খাওয়া ভুলে রাত তিনটে পর্যন্ত বিপর্যয়ের কারণ খুঁজলেন গম্ভীর

গৌতম গম্ভীর কোথায় চললেন? লবিতে স্ত্রী মেয়ের সঙ্গে কেন? এখনই নয়াদিল্লির ফ্লাইট ধরছেন নাকি? দুপুর তিনটের ট্রাইডেন্ট। ব্রেবোর্ন-বিপর্যয়ের পরের দুপুর। কেকেআর আর আইপিএলে নেই, নাইট সমর্থকদের মস্তিষ্ক বললেও মন তখনও বলছে না। যদি বেঙ্গালুরুর মতো বৃষ্টি নামে হায়দরাবাদে, ভাসিয়ে দেয় সানরাইজার্স বনাম মুম্বই ম্যাচ, তা হলে তো। গম্ভীর তা হলে এখনই কোথায় যাচ্ছেন?

Advertisement

প্রিয়দর্শিনী রক্ষিত

মুম্বই শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০১৫ ০২:২৪
Share:

গৌতম গম্ভীর কোথায় চললেন? লবিতে স্ত্রী মেয়ের সঙ্গে কেন? এখনই নয়াদিল্লির ফ্লাইট ধরছেন নাকি?

Advertisement

দুপুর তিনটের ট্রাইডেন্ট। ব্রেবোর্ন-বিপর্যয়ের পরের দুপুর। কেকেআর আর আইপিএলে নেই, নাইট সমর্থকদের মস্তিষ্ক বললেও মন তখনও বলছে না। যদি বেঙ্গালুরুর মতো বৃষ্টি নামে হায়দরাবাদে, ভাসিয়ে দেয় সানরাইজার্স বনাম মুম্বই ম্যাচ, তা হলে তো। গম্ভীর তা হলে এখনই কোথায় যাচ্ছেন?

কোথাও না। স্ত্রী-মেয়ে ঘর ফেরতা ফ্লাইট ধরবেন, তাই ‘সি অফ’ করতে লবি পর্যন্ত এসেছেন মাত্র। ভাল করেই জানেন, নিজের থেকে লাভ নেই। আজ না হলে কাল ফেরার ফ্লাইট ধরতে হবে। তবু নিয়মের ফেরে থাকতে হচ্ছে। অঙ্কে বিশ্বাস না রেখেও। বৃষ্টির ‘দয়ায়’ প্লে অফে উঠতে না চেয়েও।

Advertisement

শোনা গেল, শনিবার রাতে ব্রেবোর্ন থেকে ফেরার পর কেউ এক জন প্রসঙ্গটা তুললে কেকেআর ক্যাপ্টেন নাকি বলে দেন, ও ভাবে প্লে অফে ওঠায় কোনও গৌরব নেই। কারণ একটা চ্যাম্পিয়ন টিম ভাগ্য, বৃষ্টি, অঙ্কের জটিল ঘোরপ্যাঁচ— এ সবে বিশ্বাস রাখে না। আর সে টিমের অধিনায়ক হয়ে তাঁর পক্ষে সেটা আরওই সম্ভব নয়। রবিবার রাত এগারোটা নাগাদ ও সব ‘যদি’, ‘কিন্তু’-র ব্যাপারস্যাপারও শেষ হয়ে গেল। বৃষ্টিতে ধুয়ে যাওয়া ম্যাচে পয়েন্ট ভাগাভাগি হয়ে আরসিবি হয়ে গেল তিন। আর সানরাইজার্সকে(১১৩ অল আউট) উড়িয়ে মুম্বই(১১৪-১) হয়ে গেল দুই। এবং মুম্বই-সানরাইজার্স ম্যাচের শেষ বল অবধি পয়েন্ট টেবলে চারে থেকেও শেষ পর্যন্ত বিদায় কেকেআর।

তিনটে ম্যাচকে যার পিছনে ‘ঘাতক’ হিসেবে তুলে আনা হচ্ছে। চিপকে চেন্নাই সুপার কিঙ্গসকে একশো চল্লিশের কমে নামিয়ে দু’রানে হার। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে দশ ওভারে ১১১ তুলে পরাজয়। আর সব শেষে ওয়াংখেড়েতে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ম্যাচে রোহিত শর্মাদের পনেরো ওভারে একশোয় আটকে রেখেও শেষ পর্যন্ত পাঁচ রানে পর্যদুস্ত হয়ে ফেরা। অন্য কেউ নন, গম্ভীরই শোনা গেল এই তিনটে ম্যাচ নিয়ে ঘনিষ্ঠমহলে আক্ষেপ করেছেন।

শুধু আক্ষেপ নয়। রাতে খাননি। ঘুমোননি। রাত তিনটে পর্যন্ত কারও কারও সঙ্গে আইপিএল আটের ময়নাতদন্ত করেছেন। খুঁজতে চেয়েছেন, কেন পনেরো পয়েন্ট পেয়েও এ ভাবে প্রস্থান ঘটল টিমের।

কেউ কেউ বলছিলেন, রবিবার দুপুরে নাকি প্রবল জোরাজুরি করায় সামান্য খাদ্যদ্রব্য মুখে তুলতে দেখা গিয়েছে নাইট অধিনায়ককে। হারের বেশ কয়েক ঘণ্টা কেটে যাওয়ার পরেও নাকি বিশ্বাস করতে পারছিলেন না যে, সত্যিই তাঁর টিম টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিয়েছে। সূর্যকুমার যাদব, আজহার মেহমুদরাও যে ভাবে ম্লান মুখ নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন তাঁদের অবস্থা দেখলে নাইট সমর্থকদের কষ্ট হবে। আর টিম হোটেলে যে গম্ভীরকে কয়েক মুহূর্তের জন্য দেখা গেল, তার চোখেমুখেও ক্লান্তি, বিষাদের ছাপ স্পষ্ট। যে গম্ভীর বারবার ঘনিষ্ঠমহলে বলে ফেলেছেন, শেষ তিনটে ম্যাচে টিম নিজেদের ক্ষমতা অনুযায়ী খেলল না। আক্ষেপ করেছেন, কী করে মুম্বই ম্যাচে হার্দিক পাণ্ডিয়া ও ভাবে রক্তাক্ত করে দিয়ে চলে গেলেন এখনও তাঁর বোধগম্য হচ্ছে না। মুম্বইয়ের তাবড় ব্যাটসম্যানদের তো দাঁড়াতে দেয়নি কেকেআর বোলিং। পরে তা হলে পারল না কেন? নিজেই নাকি একটা সময় কারণ দিয়েছেন, তাঁর টিম কোনও যুদ্ধই গোটা হারেনি। কয়েকটা সিচুয়েশন হেরে এ ভাবে ছিটকে গিয়েছে। যেমন ব্রেবোর্ন যুদ্ধে একজন সেট ব্যাটসম্যানের শেষ পর্যন্ত থাকা উচিত ছিল। কিন্তু থাকতে পারেনি। পারলে শেষ লগ্নে উমেশের মরিয়া চেষ্টা মর্যাদা পেয়ে যেত। দু’টো হার তাঁর কাছে অযৌক্তিক লাগছে। চেন্নাইয়ে সিএসকে। চিন্নাস্বামীতে আরসিবি। ঘনিষ্ঠদের নাকি গম্ভীর বলে ফেলেছেন, আরসিবির উপর ও ভাবে চড়াও হয়েও কেন তাঁর এত ভাল বোলিং ওভার পিছু দশ-বারো দিয়ে আরসিবিকে জিততে দেবে?

এগুলো যদি হয় নিছক ম্যাচভিত্তিক সমালোচনা, তা হলে আরব সাগরের তীরে গভীর রাতের নাইট-মিটিংয়ের সর্বোপরি হাহাকার ছিল, ‘আমাদের টিম তো খারাপ ছিল না। ক্ষমতা কম ছিল না। তা হলেও আমরা পারলাম না কেন?’

আসলে যাঁদের পৃথিবীতে সাফল্যই ছিল এত দিনের নিয়ম, ব্যর্থতার স্বাদ তো তাঁদের একটু তেতো ঠেকবেই।

দু’টিতে, জুটিতে

বিরাট কোহলির সঙ্গে অনুষ্কা শর্মা। রবিবার চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে। ছবি: পিটিআই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন