নেপালের ভূমিকম্প নিয়ে অনেক কিছু বলা হচ্ছে। ব্যাপারটা নিয়ে যত বেশি পারছি, পড়ছি। এ রকম কিছু এড়ানো যায় কি না, বা এগুলোর পূর্বাভাস পাওয়া যায় কি না, বিশেষ করে সেটা খোঁজার চেষ্টা করছি। দুঃখ হচ্ছে বলতে যে, উৎসাহিত হওয়ার মতো কোনও উত্তর পাইনি। ভাবতে অবাক লাগছে, ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়ার মতো কিছুই আমাদের হাতে নেই। বুঝতে পারছি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এমন একটা ব্যাপার যা এক বার হয়ে গেলে তার পর প্রতিক্রিয়া হয়। আগে থেকে কিছুই করার থাকে না এ সব ক্ষেত্রে। ভীষণ ভয়ঙ্কর ভাবনাটা!
দেখে খুব ভাল লাগছে, ভারতের পর গোটা বিশ্ব নেপালের সাহায্যে এগিয়ে এসেছে। আশা করছি জীবন আবার স্বাভাবিক হয়ে যাওয়ার পরে বিশ্ব এটা নিয়ে ভাবতে বসবে।
আমি কোনও তুলনা করতে চাই না, কিন্তু ক্রিকেটেও এ রকম বিপর্যয় আছড়ে পড়ার জন্য অপেক্ষা করে আছে। যেটা আমরা এড়াতে পারি। আম্পায়ার-নিরাপত্তার কথা বলছি। বোলিং এন্ডে দাঁড়িয়ে থাকার সময় আম্পায়ারদের হেলমেট বা মুখ-ঢাকা গ্রিল পরার সময় কিন্তু এসে গিয়েছে। এখনকার ব্যাটগুলোর যা সাইজ আর আজকাল সোজা যে ভাবে জোরে শট মারা হচ্ছে, সেটা ভাবলেই বুঝতে পারবেন কেন কথাটা বলছি। বিপদটা আরও বেশি কারণ ওই সময় তো আম্পায়ারের চোখ থাকে বোলারের পায়ের দিকে, তার ডেলিভারি আইনি কি না সেটা দেখতে। তাতে হয় কী, বল কোন দিকে যাচ্ছে আম্পায়াররা সেটা পরে বুঝতে পারেন। আর তাতে চোটের ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়।
ক্রিকেট ব্যাটের বিশাল সাইজও আম্পায়ারদের চ্যালেঞ্জ বাড়িয়ে দেয়। এঁদের বেশির ভাগেরই বয়স চল্লিশ-পঁয়তাল্লিশের বেশি। যখন রিফ্লেক্স অতটাও ভাল থাকে না। মনে আছে ২০০৩ বিশ্বকাপে সচিন পাজির একটা স্ট্রেট হিট পাকিস্তানি আম্পায়ার আলিম দারকে প্রায় নিশ্চিহ্ন করে ফেলেছিল। তার পর এক দশকেরও বেশি কেটে গিয়েছে। টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটসম্যানরা আরও জোরে বল হিট করছে। মনে হয় এত কিছুর পরে আম্পায়ারদের নিরাপত্তার জন্য দ্রুত কিছু করা উচিত। বেসবলে যেমন মুখোশ বা হেলমেট ব্যবহার করা হয়। যে কোনও দুর্ঘটনার ক্ষেত্রেই যেমন ঘটনার আগে বুদ্ধিমানের মতো কাজ করা উচিত। ঘটনাটা ঘটে গেলে নয়।
জাতীয় দলের এক সতীর্থের সঙ্গে ব্যাপারটা নিয়ে আলোচনা করেছিলাম এক বার। ও বলল ও নাকি অন্তত দু’জন আইসিসি আম্পায়ারকে চেনে যাঁরা দাবি করেন যে তাঁরা অ্যাবডোমেন গার্ড পরে মাঠে নামেন। ওয়েল ডান স্যরস!
বৃষ্টির জন্য যে রাজস্থান রয়্যালসের সঙ্গে পয়েন্ট ভাগাভাগি করতে হল, তাতে আমি খুব হতাশ হয়েছি। ওই ম্যাচটা নিয়ে টিমে একটা নীরব আত্মবিশ্বাস ছিল। ইডেনে যাঁরা ম্যাচ দেখতে এসেছিলেন, তাঁদের জন্যও খারাপ লাগছিল। আমাদের দেশে একটা ক্রিকেট ম্যাচ দেখতে গিয়ে ভক্তরা যে কত রকম সমস্যায় পড়েন, আমি খুব ভাল জানি। টিকিট জোগাড় করা থেকে মাঠে আসা, ব্যাপারটা খুব কঠিন। তার পর যদি শোনেন ম্যাচটা বৃষ্টিতে ভেস্তে গিয়েছে, হতাশ লাগবে না? ভেবেছিলাম বেরিয়ে এসে একটা ‘থ্যাঙ্ক ইউ’ ল্যাপ দেব। তার পর মনে হল ব্যাপারটা খুব নাটুকে হয়ে যাবে।
আমরা এখন চেন্নাইয়ে। ২০১২ সালে এখান থেকেই আমাদের প্রথম আইপিএল জয়। কিন্তু বিশ্বাস করুন, কলকাতা তার ঘরের টিমের জন্য যা বরাদ্দ রাখে, সে রকম আবেগ আর সমর্থনের কাছাকাছি কোনও শহরই আসতে পারবে না। সমর্থকদের আবেগটাই আলাদা। চেন্নাই দু’বার আইপিএল ট্রফি জিতে থাকতে পারে, কিন্তু কলকাতার ওই গর্জনটা ওদের নেই। ওটা আমরা খুব মিস করছি।