বাগানের নতুন বিদেশি গুস্তাভো সিলভা কনসিকাও।
ব্রাজিলীয় তারকা কাকার সঙ্গে এই মরসুমেই খেলছেন মেজর সকার লিগের ক্লাব অর্ল্যান্ডো সিটিতে।
দু’বছর আগেও রোনাল্ডিনহোকে আটকেছেন।
ফ্ল্যামেঙ্গোর জার্সিতে ব্রাজিলের প্রিমিয়ার লিগের ৭৯ ম্যাচ খেলেছেন। এবং প্রত্যেকটি ম্যাচের শুরু থেকেই।
ক্লাব ছেড়ে যাওয়া বেলো রাজ্জাকের বদলি হিসাবে ব্রাজিলের সেই নামী ডিফেন্ডার গুস্তাভো সিলভা কনসিকাওকে নিতে চলেছে মোহনবাগান। চুক্তিপত্রে সই না হলেও চূড়ান্ত কথাবার্তা হয়েও গিয়েছে। সব কিছু ঠিকঠাক চললে নতুন মরসুমের শুরু থেকেই সনি নর্ডি, কাতসুমিদের সঙ্গী হতে চলেছেন গুস্তাভো।
কর্তারা এ ব্যাপারে মুখে কুলুপ আটলেও বাগান কোচ সঞ্জয় সেন এতটাই উচ্ছ্বসিত যে মঙ্গলবার বলে দিলেন, ‘‘ওর সঙ্গে কথা হয়ে গিয়েছে। যখন বলব তখনই চলে আসবে।’’ তাঁর তালিকায় থাকা বেলো ক্লাব ছেড়ে চলে যাওয়ার পর সঞ্জয় প্রচণ্ড রেগে গিয়েছিলেন। এ দিন অবশ্য তিনি বললেন, ‘‘যদি দাঁড়িয়ে যায় তা হলে কিন্তু বেলোর চেয়েও ভাল খেলবে। বেলোর অভাব বুঝতে দেবে না। কলকাতা লিগেই ওকে পেয়ে যাব, সমস্যা হবে না।’’
গুস্তাভো ফুটবলার জীবনের জীবনের প্রথম সাত বছরই খেলেছেন ব্রাজিলের বিভিন্ন লিগে। স্টপার হলেও গোলও আছে তাঁর। তা-ও আবার ফ্লেমিঙ্গোর হয়ে। এ বছরই যোগ দিয়েছেন যুক্তরাস্ট্রের ক্লাব অর্ল্যান্ডো সিটিতে। জানুয়ারিতে সই করে সেখানে ছ’টি ম্যাচ খেলেছেন বলে জানিয়েছেন বাগান কর্তাদের। সেখান থেকে রিলিজ নিয়েছেন ভারতে আসবেন বলে।
ডিফেন্ডারদের নেওয়ার ক্ষেত্রে সঞ্জয় অবশ্য পূর্বসূরিদের কোচেদের রাস্তায় হাঁটেননি। নিজে সিদ্ধান্ত নেননি। ইস্টবেঙ্গলে খেলে যাওয়া উগা ওপারা ছাড়া আলোচনায় থাকা এবং হাতে আসা সিডি থেকে বাকি ছয় জন ডিফেন্ডারের খেলার সিডি এবং জীবনপঞ্জি নিয়ে তিনি রীতিমতো মত নেন সবার সঙ্গে। তাতে ফুটবল সচিব সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়, টেকনিক্যাল কমিটির দুই সদস্য শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায়, কম্পটন দত্ত, এমনকী সহকারী কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তীকেও ছয় ফুটবলরারের সিডি দেখিয়ে মত জানতে চান সঞ্জয়। সবাই একমত হওয়ার পরই গুস্তভোর এজেন্টের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন কর্তারা। বাগানের ইতিহাসে সম্ভবত যা কখনও হয়নি। এর আগে নিজেদের উদ্যোগে বিদেশি এনে নানা বিতর্কে জড়িয়েছেন কোচেরা। সঞ্জয় বললেন, ‘‘আমি কোনও ফুটবলারকে কোনও টিমে ঢুকিয়ে দেওয়ার লোক নই। আমি চাই সবাই মিলে দেখে নিক ফুটবলারদের। কিপার কোচ অর্পণ ছাড়া সবাই দেখে গুস্তাভোকে বেছেছে। ওরাও আমার টিমের সাফল্যের অঙ্গ। সবাই সফল ফুটবলারও। সুনামের সঙ্গে খেলেছে। ওদের চোখেও দেখে নিয়েছি গুস্তাভোকে।’’ সঞ্জয় অবশ্য এ দিনই ফিফার একটি বিশেষ কোর্স করতে গোয়া গেলেন। সঙ্গী সহকারী শঙ্করলালও।
ব্রাজিল লিগের অন্যতম সেরা ফুটবলারকে প্রায় নিশ্চিত করার পর বলবন্ত সিংহের সঙ্গেও পাকা কথা বলে নিল মোহনবাগান। শোনা যাচ্ছে, দেশের অন্যতম সেরা মিডিও ডেম্পোর লেনি রডরিগেসও পরের মরসুমে নাম লেখাতে চলেছেন আই লিগ চ্যাম্পিয়ন টিমে। কলকাতা লিগে খেলার জন্য কিপার অর্ণব দাশ শর্মা এবং সন্তোষ ট্রফিতে তিন গোল করা কালীঘাটের রাজা দাশকে ইতিমধ্যেই সই করিয়েছেন বাগান রিক্রুটাররা।
তা সত্ত্বেও বাগানের এ বারের সেরা রিক্রুট হতে চলেছেন ঊনত্রিশ বছর বয়সী গাট্টাগোট্টা চেহারার হোসে ব্যারেটোর দেশের ডিফেন্ডার গুস্তাভো। বেটো-ব্যারেটোরা বাগানে সফল হয়েছেন। দেখার গুস্তাভো নতুন তারকা হতে পারেন কি না।