষে পাশাপাশি বসে হাসিতে গড়াগড়ি দুই ছোটবেলার বন্ধুকে দেখে বোঝাই যাচ্ছিল না, কে জিতেছেন, কে হেরেছেন! যেন ডাবলসে দু’জনই চ্যাম্পিয়ন!
আসল চ্যাম্পিয়ন সম্ভবত ইতালির টেনিস। ওপেন যুগে প্রথমবার দুই ইতালীয়ের মধ্যে কোনও গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনাল দেখতে বিশেষ বিমানে উড়ে এসেছিলেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং।
টুর্নামেন্ট শুরুর আগে পেনেত্তার পক্ষে খেতাব জেতার দর ছিল ১৫০-১। চ্যাম্পিয়ন নিজে বলছেন, ‘‘যা ঘটল, আমার কাছেও বিশাল চমক!’’ আসলে ডাবলসটা দু’জনে বরাবর দাপটে খেললেও সিঙ্গলসে পেনেত্তা বনাম ভিঞ্চি ফাইনাল কারও কল্পনাতেই ছিল না। এমনকী স্বয়ং দুই খেলোয়াড়েরও না। যাঁরা সেই ন’বছর বয়সে প্রথম মুখোমুখি হন। সেরেনাকে ছিটকে দেওয়ার পর ভিঞ্চি স্বীকার করেছিলেন, গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনাল খেলবেন কখনও ভাবেননি। আর জেতার পর পেনেত্তা বললেন, ‘‘ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন ছিল বিশ্বের এক নম্বর হব। রোম ওপেন জিতব। এই ট্রফিটা স্বপ্নের চেয়েও বেশি পাওয়া!’’ খেতাব জেতায় র্যাঙ্কিংয়ে জীবনের সেরা এগারোয় পৌঁছলেন।
তেত্রিশ বছরে প্রথমবার গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ী সবচেয়ে বয়স্ক প্লেয়ার হিসাবে পেনেত্তা রেকর্ড গড়লেন। সবচেয়ে বেশি গ্র্যান্ড স্ল্যাম (৪৯) খেলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার রেকর্ডও। পরে তিনি স্পষ্ট করেন যে, এখনই না, অবসর নিচ্ছেন মরসুমের শেষে।