Mohun Bagan

খলনায়ক হতে হতেও নায়ক কামিংস, বিশ্বকাপারের জোড়া গোলে এএফসি কাপে জিতল মোহনবাগান

অল্পের জন্যে মোহনবাগান সমর্থকদের রোষের হাত থেকে বেঁচে গেলেন জেসন কামিংস। অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপারের জোড়া গোলে এএফসি কাপে মাজিয়া এসআরসি-কে ২-১ গোলে হারাল মোহনবাগান।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০২৩ ২১:২৮
Share:

প্রথম গোলের পর কামিংসের উচ্ছ্বাস। ছবি: টুইটার।

আর কয়েকটা মিনিট পেরিয়ে গেলেই খলনায়ক হতে পারতেন তিনি। অল্পের জন্যে মোহনবাগান সমর্থকদের রোষের হাত থেকে বেঁচে গেলেন জেসন কামিংস। অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপারের জোড়া গোলে এএফসি কাপে মাজিয়া এসআরসি-কে ২-১ গোলে হারাল মোহনবাগান। কিন্তু প্রথমার্ধে একটি পেনাল্টি যে ভাবে হেলায় নষ্ট করেন কামিংস, তাতে ম্যাচ ড্র হলে তিনিই হতে পারতেন খলনায়ক।

Advertisement

প্রথম থেকেই আক্রমণ শুরু করে মোহনবাগান। ডান দিক থেকে আক্রমণ শুরু হয়। কামিংস এক বার গোলের কাছাকাছি পৌঁছে গেলেও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। এর পর মাজিয়া দু’বার সুযোগ পেয়েছিল। মলদ্বীপের ক্লাবটির উপর চাপ বজায় রাখে মোহনবাগান। ১৩ মিনিটের মাথায় বল পেয়েছিলেন দিমিত্রি পেত্রাতোস। তিনি পাস দেন কামিংসকে। অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপার কিছুটা ভেতরে ঢুকে শট নিয়েছিলেন। কিন্তু মাজিয়ার এক ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে বল বাইরে যায়। কর্নার থেকে কামিংসের হেড প্রথমে ফস্কালেও বাঁচিয়ে দেন মাজিয়া গোলকিপার হুসেন শরিফ।

২৮ মিনিটে গোল করে মোহনবাগান। মাঝমাঠ থেকে কামিংসকে বল বাড়িয়েছিলেন হুগো বুমোস। বিপক্ষের তিন ডিফেন্ডার সামনে থাকায় বল নিয়ে না এগিয়ে বক্সের বাইরে থেকে গড়ানো শট মারেন তিনি। পোস্টে লেগে বল জালে জড়িয়ে যায়। প্রথম গোল পেয়েই দ্বিতীয় গোলের জন্যে মরিয়া হয়ে ওঠে মোহনবাগান। এ বার আর্মান্দো সাদিকু কোণ থেকে শট নিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর প্রয়াস ব্যর্থ হয়।

Advertisement

৪০ মিনিটে আসে সেই মুহূর্ত। সাদিকুকে বক্সে ফেলে দিয়েছিলেন জোসিচ। সামান্য ধাক্কা মনে হলেও রেফারি পেনাল্টির নির্দেশ দেন। মাজিয়ার ফুটবলারেরা প্রতিবাদ করলেও কান দেননি। কামিংসই পেনাল্টি নিতে এগিয়ে যান। কিন্তু তাঁর মাথায় কী চলছিল আগে বোঝা যায়নি। তিনি সরাসরি শটে গোলে বল মারেননি। বরং বাঁ পায়ের টোকায় পাস বাড়িয়ে দেন পেত্রাতোসের উদ্দেশে।

বলের টোকা এতটাই হালকা ছিল যে তা বেশি দূর এগোয়নি। তা ছাড়া, কামিংস এটি পরিকল্পিত ভাবে করেছিলেন কি না জানা নেই। কিন্তু পেত্রাতোস দৌড় শুরু করতে দেরি করেন। ফলে তিনি বলে শট নেওয়ার আগেই জোসিচ ক্লিয়ার করে দেন। এগিয়ে যাওয়ার নিশ্চিত সুযোগ হাতছাড়া করে মোহনবাগান। ২০১৬ সালে বার্সেলোনায় থাকাকালীন সেল্টা ভিগোর বিরুদ্ধে একটি ম্যাচে এ ভাবেই লুই সুয়ারেসকে দিয়ে গোল করিয়েছিলেন লিয়োনেল মেসি। কিন্তু এ দিন কামিংস-পেত্রাতোসের জুটি সেই কাজ করে দেখাতে পারেনি।

তার খেসারত দিতে হয় চার মিনিট পরেই। মোহনবাগানের বক্সের বাইরে বল পেয়েছিলেন মাজিয়ার ওয়াদা। তিনি জোরালো শট মারেন। বিশাল কাইথ শরীর ছুড়ে দিয়েও বল নাগালে পাননি। এ ক্ষেত্রে মোহনবাগানের রক্ষণের দুর্বলতাই ধরা পড়ে। কারণ ওয়াদাকে কেউ মার্ক করে রাখেননি।

দ্বিতীয়ার্ধে মোহনবাগানের খেলায় কোনও আগ্রাসন লক্ষ্য করা যায়নি। উল্টে একের পর এক মিস্ পাস এবং দুর্বল রক্ষণে গোল খেয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও ছিল। মাজিয়া অনবরত প্রতি আক্রমণ করছিল। মোহনবাগানের মাঝমাঠে খেলা তৈরি হচ্ছিল না। গ্লেন মার্টিন্সকে খুঁজেই পাওয়া যায়নি। শেষের দিকে তাঁকে উঠিয়ে কোচ জুয়ান ফেরান্দো যখন অনিরুদ্ধ থাপাকে নামান, তখন মোহনবাগানের মাঝমাঠ জেগে ওঠে। কিছুটা নিষ্প্রভ থাকা সাহাল সামাদও গতি ফিরে পান।

মোহনবাগানের শেষ গোল তাঁর পাস থেকেই। ইনজুরি টাইম চলাকালীন মাঝমাঠ থেকে বাঁ দিকে বল পেয়ে বক্সে কামিংসকে উদ্দেশ্য করে বাড়িয়েছিলেন। চলতি বলে বাঁ পায়ের শটে গোল করে খলনায়ক থেকে নায়ক হয়ে যান কামিংস।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন