আইএসএলের ট্রফি। — ফাইল চিত্র।
আইএসএল নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকেই গেল। দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন দু’দিন বৃদ্ধি করা হলেও কোনও সংস্থাই প্রতিযোগিতা আয়োজনের জন্য দরপত্র জমা দিল না। শুক্রবারই ছিল শেষ দিন। কোনও সংস্থা আইএসএল আয়োজন করার আগ্রহ দেখায়নি। ফলে পরের মরসুমের প্রতিযোগিতা হবে কি না সেটা ঠিক নেই। এই অবস্থায় সিনিয়র দলের অনুশীলন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখল মোহনবাগান। ইস্টবেঙ্গলের কর্তা দেবব্রত সরকার অবশ্য আইএসএল হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী।
একের পর এক আলোচনা, পর্যবেক্ষণ এবং সময়সীমা বাড়ানোর পরেও আইএসএলের আয়োজক খুঁজে পাওয়া গেল না। মনে করা হয়েছিল গত ১৫ বছর যারা আয়োজন করেছে, সেই এফএসডিএল দরপত্র জমা দেবে। তারাও আগ্রহ দেখায়নি। গত ১৬ অক্টোবর দরপত্র আহ্বান করেছিল সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন। সম্প্রচারস্বত্ব, স্পনসরশিপ-সহ আইএসএলের বাণিজ্যিক কাজকর্ম সামলানোর জন্য সংস্থাগুলির থেকে দরপত্র চাওয়া হয়েছিল।
সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাওয়ের সামনে এক বেসরকারি সংস্থার সাহায্য নিয়ে একটি বৈঠকও আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে এফএসডিএল ছাড়াও তিনটি সংস্থা আগ্রহ দেখিয়েছিল। প্রাথমিক আগ্রহ দেখানোর পরেও কোনও সংস্থাই দরপত্র জমা দেয়নি। স্বার্থের সঙ্ঘাতের কারণে একটি সংস্থাকে বাতিল করা হয়েছে। টেন্ডারের আর্থিক মডেল এবং পরিকাঠামো সংক্রান্ত ব্যাখ্যার অভাবকেই দায়ী করা হয়েছে।
বিনিয়োগকারী সংস্থার জন্য যে আর্থিক মাপকাঠি রেখেছে ফেডারেশন তাতেই কেউ আগ্রহী হয়নি বলে সূত্রের খবর। ফেডারেশনের তরফে আগ্রহী সংস্থার থেকে প্রতি বছর ৩৭.৫ কোটি টাকা অথবা লাভের পাঁচ শতাংশ (যেটি বেশি হবে) চাওয়া হয়েছিল। ১৫ বছরের জন্য চুক্তি করতে বলা হয়েছিল। বিশেষজ্ঞদের দাবি, এই মুহূর্তে ভারতীয় ফুটবলের যা বাণিজ্যিক অবস্থা, তাতে এই টাকা দাবি করা অবাস্তব ছাড়া কিছু নয়। ফেডারেশন অবশ্য জানিয়েছে, বিড রিভিউ কমিটি আলোচনায় বসে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করবে। শোনা যাচ্ছে, যে যে বিষয়গুলি নিয়ে সংস্থাগুলির আপত্তি সেগুলি শিথিল করা হতে পারে। যদিও এর ফলে আইএসএলের শুরু করার সময় আরও পিছিয়ে গেল।
মোহনবাগান আগেই জানিয়েছিল, আইএসএল নিয়ে স্বচ্ছ ধারণা না আসা পর্যন্ত অনুশীলন শুরু করা হবে না। শুক্রবারও কোনও সিদ্ধান্ত না হওয়ায় তারা অনুশীলন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিল।
তবে ইস্টবেঙ্গল কর্তা দেবব্রত বলেছেন, “আমার আস্থা আছে যে ভারতীয় ফুটবল বন্ধ হবে না। যে কোনও উপায়ে খেলা হবে। আরও একটু সময় পেলে আরও মানুষ এর সঙ্গে যুক্ত হয়ে আগামী দিনগুলো ভাল করার চেষ্টা হবে। খেলা হবে। ফেডারেশন, ক্রীড়ামন্ত্রক নিশ্চয়ই সুব্যবস্থা করবে। হয়তো নির্দিষ্ট সময়ে শুরু হবে না। পরিকাঠামো, নিয়মবলীর পরিবর্তন হলেও খেলা হবে।”