ম্যাঞ্চেস্টার ডার্বি, দ্বৈরথ দুই গুরুর

একজনের অনুপ্রেরণা ইয়োহান ক্রুয়েফ। তাঁর মতোই পাসিং ফুটবলের দর্শনে বিশ্বাস করেন। তাঁর ফুটবল দেখে আপাতত মুগ্ধ ইংল্যান্ডের ফুটবলপ্রেমীরা। বলা হচ্ছে, ম্যাঞ্চেস্টার বলতে এখন পেপ গুয়ার্দিওলার ম্যাঞ্চেস্টার সিটি। 

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৮ ০৫:২৮
Share:

যুযুধান: জোসের বিরুদ্ধে এগিয়ে রাখা হচ্ছে পেপকেই। ফাইল চিত্র

একই শহরের দুই যুযুধান ক্লাব। আর তাদের দুই চাণক্য। ফের ফুটবলের অন্যতম সেরা লড়াই দেখার অপেক্ষায় সকলে।

Advertisement

একজনের অনুপ্রেরণা ইয়োহান ক্রুয়েফ। তাঁর মতোই পাসিং ফুটবলের দর্শনে বিশ্বাস করেন। তাঁর ফুটবল দেখে আপাতত মুগ্ধ ইংল্যান্ডের ফুটবলপ্রেমীরা। বলা হচ্ছে, ম্যাঞ্চেস্টার বলতে এখন পেপ গুয়ার্দিওলার ম্যাঞ্চেস্টার সিটি।

অন্যজন ফলাফলে বিশ্বাসী। দর্শনীয় ফুটবলের মন্ত্রে কখনওই খুব বেশি জোর দেননি। নিজের গোল বাঁচিয়ে তবেই আক্রমণে যাও— এই হল তাঁর ফুটবল মন্ত্র। তিনি, জোসে মোরিনহো ক্লাব ফুটবলের সব চেয়ে সফল কোচদের এক জন হলেও আপাতত চাপে। তেমনই চাপে তাঁর দল ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড।

Advertisement

রবিবার, এতিহাদে দুই মহাগুরুর লড়াই ঘিরে উত্তাল হতে চলেছে ইপিএল। ২০১৬ সালে গুয়ার্দিওলাকে বায়ার্ন মিউনিখ থেকে তুলে এনে ম্যানেজার করে দেয় ম্যাঞ্চেস্টার সিটি। প্রতিবেশী যে ক্লাবকে নিয়ে ম্যান ইউনাইটেডের সফলতম ম্যানেজার ম্যানেজার স্যর আলেক্স ফার্গুসন একবার বলেছিলেন, ‘‘আমাদের প্রতিবেশী ক্লাবটা বড্ড বেশি হইহল্লা করে। ছোট ক্লাবগুলো আসলে এ রকমই হয়। ওদের মানসিকতাও খুব ছোট হয়।’’ বলা বাহুল্য, তাচ্ছিল্য করেই এমনটা বলেছিলেন ফার্গুসন। হতে পারে, তখন স্বপ্নেও ভাবেননি, পেপের জাদুমন্ত্রেই ম্যান ইউকে একদিন ইপিএলে ক্লাসের পিছিয়ে পড়া পড়ূয়ার মতো দেখাতে পারে।

পেপের কীর্তি ফুটবল ইতিহাসে এখনই এক বড় বিস্ময়। তিনি যেখানে গিয়েছেন, সোনা ফলিয়েছেন। তাঁর কোচিংয়ে কোনও কিছুই জিততে বাকি রাখেনি বার্সেলোনা। তাঁর সময়ে হেলায় বুন্দেশলিগা জিতেছে বায়ার্ন মিউনিখ। ইপিএলে ম্যাঞ্চেস্টার সিটিতে এসে প্রথম মরসুমটা তেমন কিছু করতে না পারলেও দ্বিতীয় মরসুমেই ট্রফি এবং মন জিতে নিয়েছেন পেপ।

উল্টো দিকে, মোরিনহোর ম্যাঞ্চেস্টার ট্রফি তো জিতছেই না, মন জিততেও ব্যর্থ। তাঁদের ফুটবল ধরন নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। কোচ হিসেবে দারুণ রেকর্ড সঙ্গী মোরিনহোর। পোর্তোর মতো ক্লাবকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতিয়েছেন, রিয়াল মাদ্রিদ রেকর্ড গোল করেছে, চেলসিকে দিয়েছেন ইপিএল। তিনিই ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে এসে বিবর্ণ।

এ বারই এগারোটি ম্যাচ খেলেছে দুই দল। এর মধ্যেই ম্যান সিটি এগিয়ে ১২ পয়েন্টে। এমনকি, সিটিতে প্রথম মরসুমেও গুয়ার্দিওলার ফুটবলাররা ৯ পয়েন্ট বেশি পেয়েছিল ম্যান ইউয়ের থেকে। আর গত মরসুমে সেই ব্যবধানটা দাঁড়ায় ১৯ পয়েন্টের! দু’জনের মুখোমুখি সাক্ষাৎ হয়েছে ২১ বার। মোরিনহো জিতেছেন মাত্র পাঁচ বার। গত সপ্তাহে ম্যান ইউ চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জুভেন্তাসের বিরুদ্ধে জিতেছে। যা কিছুটা হয়তো স্বস্তি দিচ্ছে মোরিনহোকে। আবার কেভিন দ্য ব্রুইনের মতো ফুটবলার চোট পাওয়ার পরেও পেপ যখন উদ্বেগহীন, তখন পর্তুগিজ কোচ ঘুরিয়ে ক্লাবের যাবতীয় ব্যর্থতার কারণ দেখাচ্ছেন ভাল ফুটবলার না পাওয়াকে। মোরিনহোর জন্য আরও খারাপ খবর, পল পোগবা রবিবারের ডার্বিতে অনিশ্চিত। চোট থাকায় শুক্রবার তিনি দলের সঙ্গে অনুশীলনও করতে পারেননি। রোমেলু লুকাকু অবশ্য অনুশীলনে ফিরেছেন। কিন্তু লুকাকু ফিরেও কি গুয়ার্দিওলার দর্শনীয় ফুটবলের বিজয়রথ থামাতে পারবেন?

রবিবার ইপিএলে:

ম্যাঞ্চেস্টার সিটি বনাম ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড, রাত ১০টা, স্টার স্পোর্টস সিলেক্ট টু, সিলেক্ট টু এইচডি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন