অসহায়: বাবা-মায়ের ছবির সামনে এরিনা। —নিজস্ব চিত্র।
বাবা-মা কে হারিয়ে এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে এরিনা দত্ত। কলাইকুন্ডা কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী বছর পনেরোর এরিনা খড়্গপুরে এক পরিচিত নাম। জাতীয় স্তরের স্কুল ক্রীড়ায় তিন বার সোনা ও রাজীব গাঁধী খেল অভিযানে জাতীয় স্তরে দু’বার ব্রোঞ্জ পেয়েছে এরিনা।
এরিনার বাবা সুনীল দত্ত রেলে চাকরি করতেন। জেলায় টেবিল টেনিস কোচ ছিলেন। বাবার কাছে আট বছর বয়স থেকে অনুশীলন শুরু এরিনার। ২০১২ থেকে ২০১৪— পর পর ৩ বার জাতীয় স্তরে অনূর্ধ্ব ১৪ বিভাগে সোনা পায় সে। ২০১৫ সালে অনূর্ধ্ব ১৭ বিভাগে রুপো। ২০১৫ ও ২০১৬ সালে রাজীব গাঁধী খেল অভিযানে জাতীয় স্তরে ব্রোঞ্জ আছে তার। ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে হঠাৎই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় সুনীলবাবুর। তাঁর মৃত্যুর পর এরিনার মা মিলু দেবী কষ্টে সংসার চালাচ্ছিলেন। ২০১৬ সালের অগস্টে লিভারের জন্ডিসে তিনিও মারা যান। এর পর থেকে বাড়িতে একাই থাকে এরিনা। প্রতি রাতে এক বান্ধবী এসে তার সঙ্গে বাড়িতে থাকে। পাশেই নিজের কাকার বাড়ি থাকলেও বাবা বেঁচে থাকাকালীন তিক্ত সম্পর্কের জেরে তাঁদের কেউ এরিনার খোঁজও নেন না। অভিভাবকহীন জীর্ণ বাড়িতে একাই থাকে এরিনা। বাবার সঞ্চিত টাকায় বহু কষ্টে দিন কাটে তার। তবে রেলের তরফে চিঠি দিয়ে বলা হয়েছে, ১৮ বছর হলে চাকরি পাবে সে।
সম্প্রতি রাতে সেই বাড়িতে কিছু দুষ্কৃতী চড়াও হয়। সেই সময়ে ১০০ ডায়াল করেও সাড়া মেলেনি বলে এরিনা ও তাঁর বান্ধবীর অভিযোগ। চিৎকার করলেও সাহায্য করতে কেউ এগিয়ে আসেননি। এরিনা জানিয়েছে, এর পরে বাবার এক বন্ধুকে ফোন করে সে গোটা ঘটনাটি জানায়। তিনি এসে পড়ায় দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। এরিনা বলে, ‘‘১০০ ডায়াল করে সাড়া মেলেনি। থানায় বললে দুষ্কৃতীরা যদি রাস্তায় হামলা চালায়, দেখার কেউ নেই। তাই পুলিশে অভিযোগ জানাইনি।’’ খড়্গপুর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সন্তোষ মণ্ডল বলেছেন, ‘‘খড়্গপুরে ১০০ ডায়াল কাজ করছে না। খড়গপুরে শীঘ্রই নতুন কন্ট্রোল রুম চালু হবে। তখন ১০০ ডায়ালে ফোন করলেই সাড়া মিলবে।’’