আমাদের সময়েও বল বিকৃতি হত, বললেন ব্রিয়ারলি

টেস্ট ও টি-টোয়েন্টির সেতু বিরাট

‘দ্য টেলিগ্রাফ’ ও ‘ক্যালকাটা ক্লাবের’ যৌথ উদ্যোগে বুধবার তাঁর বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে সস্ত্রীক কলকাতায় হাজির ছিলেন ব্রিয়ারলি। সেখানেই তিনি বিশ্ব ক্রিকেটের অতীত ও বর্তমানের একাধিক বিষয় নিয়ে আলোকপাত করেন। তাঁর কথায়, ‘‘সুনীল গাওস্কর ছিল দুর্দান্ত ব্যাটসম্যান। সচিন হল ‘নতুন ব্র্যাডম্যান’।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:১১
Share:

অতিথি: কলকাতায় সস্ত্রীক মাইক ব্রিয়ারলি। বুধবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

বিষাণ সিংহ বেদী তাঁর কাছে নায়ক। বিশ্ব ক্রিকেটের ধুরন্ধর ক্রিকেট অধিনায়ক তিনি। তাঁর লেখা ‘আর্ট অব ক্যাপ্টেন্সি’ যে কোনও ক্রিকেট অধিনায়কের কাছেই মূল্যবান সম্পদ।

Advertisement

ইংল্যান্ডের সেই প্রাক্তন অধিনায়ক জন মাইকেল ব্রিয়ারলি মোহিত ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহালিতে। বলছেন, ‘‘বিরাট কোহালি হল টেস্ট ক্রিকেট ও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের মধ্যে একটা সেতুবন্ধন।’’ একই সঙ্গে প্রাক্তন ইংল্যান্ড অধিনায়ক মুগ্ধ ভারতীয় পেস বোলিং দেখেও।

‘দ্য টেলিগ্রাফ’ ও ‘ক্যালকাটা ক্লাবের’ যৌথ উদ্যোগে বুধবার তাঁর বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে সস্ত্রীক কলকাতায় হাজির ছিলেন ব্রিয়ারলি। সেখানেই তিনি বিশ্ব ক্রিকেটের অতীত ও বর্তমানের একাধিক বিষয় নিয়ে আলোকপাত করেন। তাঁর কথায়, ‘‘সুনীল গাওস্কর ছিল দুর্দান্ত ব্যাটসম্যান। সচিন হল ‘নতুন ব্র্যাডম্যান’। ব্রায়ান লারা, জাক কালিস, রিকি পন্টিংরাও দুর্দান্ত। কিন্তু বিরাট কোহালি সম্পূর্ণ অন্য ঘরানার ক্রিকেটার। আমাদের সময়ের টেস্ট ক্রিকেট আর এখনকার টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের মধ্যে সেতুবন্ধনের কাজটা কেউ যদি করে থাকে, সেটা করেছে বিরাট।’’

Advertisement

ভারত অধিনায়ক সম্পর্কে আপ্লুত ব্রিয়ারলি আরও বলেন, ‘‘বিরাটকে যখন খেলতে দেখি তখন ক্রিকেট নিয়ে ছেলেটার আবেগ, আগ্রাসন, হার না মানা মনোভাব দেখে অবাক হয়ে যাই। কেউ রান পেলে ওর স্বতঃস্ফুর্ত আবেগটা লক্ষ করবেন। আবার ব্যর্থ হলে তখনও ওর প্রতিক্রিয়াটা দেখবেন। এতেই বোঝা যায়, খেলাটার সঙ্গে ও কতটা আত্মস্থ থাকে।’’ পেশাগত জীবনে মনোবিশ্লেষক ব্রিয়ারলি সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘সুপুরুষ বিরাটের ব্যক্তিত্বও সমান আকর্ষণীয়। যে কোনও পরিস্থিতিকেই ও নিজের আয়ত্তে নিয়ে আসতে পারে। কোহালির সঙ্গে রয়েছে আরও একটা বড় সম্পদ। সেটা হল ওর আবেগ। যা সফল ক্রিকেটারের জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’’

বিরাটের পাশাপাশি ভারতীয় পেসারদের দরাজ শংসাপত্র দিচ্ছেন প্রাক্তন ইংল্যান্ড অধিনায়ক। চার মাস পরে তাঁর দেশেই বসবে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের আসর। সেখানে ফেভারিট কোন দেশ? জানতে চাইলে ব্রিয়ারলি এগিয়ে রাখেন ইংল্যান্ডকেই। বলেন, ‘‘ঘরের মাঠে চেনা পিচ ও পরিবেশ ইংল্যান্ডকে এগিয়ে রাখবে। তবে তার পরেই দ্বিতীয় ফেভারিট হিসেবে থাকবে ভারত। তার কারণ, ভারতের বোলিং। গত এক বছর ধরে ভারতীয় পেসাররা দারুণ বল করছে। সঙ্গে ওদের স্পিন বিভাগও বৈচিত্রে পূর্ণ।’’

অনুষ্ঠানের পরে নিজের বইয়ে ক্রিকেট অনুরাগীদের স্বাক্ষরও দিলেন অকাতরে। হাতের সামনে ব্রিয়ারলি আর তাঁর কাছে ক্রিকেটের প্রশ্ন উঠে আসবে না, তা হয় নাকি? উড়ে এল বডিলাইন, ডন ব্র্যাডম্যান, হ্যারল্ড লারউড, ডগলাস জার্ডিন, ডেনিস লিলি, মাইকেল হোল্ডিং, ইয়ান বোথাম, কেভিন পিটারসেনদের প্রসঙ্গ। কেউ কেউ করলেন, স্লেজিং, বল বিকৃতি, ম্যাচ গড়াপেটা নিয়ে প্রশ্ন। যার উত্তরে ব্রিয়ারলি বললেন, ‘‘বল বিকৃতিটা আমাদের সময়েও কেউ কেউ করতেন। ওটা আমার কাছে নতুন বিষয় নয়। কিন্তু ম্যাচ গড়াপেটার ব্যাপারটা আমার সময়ে ছিল না। সেটা এখন শুনি। তবে স্লেজিংকে কোনও ভাবেই সমর্থন করি না। ওটা বিপক্ষ ক্রিকেটারকে অসম্মান করে মনোযাগ ঘুরিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা। ক্রিকেটার হিসেবে অস্ট্রেলিয়া সফরে গিয়ে এর মুখোমুখি হওয়ার স্বল্প অভিজ্ঞতা রয়েছে আমারও।’’

এসেছে ‘দুসরা’ প্রসঙ্গও। যার ব্যাখ্যা দিয়ে ব্রিয়ারলি বলছেন, ‘‘মুরলীধরন এই বলটাকে নিজের অস্ত্র বানিয়ে ফেলেছিল। কিন্তু আমার মতে কনুই না ভেঙেও ও দুসরা

করতে পারত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন