ATK Mohun Bagan

গত বারের ভুল আর নয়! বৃহস্পতিবারই ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করতে চায় এটিকে মোহনবাগান

গত মরসুমে হায়দরাবাদের মাঠে গিয়েই ১-৩ হেরে বসেছিল এটিকে মোহনবাগান। ওখানেই শেষ হয়ে গিয়েছিল ফাইনালে ওঠার সম্ভাবনা। এ বার আর সেই ভুল করতে চাইছে না তারা।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২৩ ১৯:৪৭
Share:

বুমোস, ম্যাকহিউরা বৃহস্পতিবারই ম্যাচ শেষ করে ফেলতে চান, যাতে দ্বিতীয় পর্বে আর সমস্যায় পড়তে না হয়। — ফাইল চিত্র

গত মরসুমের পর আবার হায়দরাবাদ এফসি-র বিরুদ্ধে আইএসএলের সেমিফাইনালে নামতে চলেছে এটিকে মোহনবাগান। আগের বারের মতো এ বারও প্রথম পর্ব খেলতে হবে হায়দরাবাদে, বিপক্ষের ঘরের মাঠে। গত মরসুমে হায়দরাবাদে গিয়েই ১-৩ হেরে বসেছিল মোহনবাগান। ওখানেই শেষ হয়ে গিয়েছিল তাদের ফাইনালে ওঠার সম্ভাবনা। ঘরের মাঠে দ্বিতীয় পর্বে জিতেও লাভ হয়নি। এ বার আর সেই ভুল করতে চাইছে না তারা। আশিক কুরুনিয়ানকে নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও মোহনবাগান চায়, বৃহস্পতিবার প্রথম পর্বেই ম্যাচ শেষ করে ফেলতে। যাতে দ্বিতীয় পর্বে আর সমস্যায় পড়তে না হয়।

Advertisement

বুধবার হায়দরাবাদ যাওয়ার আগে সেটাই বললেন সবুজ-মেরুন কোচ জুয়ান ফেরান্দো। তাঁর কথায়, “১৮০ মিনিটই নিজেদের পরিকল্পনা বজায় রেখে, ছোটখাটো ব্যাপারগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এটা মোটেই সহজ কাজ নয়। প্রথম ম্যাচেই ফাইনালে ওঠা যাবে না। কিন্তু প্রথম পর্বে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নেওয়া জরুরি। প্রথম পর্বে ভাল ফল হলে ফাইনালে ওঠা অনেকটা সহজ হবে।”

তবে গত বারের আইএসএল চ্যাম্পিয়নদের ঘরের মাঠে হারানো যে কঠিন কাজ হতে চলেছে, তা স্বীকার করে নিয়েছেন ফেরান্দো। বলেছেন, “এই ধরনের ম্যাচে আবেগ নিয়ন্ত্রণ করে, ঠান্ডা মাথায় নিখুঁত খেলা বেশ কঠিন। একটা হলুদ বা লাল কার্ড বা যে কোনও অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি ম্যাচের রং বদলে দিতে পারে। তাই আমাদের আগে প্রথমার্ধ, তার পরে দ্বিতীয়ার্ধ নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে হবে। ধাপে ধাপে না এগোলে সাফল্য পাওয়া মুশকিল।

Advertisement

এ রকম গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগেও মোহনবাগানের পিছু ছাড়ছে না চোট-আঘাত। আশিক গোড়ালির চোটের জন্য এই ম্যাচে খেলতে পারবেন না। মুম্বইয়ের হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা হবে বলে জানা গিয়েছে। সমস্যা মেনে নিয়েই ফেরান্দো বলেছেন, “ফুটবলে চোট-আঘাত লেগেই থাকে। কার্ড সমস্যাও থাকে। এ সব নিয়েই চলতে হয়। আমাদের দলে ২৫ জন রয়েছে। কেউ না খেলতে পারলে অন্য কেউ খেলতে পারে আমাদের দলে। আশিকের চোটটা গুরুতর। তাই আমরা চিন্তিত। যদিও গত দু’দিনে একটা নির্দিষ্ট পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রস্তুতি নিয়েছি। আশিক না খেলতে পারলেও আমাদের মাঠে নামতে হবে।”

মোহনবাগান কোচের মাথায় অবশ্য গত বারের হারের বদলা নেওয়ার ভাবনা নেই। তিনি বলেছেন, “অতীতে কী হয়েছে না হয়েছে ভেবে লাভ নেই। দুই দলের সামনেই ফাইনালে ওঠার সুযোগ রয়েছে। দুটো দলই ১৮ মার্চ গোয়ায় খেলতে চায়। তাই এখন প্রথম ম্যাচেই পুরোপুরি মন দিতে চাই আমরা। চোট পাওয়ার ঝুঁকি, প্রতিপক্ষের ফুটবলার এ সব নিয়ে বেশি ভাবতে চাইছি না। নিজেদের খেলোয়াড়, পরিকল্পনা নিয়ে এখন বেশি ভাবতে হবে।”

অনেকেই বলছেন, সেট পিস থেকে গোল করার ক্ষেত্রে এ বার মোহনবাগানের দুর্বলতা রয়েছে। ফেরান্দো অবশ্য তা মানতে চাননি। তিনি স্পষ্ট বলেছেন, “ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে স্লাভকো দামিয়ানোভিচের গোল ও ওড়িশার বিরুদ্ধে হুগো বুমোসের গোল সেট পিস থেকেই হয়েছে। চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে, ওড়িশার বিরুদ্ধে ও মুম্বইয়ের বিরুদ্ধেও আমরা সেট পিস থেকে একাধিক গোলের সুযোগ পেয়েছিলাম। আগের তুলনায় সেট পিসে আমরা অনেক উন্নতি করেছি। অনুশীলনে খুঁটিনাটি বিষয় শোধরানোর জন্য অনেক পরিশ্রম করি। কখনও সেগুলো সফল হয়, কখনও হয় না।”

মুম্বই সিটিকে প্রথম পর্বে হারিয়েছে বেঙ্গালুরু এফসি। ফাইনালে উঠলে কাকে চান, তা নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি ফেরান্দো। বলেছেন, “দুই দলেরই ফাইনালে ওঠার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে। দু’দলের হাতেই সেরা খেলোয়াড়রা রয়েছে। মুম্বই এই মরশুমে দুর্দান্ত খেলেছে। বেঙ্গালুরু গত কয়েক মাস ধরে ভাল খেলছে। হারানো আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছে। এখন একটা গোলের সুযোগ পেলেই কাজে লাগাচ্ছে ওরা। এখনই ভাবিনি যে সামনে কাদের চাই।”

বেঙ্গালুরুর ফুটবলার সুনীল ছেত্রীর প্রশংসা শোনা গিয়েছে সবুজ-মেরুন কোচের গলায়। বলেছেন, “সুনীল খুবই স্মার্ট ফুটবলার। ও জানে কী ভাবে জায়গা তৈরি করে কাজে লাগাতে হয়। এটা আসলে ওর অভিজ্ঞতার ফল। এত দিন ধরে খেলার পরে এই বিষয়গুলো ওর কাছে খুবই সহজ হয়ে গিয়েছে। আশা করি আমাদের লিস্টন, মনবীররা আরও চার-পাঁচ বছর খেলার পর এ রকমই খেলবে।”

এই মরসুমে এটিকে মোহনবাগানকে ভুগিয়েছে গোল খরা। মূলত মনবীর সিংহ এবং লিস্টন কোলাসোর খারাপ ছন্দই এর জন্যে দায়ী। তবে সম্প্রতি বুমোস ও দিমিত্রি পেত্রাতোসের জুটি সেই সমস্যার কিছুটা হলেও সমাধান করতে পেরেছেন। গত তিনটি ম্যাচে ছ’টি গোল করেছে সবুজ-মেরুন। এই জুটির রসায়ন নিয়ে এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে বুমোস বলেন, “দিমির দক্ষতা ও ক্ষমতা নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। ওর টেকনিকও অসাধারণ। আমরা দু’জনে একসঙ্গে খেললে আক্রমণের গতি অনেক বেড়ে যায়। আমরা জায়গা তৈরি করে আক্রমণে উঠতে পারি। মাঝমাঠ থেকেও অনেক সাহায্য পাই আমরা। যেটা আমাদের টাইমিং ঠিক রাখতে সাহায্য করে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন