ISL 2024-25

টানা চার হার ইস্টবেঙ্গলের, কোচ বদলালেও এল না জয়, পেনাল্টি ফস্কে ম্যাচ হারতে হল লাল-হলুদকে

কার্লেস কুয়াদ্রাত কোচের পদ ছাড়লেও আইএসএলে ইস্টবেঙ্গলের ভাগ্য বদলাল না। জামশেদপুরের বিরুদ্ধে ০-২ গোলে হারল লাল-হলুদ। পেনাল্টি ফস্কালেন সউল ক্রেসপো।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২৪ ১৮:৫৬
Share:

শনিবার গোল করে উল্লাস জামশেদপুরের তাচিকাওয়ার। পিছনে হতাশ ইস্টবেঙ্গলের শৌভিক চক্রবর্তী। ছবি: সমাজমাধ্যম।

জামশেদপুর — ২ (তাচিকাওয়া, লালচুংনুঙ্গা আত্মঘাতী)
ইস্টবেঙ্গল — ০

Advertisement

অন্তত আটটি গোল করতে পারত ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু ফুটবল দেবতা বোধহয় মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন তাদের থেকে। নইলে জামশেদপুরের বিরুদ্ধে ক্লেটন সিলভা, মাদি তালাল, সউল ক্রেসপোরা যা সুযোগ নষ্ট করলেন তা ময়দানে করলে মাঠ ছাড়তে সমস্যা হত। পেনাল্টি ফস্কালেন ক্রেসপো। দু’টি শট পোস্ট ও বারে লাগল। ফাঁকা গোলেও বল ঠেলতে পারলেন না ক্লেটন। তার খেসারত দিতে হল দলকে। চলতি আইএসএলে টানা চারটি ম্যাচ হারল ইস্টবেঙ্গল। খেলা শেষে বিধ্বস্ত ফুটবলারেরা যখন ফিরছেন তখন তাঁদের দেখে বোঝা যাচ্ছিল কতটা চাপে রয়েছেন। চলতি মরসুমে এই ম্যাচেই সবচেয়ে ভাল খেললেন তাঁরা। কিন্তু তার পরেও হারতে হল। দলকে জয়ে ফিরতে দেখার আশায় জামশেদপুর গিয়েছিলেন অনেক লাল-হলুদ সমর্থক। কিন্তু আরও এক বার হতাশ হয়ে ফিরতে হল তাঁদের। শেষ হাসি হাসলেন খালিদ জামিল। চলতি মরসুমে ভাল দেখাচ্ছে জামশেদপুরকে। প্রথম চারটি ম্যাচের মধ্যে তিনটি জিতেছে তারা।

টানা তিন ম্যাচে হারা ইস্টবেঙ্গলের খেলা কিছুটা হলেও বদলাল চতুর্থ ম্যাচে এসে। তাদের দেখে বোঝা যাচ্ছিল, কার্লেস কুয়াদ্রাত সরার পরে বিনো জর্জ এসে কিছুটা হলেও পরিকল্পনায় বদল করেছেন। মাদি তালালের পা দিয়ে বার বার আক্রমণে উঠছিল ইস্টবেঙ্গল। ১১ মিনিটের মাথায় তালাল এগিয়ে দিতে পারতেন দলকে। বাঁ প্রান্ত ধরে বক্সে ঢুকে প্রথম পোস্টে শট মারেন তিনি। কিন্তু বল লক্ষ্যে ছিল না।

Advertisement

ইস্টবেঙ্গলের প্রাথমিক আক্রমণ সামলে খেলায় ফেরে জামশেদপুর। ছোট ছোট পাস খেলে আক্রমণে ওঠে তারা। ১৭ মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত জামশেদপুর। যদি না লাল-হলুদ গোলের নীচে দেবজিৎ মজুমদার থাকতেন। দু’গজ দূর থেকে জর্ডন মারের হেড বাঁচিয়ে দেন তিনি। চার মিনিট পরেই এগিয়ে যায় জামশেদপুর। বক্সের বাইরে থেকে ডান পায়ের জোরালো শটে গোল করেন রেই তাচিকাওয়া। জাপানের ফুটবলারের শট আটকানোর কোনও সুযোগ দেবজিতের কাছে ছিল না।

গোল খেলেও হতাশ হয়নি ইস্টবেঙ্গল। কুয়াদ্রাত জমানায় যে তিনটি ম্যাচ তারা খেলেছিল সেখানে মনে হচ্ছিল ফুটবলারদের গোল করার তাগিদই নেই। কিন্তু এই ম্যাচে সেই তাগিদ দেখা গেল। ক্লেটন সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে প্রথমার্ধে অন্তত ৩-১ গোলে এগিয়ে থাকত ইস্টবেঙ্গল। ফাঁকা গোলেও বল ঠেলতে পারলেন না দলের অধিনায়ক। তাঁকে দেখে বোঝা যাচ্ছিল কতটা চাপের মধ্যে রয়েছেন। নইলে যে সব সুযোগ তিনি নষ্ট করলেন তা পাড়ার ফুটবলেও অপরাধ।

বিরতিতে এক গোলে পিছিয়ে থাকার পরে দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেও আক্রমণের গতি বাড়ায় ইস্টবেঙ্গল। তার ফলও পায় তারা। আবার গোল করার সুযোগ পান ক্লেটন। পারেননি তিনি। পরিবর্ত হিসাবে পিভি বিষ্ণুকে নামান বিনো। তিনি নেমেই একটি ভাল সুযোগ তৈরি করেছিলেন। ফিরতি বলে ক্লেটনকে বক্সে ফাউল করেন জাভি হার্নান্দেস। পেনাল্টি পায় ইস্টবেঙ্গল। তাতেও গোল করতে পারেনি তারা। সোজা গোলরক্ষক আলবিনো গোমসের হাতে মারেন ক্রেসপো। তিন মিনিট পরে আবার গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি ক্লেটন। পোস্টে মারেন তিনি।

দেখে বোঝা যাচ্ছিল, দিনটা ইস্টবেঙ্গলের নয়। একের পর এক সুযোগ নষ্টের পাশে ৭০ মিনিটের মাথায় আত্মঘাতী গোল করেন ইস্টবেঙ্গলের লালচুংনুঙ্গা। ইমরান খানের শট বার করতে গিয়ে নিজেদের গোলেই ঢুকিয়ে দেন তিনি। লাল-হলুদ ফুটবলারদের দেখে বোঝা যাচ্ছিল, কী হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছেন না তাঁরা। কোনও ভাবেই বল জালে জড়াচ্ছিল না। বক্সের মধ্যে থেকে হেক্টর ইয়ুস্তের হেডও বারে লেগে বেরিয়ে যায়।

বাকি সময়েও চেষ্টা থামায়নি ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু গোল করতে পারেনি। শেষ দিকে রক্ষণে ফুটবলার বাড়িয়ে নিয়েছিলেন খালিদ। ফলে গোল করা সহজ ছিল না। শেষ পর্যন্ত ০-২ গোলে হেরেই মাঠ ছাড়ে ইস্টবেঙ্গল। তাদের পরের ম্যাচই ডার্বি। সেই ম্যাচের আগে চাপ আরও বাড়ল লাল-হলুদ ফুটবলারদের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement